November 24, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, November 24th, 2025, 6:01 pm

কেঁচো সার প্রকল্পে কালীগঞ্জে ফের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারী অর্থ লোপাট

কালীগঞ্জ (গাজীপুর) প্রতিনিধিঃ

পারিবারিক পুষ্টি বাগান স্থাপনের লক্ষ্যে জেলার কালীগঞ্জে অনাবাদী পতিত জমি ও বাড়ীর আঙ্গিনায় কমিউনিটি বেইজ ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার তৈরির জন্য ১২ টি প্রকল্প প্রস্তুত করা হয়েছে। ভাংতি বিবরনী মতে প্রতি প্রকল্পে ৫ কেজি করে মোট ৬০ কেজি কেঁচো সরবরাহের কথা রয়েছে। কিন্তু তা না করে প্রতি প্রকল্পে ২ কেজি কেঁচো দিয়েই কেঁচো দেয়ার কাজ শেষ করে স্থানীয় কৃষি অফিস। প্রকল্পের প্রান্তিক কৃষকরা এধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতির জন্য সরাসরি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিমকেই দায়ী করছে।

সোমবার (২৪ নভেম্বর) সরেজমিনে ভার্মি কম্পোস্ট বা কেঁচো সার প্রকল্পে অনুসন্ধানে গেলে উদঘাটিত হয় -এ অনিয়ম ও অর্থ লোপাটের রহস্য। দেখা যায় এখনো অনেক হাউজে গোবর সংরক্ষণ করা হয় নি। প্রতি প্রকল্পে ১০ টি চাক ও ৪টি হাউজে মোট ৫ কেজি কেঁচো সরবাহের কথা রয়েছে। যার বিপরীতে প্রতি প্রকল্পে ১০ হাজার টাকা করে ১২ প্রকল্পে মোট এক লক্ষ ২০ হাজার টাকা সরকারী বরাদ্দ রয়েছে। প্রকল্প প্রতি ৩ কেজি কেঁচো সরবরাহ কম দেয়াতে ১২ প্রকল্পে প্রায় লাখ টাকা লুট করে নিজ পকেট ভর্তি করেছে সেই কৃষি কর্মকর্তা।

উল্লেখ যে, উপজেলার ১২ টি প্রকল্পের জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নে ১১ টি এবং মোক্তারপুর ইউনিয়নে একটি প্রকল্প রয়েছে। ভাংতি বিবরনীর তথ্যে জানা যায়, ১২ প্রকল্পে সরকারী বরাদ্দ ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

সরেজমিনে অনুসন্ধানে প্রকল্পের কৃষক জাঙ্গালিয়া ইউনিয়নের কুলথুন এলাকার আব্দুছ সাত্তার, আজমতপুরের মোঃ মজিবরের স্ত্রী মমতাজ, দেওতলা এলাকার ফজলুল হক মোড়ল ও ফকির মোস্তফা প্রতিবেদককে বলেন, তাদের প্রকল্পে ধার্যকৃত ৫ কেজি কেঁচো না দিয়ে এক মহিলাকে দিয়ে সন্ধার পর তাড়াহোড়া করে তাদের কিছু না বলেই গোবর মিশ্রিত ২ কেজি পরিমান কেঁচো দিয়ে চলে যায়। তাছাড়া নিম্ন মানের কেঁচো সরবরাহ করা হয়েছে। যা কেজি প্রতি বর্তমান বাজার মূল্য ৬শত হতে ৮শত টাকা।

কেঁচো সরবরাহে ঠিকাদার নিয়োগে রয়েছে ব্যাপক অনিয়ম। কৃষি কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত অনুভা রানী দাসকে কাজ পাইয়ে দিয়েছে সেই কৃষি কর্মকর্তা।

স্থানীয়রা বলেন, কৃষি উন্নয়নমূলক প্রকল্পে দুর্নীতি সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছে। এর আগেও এই প্রকল্পে অনিয়মের কারনে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার সম্পৃক্ত থাকার বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। তারা দ্রুত তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তির বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবী জানান।

জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ফারজানা তাসলিম বলেন, প্রকল্পে ৫ কেজি কেঁচো দেয়া হয়েছে। কেঁচো কম দেয়ার বিষয়ে কৃষকদের নিকট হতে কোন অভিযোগ পাইনি। সাপ্লায়ার যদি কম দিয়ে থাকে তাহলে তাকে জিজ্ঞাসা করা হবে।

গাজীপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খান মুঠোফোনে জানান, আগেও এ প্রকল্পের ব্যাপারে অভিযোগ শুনেছি। বিষয়টি এবার উপরস্থ কর্তপক্ষকে জানাব এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলব।