November 26, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Wednesday, November 26th, 2025, 5:19 pm

২৫-৩০ আসনে প্রার্থী বদলানোর পথে বিএনপি, শরিক জোটের আসনেও টানাপোড়েন

ফাইল ফটো

 

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘনিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে বিএনপির মনোনয়ন রাজনীতিতে টানাপোড়েন আরও বেড়েছে। ঘোষিত প্রার্থী তালিকা নিয়ে দলটির বিভিন্ন জেলায় বিক্ষোভ–সমাবেশ, সড়ক–রেল অবরোধসহ পরিস্থিতি জটিল আকার ধারণ করছে। তৃণমূলে ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা প্রতিদিনই মিছিলসহ নানা কর্মসূচি করছেন।

দলীয় সূত্রমতে, বিএনপি ঘোষিত ২৩৭ আসনের তালিকা পুনর্বিবেচনায় যেতে পারে। এর মধ্যে ২৫–৩০টি আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের পরিকল্পনা চলছে। পাশাপাশি যেসব হেভিওয়েট নেতা তালিকা থেকে বাদ পড়েছেন—তাদের মধ্যে ১০–১৫ জনকে নতুন করে যুক্ত করার আলোচনাও রয়েছে।

৩ নভেম্বর মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে জানিয়েছিলেন—এটি চূড়ান্ত নয়, যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। এরপরই ক্ষুব্ধ তৃণমূলে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার জন্ম দেয়।

ঘোষিত ওই তালিকায় বিএনপি’র অনেক হেভিওয়েট নেতার নাম নেই। এর মধ্যে রয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির ৪ সদস্য ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম মিয়া, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান।

এ ছাড়া বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, আসলাম চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন-নবী খান সোহেল, অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, হুমায়ুন কবির, সাবেক এমপি ও ডাকসুর সাবেক এজিএস নাজিমউদ্দীন আলম, সাবেক এমপি রুমিন ফারহানা, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, মহিলা দলের সভানেত্রী আফরোজা আব্বাস ও মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবদুল হাই এবং ঝালকাঠিতে বরিশাল বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবুল হক নান্নু।

এ ছাড়া আছেন যুগপৎ আন্দোলনের শরিক ও সমমনা দলের নেতারা। সব মিলে দলটির শীর্ষ নেতৃত্ব ওই মনোনয়ন তালিকার অন্তত ২৫ থেকে ৩০টি আসনে পরিবর্তন বা সংশোধন আনতে যাচ্ছে বলে জানা যায়।

বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা গেছে, মনোনয়ন বিতর্ক চলছে দিনাজপুর-২, নীলফামারী-৪, ঠাকুরগাঁও-৩, কুড়িগ্রাম-১, ২ ও ৩, রংপুর-৩, গাইবান্ধা-২ ও ৪, জয়পুরহাট-১ ও ২, রাজশাহী-১, ৩, ৪ ও ৫, চাঁপাইনবাবগঞ্জ-১, নওগাঁ-১, ৩ ও ৪, নাটোর-১, পাবনা-৪, সিরাজগঞ্জ-৩, নারায়ণগঞ্জ-২, মুন্সিগঞ্জ-১ ও ২, রাজবাড়ী-২, নরসিংদী-৪, টাঙ্গাইল-১ ও ৭, ময়মনসিংহ-৩, ৬, ৯ ও ১১, নেত্রকোনা-৫, শেরপুর-২, জামালপুর-২, কুষ্টিয়া-১ ও ৪, সাতক্ষীরা-২ ও ৩, বরিশাল-১, সিলেট-৬, সুনামগঞ্জ-৫, মৌলভীবাজার-২, হবিগঞ্জ-৪, চট্টগ্রাম-৪, ১২, ১৩ ও ১৬, কুমিল্লা-৫, ৬ ও ১০, নোয়াখালী-৫, চাঁদপুর-২, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ ও ৪ এবং বান্দরবান আসনে।

এদিকে বিএনপির দায়িত্বশীল নেতাদের সূত্রে জানা গেছে, দলীয় কোন্দল মেটাতে না পারলেও বিএনপির সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ শরিকদের আসনবণ্টন। যুগপৎ আন্দোলনের শরিক দলগুলোর মধ্যে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বগুড়া-২, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৫, জাতীয় জোটের নেতা সৈয়দ এহসানুল হুদা কিশোরগঞ্জ-৫, এলডিপির চেয়ারম্যান ড. অলি আহমদের ছেলে অধ্যাপক ওমর ফারুক চট্টগ্রাম-১৪, দলটির মহাসচিব ড. রেদোয়ান আহমেদ কুমিল্লা-৭, জাতীয় পার্টি (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার পিরোজপুর-১, জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের স্ত্রী তানিয়া রব লক্ষ্মীপুর-৪, বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব শাহাদাত হোসেন সেলিম লক্ষ্মীপুর-১, বিজেপি চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭, এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ ঢাকা-১৩, গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর পটুয়াখালী-৩, দলটির মহাসচিব রাশেদ খান ঝিনাইদহ-২, এনপিপি চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ নড়াইল-২, লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান ঝালকাঠি-১, জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের একাংশের জুনায়েদ আল হাবিব ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ এবং গণফোরাম ও গণঅধিকার পরিষদে রাজনীতি করার পর এখন কোনো দলে না থাকা ড. রেজা কিবরিয়া হবিগঞ্জ-১ আসনে প্রার্থী হতে যাচ্ছেন। যদিও এসব আসনে এখনো কারও নাম ঘোষণা করেনি বিএনপি। তবে উল্লিখিত আসনে জোটের প্রার্থীরা যে মনোনয়ন পাবেন, তা অনেকটাই নিশ্চিত। তবে মনোনয়ন পেতে জোর তৎপরতা চালাচ্ছেন বিএনপির প্রার্থীরাও।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন— “সব আসন শরিকদের জন্য রাখা হবে না। আর প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত নয়। যেকোনো সময় পরিবর্তন হতে পারে। কেউ হতাশ কিংবা অতিউচ্ছ্বসিত হওয়ার কিছু নেই।”

তিনি আরও জানান, যারা মনোনয়ন পাবেন না—তাদের সিটি বা পৌর নির্বাচনে বিবেচনা করা হতে পারে।

এনএনবাংলা/