চট্টগ্রাম নগরের চকবাজার থানায় দায়ের করা ছাত্রদলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক নুরুল আলম নুরু হত্যা মামলায় কার্যনিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর বিরুদ্ধে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (২৪ নভেম্বর) চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইব্রাহিম খলিলের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। এ দিন এ বি এম ফজলে করিম ভার্চুয়ালি কারাগার থেকে আদালতে অংশগ্রহণ করেন।
এর আগে, গত ২৩ নভেম্বর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) চট্টগ্রাম জেলা মেট্রো ও জেলার ইউনিটের পুলিশ পরিদর্শক নাছির উদ্দীন রাসেল ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর (এপিপি) অ্যাডভোকেট রিয়াদ উদ্দীন বলেন, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীর ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেছিলেন। আদালত শুনানি শেষে তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের সাদারপাড়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আলম নুরুকে ২০১৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে নগরের চন্দনপুরা এলাকা থেকে সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমের নির্দেশে আটক করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন রাউজান থানার এসআই শেখ মুহাম্মদ জাবেদ। এরপর নুরুলকে মাইক্রোবাসে নোয়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়, যেখানে তাকে চোখ ও মুখ-হাত বেঁধে সারারাত নির্যাতন করা হয়। পরে তাকে মাথায় গুলি করে হত্যা করা হয়। হত্যার পর লাশ ৬ কিলোমিটার দূরের বাগোয়ান ইউনিয়নের খেলারঘাট কর্ণফুলী নদীর তীর রক্ষা বাঁধে ফেলা হয়। পরের দিন ৩০ মার্চ তার হাত-পা বাঁধা অবস্থায় লাশ উদ্ধার করা হয়।
২০২৪ সালের ১ সেপ্টেম্বর নিহতের স্ত্রী সুমি আক্তার চকবাজার থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য এ বি এম ফজলে করিমকে প্রধান আসামি করে ১৭ জনের নাম উল্লেখসহ ৩০–৪০ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়। বাকি আসামিদের মধ্যে রয়েছেন রাউজান নোয়াপাড়া পুলিশ ফাঁড়ির তৎকালীন ইনচার্জ এসআই জাবেদ, বাবুল মেম্বার, নাসের প্রকাশ (টাইগার নাসের), লিটন, তৈয়ব, ফরিদ, মামুন, আবু জাফর রাশেদ, ইয়ার মোহাম্মদ, সেকান্দর, জসিম, খালেদ, বাবুল রব্বানি, হাসান মোহাম্মদ নাসির ও মোর্শেদ।
গত বছরের ১২ সেপ্টেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া সীমান্ত এলাকা থেকে এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে বিজিবি। তখন জানানো হয়, তিনি ‘অবৈধভাবে ভারতে যাওয়ার চেষ্টা’ করছিলেন। এরপর তাকে আখাউড়া থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং পরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা কারাগারে পাঠানো হয়। ১৯ সেপ্টেম্বর হেলিকপ্টারের মাধ্যমে তাকে চট্টগ্রামে আনা হয়।
ফজলে করিমের বিরুদ্ধে চট্টগ্রামের বিভিন্ন থানায় হত্যার চেষ্টাসহ অপহরণ, মুক্তিপণ আদায়, অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানো, জমি দখল, ভাঙচুর এবং অস্ত্র উদ্ধারের মতো এক ডজনের বেশি মামলা রয়েছে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
ভূমিকম্পে সচিবালয়ের নতুন ভবনে ফাটল
দেশবাসীর কাছে দোয়া চেয়েছেন খালেদা জিয়া
রাজধানীতে ৩০০ ঝুঁকিপূর্ণ ভবন চিহ্নিত করা হয়েছে: রাজউক চেয়ারম্যান