ভারতের পেঁয়াজ রপ্তানি দীর্ঘদিন স্থবির থাকায় ভারতের চাষি ও ব্যবসায়ীরা উদ্বিগ্ন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও চীনের মতো দেশগুলোর স্বনির্ভরতার উদ্যোগ এবং বিকল্প বাজার থেকে আমদানির প্রবণতা ভারতের রপ্তানিকে প্রভাবিত করছে।
এক সময় বাংলাদেশের পেঁয়াজ আমদানি ভারতের এক-তৃতীয়াংশ ছিল। তবে গত আট মাসে ভারত থেকে আমদানি মারাত্মকভাবে কমেছে, যদিও ঢাকায় পেঁয়াজের দাম তিনগুণ বেড়ে গেছে। সৌদি আরবও প্রায় এক বছর ধরে ভারতীয় পেঁয়াজের আমদানি সীমিত করেছে।
ভারতের হর্টিকালচার প্রোডিউস এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (এইচপিইএ) এর সাবেক প্রধান অজিত শাহ বলেন, “বাজারে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত থাকায় ক্রেতারা বিকল্প পথ খুঁজে নিয়েছে। এখন পণ্যের মানের ভিত্তিতে নয়, বরং অন্যান্য দেশের দামকে তুলনা করে বাজার নির্ধারণ হচ্ছে।”
ভারত ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত পেঁয়াজ রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল। এর আগেও ২০১৯ এবং ২০২০ সালে কয়েক মাসের জন্য রপ্তানি বন্ধ ছিল। এর ফলে বাংলাদেশসহ ভারতীয় পেঁয়াজের উপর নির্ভরশীল দেশগুলোতে দাম বেড়ে যায় এবং ভারতকে কূটনৈতিক বার্তাও দিতে হয়েছিল।

বর্তমানে বাংলাদেশের সরকার স্থানীয় কৃষকদের সুরক্ষা এবং উৎপাদন বৃদ্ধির কারণে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করছে না। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারত বাংলাদেশে ৭.২৪ লাখ টন পেঁয়াজ রপ্তানি করলেও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে এপ্রিল-সেপ্টেম্বরের মধ্যে রপ্তানি মাত্র ১২,৯০০ টনে নেমে এসেছে।
এইচপিইএ’র সহসভাপতি বিকাশ সিংহ বলেন, “বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা ও অন্যান্য প্রতিবেশী দেশ ভারতীয় পেঁয়াজের বীজ ব্যবহার করে স্বনির্ভর হয়ে উঠছে। এটি ভারতীয় কৃষকদের জন্য বড় হুমকি।” তিনি আরও জানান, চীন ও পাকিস্তানেও ভারতীয় পেঁয়াজের বীজের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ভারতের রপ্তানিকারকরা আরও জানিয়েছেন, সৌদি আরব, ইয়েমেন, ইরান এবং ফিলিপাইনে ভারতীয় পেঁয়াজের চাহিদা কমে গেছে। বিশেষ করে সৌদিতে স্থানীয় উৎপাদন বৃদ্ধি পাওয়ায় ভারতের বাজার প্রভাবিত হচ্ছে।
রপ্তানিকারকরা জোর দিয়ে বলছেন, বারবার রপ্তানি নীতির পরিবর্তনই ভারতের ঐতিহ্যবাহী বাজারগুলো হারানোর মূল কারণ। ভারতীয় পেঁয়াজ এখন শুধু মানের ভিত্তিতে নয়, আন্তর্জাতিক দামের সঙ্গে তুলনা করে মূল্য নির্ধারণ করা হচ্ছে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
প্রধান উপদেষ্টার প্রতি তারেক রহমানের কৃতজ্ঞতা
দুই জাতীয় পার্টির সমন্বয়ে হতে যাচ্ছে নতুন জোট
তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে অভিবাসন ‘স্থায়ীভাবে বন্ধ’ ঘোষণা ট্রাম্পের