হোসেনপুর প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে দৈনন্দিন বেড়েই চলছে বায়ু দূষণ। উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ও রাস্তাঘাটে ধুলা দূষণের প্রকোপ অত্যন্ত বেড়ে গেছে। এতে মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট ,হাঁচি-কাশি সহ বিভিন্ন রোগ-জীবাণুর সংক্রামণ। তবে বায়ু দূষণের সবচেয়ে বেশি শিকার হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
জানা যায়,উপজেলার বিভিন্ন রাস্তা ঘাটে বড় বড় ড্রাম ট্রাক ,লড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন আচ্ছাদনহীন ভাবে বালু পরিবহন করে। কিন্তু দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী বালু বহনের ক্ষেত্রে পুরো যানবাহনগুলোকে আচ্ছাদিত করে রাখার নিয়ম থাকলেও তারা তা মানছে না। ফলে ঢাকনা বিহীন বেপরোয়া গতিতে চলার সময় বালু বাতাসে উড়ে ধূলাদূষণ দেখা দিয়েছে। এতে পথচারী সহ বিভিন্ন আরোহীরা প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন।বালুবাহী প যানবাহন যেন কাপড় দিয়ে আচ্ছাদন করে ফোন করে সে বিষয়ে উদ্বোধন কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
উপজেলায় পৌরসভার বাসিন্দা টুনু মুন্সি (১০১) জানান,শুষ্ক মৌসুমে বাইরে বের হলেই অসুস্থ হয়ে পড়েন। রাস্তায় ধুলাবালির কারণে শ্বাসকষ্ট ও হাঁচি-কাশি দেখা দেয়। শুধুমাত্র সড়কের ধুলার কারণেই এমনটা হয় বলে জানান তিনি।
বাংলাদেশ পরিবেশ অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তরা বলেছেন, শীতে বায়ু দূষণের মাত্রার পাশাপাশি বাড়ে সংক্রমণ রোগের ঝুঁকি।
বিশেষজ্ঞরা বলেন, শুষ্ক মৌসুমে ইট ভাটায় ইট প্রস্তুত ও ইট পোড়ানোর পাশাপাশি অপরিকল্পিতভাবে রাস্তাঘাট উন্নয়ন, মেরামত ও সংস্কারের আওতায় রাস্তাঘাট খোড়াখুড়ির পাশাপাশি আচ্ছাদনহীন ট্রাকে বালু পরিবহন করা, ড্রেন পরিস্কার করে রাস্তার পাশে ময়লার স্তূপ করে রাখা, দোকানপাট ও গৃহস্থালী আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলে রাখা, মেরামতহীন ভাঙ্গাচোরা রাস্তায় যানবাহন চলা, পাকা ভবন নির্মাণের সময় মাটি, বালু, ইট সহ অন্যান্য নির্মাণ সামগ্রী রাস্তার ফুটপাতে ফেলে রাখা ইত্যাদি ধুলা দূষণের অন্যতম উৎস।এসব উৎস থেকে বিপুল পরিমাণ ধুলা বাতাসে মিশে জনস্বাস্থ্য, পরিবেশ ও অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক গবেষণা সংস্থার হেলথ ইন্সটিটিউট এবং ইনস্টিটিউট ফর হেলথ টিপস এন্ড ইভালুয়েশন এর যৌথ উদ্যোগে প্রকাশিত ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে বছরে ১লাখ ২২ হাজার ৪শ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে।
গ্লোবাল বার্ডেন অফ ডিজিজ স্টাডির তথ্যে, বাংলাদেশে বায়ুদূষণে ১১শতাংশ ডায়াবেটিস, ১৬ শতাংশ ফুসফুসের ক্যান্সার, ১৫শতাংশ দীর্ঘমেয়াদি ফুসফুসের রোগ, ১০শতাংশ হৃদরোগ ও ৬ শতাংশ স্ট্রোক এর জন্য দায়ী।
হোসেনপুর উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: তানভীর হাসান জিকু জানান,উপজেলায় বায়ুদূষণে হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট , হাঁচি-কাশি রোগীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। তবে বায়ু দূষণ প্রতিরোধে সচেতন না হলে ভবিষ্যতে জনস্বাস্থ্যে বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে জানান তিনি।

আরও পড়ুন
কুড়িগ্রাম-১ আসনে বিএনপির মনোনীত প্রাথী সাইফুর রহমান রানার প্রতিনিধি সমাবেশ
কমলগঞ্জে ২৫টি অসহায় ও দু:স্থ পরিবারের মাঝে টিউবওয়েল বিতরণ
কুমিল্লায় ৪ ডাকাত গ্রেফতার। দেশীয় অস্রসহ ২ পিকআপ উদ্ধার