রংপুর ব্যুরো :
রংপুর প্রেসক্লাবে প্রশাসকের মাধ্যমে নতুন সদস্যভূক্তি নিয়ে রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশ স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত। সোমবার (২৪ নভেম্বর) দুপুরে নগরীর সেন্ট্রাল কনভেনশন সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে প্রেসক্লাব মামলার আইনজীবি জোবাইদুল ইসলাম, মাহে আলম ও মোকছেদ বাহলুল জানান, নিবন্ধন নিয়ে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মাধ্যমে প্রেসক্লাব প্রশাসক নিয়োগ ও তর্কিত প্রশাসকের কার্যক্রমকে বাতিল করতে উচ্চ আদালতে মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে রংপুর জেলার সাবেক জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রবিউল ফয়সালের ইন্ধনে প্রেসক্লাবের তর্কিত প্রশাসক অতি উৎসাহী হয়ে আদালতের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সদস্যভুক্তি করেছেন। এনিয়ে একটি মিস কেস করা হলে আদালত প্রশাসকসহ প্রতিপক্ষের কাছে নিষেধাজ্ঞা স্বত্ত্বেও কেন প্রেসক্লাবে সদস্য নেয়া হলো তা জানতে চেয়েছে। অপরদিকে প্রয়োজনীয় তথ্য-প্রমাণ থাকা স্বত্ত্বেও রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সদস্যভূক্তি নিয়ে নি¤œ আদালতের নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে। এ রায়ের বিরুদ্ধে প্রেসক্লাব কমিটি উচ্চ আদালতে আবেদন করলে গত ১৭ নভেম্বর বিচারপতি মাহমুদুল হক রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের আদেশ ৬ মাসের জন্য স্থগিতসহ প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে রুল জারী করেন। এ আদেশের মাধ্যমে তর্কিত প্রশাসকের নেয়া ১০৫ জন নতুন সদস্যভূক্তি নিয়ে প্রশাসকের সকল কার্যক্রম ৬ মাসের জন্য স্থগিত হয়ে গেছে। দ্রুতই উচ্চ আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার পেয়ে রংপুর প্রেসক্লাবের উপর সমাজসেবা অধিদপ্তরের অবৈধ হস্তক্ষেপ নিরসন হবে বলে জানান আইনজীবীরা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন, রংপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি মোনাব্বর হোসেন মনা, সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী, সিটি প্রেসক্লাবের সভাপতি স্বপন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির মানিকসহ বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দরা। প্রেসক্লাব মামলার আইনজীবী মোকছেদ বাহালুল বলেন, পূর্বের কমিটির বহিস্কৃত সদস্যরা গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা অবস্থায় বড় অংকের টাকা দূর্নীতি করেছে। এটার বিরুদ্ধে বর্তমান কমিটির করা মামলায় তারা প্রশাসন যন্ত্রকে ব্যবহার করে টোটাল সিস্টেমকে উল্টে দেয়ার অপচেষ্টার অংশ হিসেবে প্রেসক্লাবে প্রশাসক নিয়োগ, সদস্যভূক্তিসহ নানা ষড়যন্ত্র করে যাচ্ছে। দূর্নীতির বিরুদ্ধে আন্দোলন করায় আজ শেখ হাসিনা পালিয়েছে। কিন্তু প্রেসক্লাবের দূর্নীতির বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করায় ফ্যাসিস্ট আমলের মত আমাদের আদালতের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে। তবে এরই মধ্যে আমাদের প্রাথমিক বিজয় এসেছে উচ্চ আদালতের এ আদেশের মাধ্যমে।
অপর আইনজীবী মাহে আলম বলেন, তর্কিত প্রশাসকের মাধ্যমে প্রেসক্লাবে সদস্যভূক্তি নিয়ে রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত মামলার শুনানী না হওয়া পর্যন্ত উভয়পক্ষকে স্থিতি অবস্থায় থাকার আদেশ দিয়েছিল। কিন্তু তর্কিত প্রশাসক আদালতের আদেশকে তোয়াক্কা না করে প্রেসক্লাবে ১০৫ জন নতুন সদস্য নিয়েছে। সাবেক ডিসি রবিউল ফয়সাল সেই বিজ্ঞপ্তি তার ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে। এনিয়ে আদালতে ভায়োলেশন মামলা চলমান রয়েছে। তর্কিত প্রশাসক তাদের জমা দেয়া প্রশ্নবিদ্ধ গঠনতন্ত্রের নিয়ম উপেক্ষা করে সদস্য নিয়েছে। আদালতে এত তথ্য প্রমান উপস্থাপন করার পরেও রংপুর অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রেসক্লাব নিয়ে যে রায় দিয়েছে, আমরা মনেকরি তা ম্যানুপুলেট করা হয়েছে। রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভের মধ্যে গণমাধ্যম একটি। রাষ্ট্রের প্রতিনিধি হচ্ছে ডিসি। এখন রাষ্ট্রের প্রতিনিধি যদি গণমাধ্যমের গলাচেপে ধরে, তাহলে সংবাদপত্রের স্বাধীনতা থাকলো না। প্রশাসনের থাবার নিচে থেকে সাংবাদিকতা হতে পারে না। প্রেসক্লাব মামলার আইনজীবী জোবাইদুল ইসলাম বলেন, প্রেসক্লাবে তর্কিত প্রশাসকের সদস্যভুক্তি নিয়ে উচ্চ আদালত আদেশের পরিস্কারভাবে বলা হয়েছে যে, সদস্য নেয়ার ব্যাপারে পূর্বে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত নি¤œ আদালতের যে নিষেধাজ্ঞা বাতিল করেছিল, সেই আদেশ স্থগিত করেছে উচ্চ আদালত। এর মাধ্যমে প্রেসক্লাবে সদস্যভুক্তির কোন সুযোগ নেই। প্রশাসকের মাধ্যমে কমিটি করারও কোন সুযোগ নেই। সেই সাথে প্রেসক্লাব তাদের বসানোরও কোন সুযোগ নেই।
প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মেরিনা লাভলী বলেন, আমার আমলেই প্রেসক্লাবে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সর্বোচ্চ সংখ্যক পেশাদার সাংবাদিককে সদস্য করা হয়েছে। বিচারিক কার্যক্রম শেষে আগামীতেও গঠনতন্ত্র মেনে সকল পেশাদার সাংবাদিকদের সদস্য হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করা হবে। ঐতিহ্যবাহী রংপুর প্রেসক্লাব এ জেলার মানুষের সম্পদ। এটা নিয়ে প্রশাসনকে ব্যবহার করে কোন দূর্নীতিবাজরা ষড়যন্ত্র করবে তা সাংবাদিকসহ সচেতনরা মেনে নেবে না। ##

আরও পড়ুন
কোনো কারণেই জাতীয় নির্বাচন বিলম্বিত হলে দেশ আবার ফ্যাসিস্ট মাফিয়া রাষ্ট্রে পরিণত হবে : আজিজুল বারী হেলাল
পীরগঞ্জে সুধীজনদের সাথে জেলা প্রশাসকের মতবিনিময়
কুলাউড়ায় কৃষকদের মাঝে বীজ ও সার বিতরণ