December 3, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, December 2nd, 2025, 8:07 pm

ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে মধুপুরের প্লেট, শঙ্কিত টাঙ্গাইলবাসী

টাঙ্গাইল প্রতিনিধি:

ভূমিকম্পের উচ্চ ঝুঁকিতে টাঙ্গাইলের মধুপুরের প্লেট। যেটা মধুপুর ফল্ট নামে পরিচিত। অপরদিকে  টাঙ্গাইলের বাসিন্দারা মধুপুর ফল্ট নিয়ে শঙ্কিত রয়েছে। যার ফলে ভূমিকম্প নিয়ে সরকারের পক্ষ থেকে সচেতনতার দাবি জানিয়েছে স্থানীয়রা।

দেশে তিনটি প্রধান ভূমিকম্পন বলয় রয়েছে। এর মধ্যে জেলার মধুপুর একটি বলয় । যেটা মধুপুর ফল্ট নামে পরিচিত। এই ফল্টের কারণে টাঙ্গাইল সহ সারাদেশে উচ্চ মাত্রায় ভূমিকম্পের আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে উচ্চ মাত্রায় ভূমিকম্প হলে বহু হতাহতের আশঙ্কা রয়েছে ।

জানা যায়, রাজধানী ঢাকা থেকে টাঙ্গাইলের মধুপুর ফল্টের দূরুত্ব কম হওয়ায় আলোচনায় সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছে মধুপুর ফল্ট নিয়ে।

মধুপুর ফল্টের ভূমিকম্পের জন্য শুধু রাজধানী ঢাকা নয়, মধুপুর গড়াঞ্চলের টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ এবং গাজীপুরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হবে।

মধুপুর ফল্ট একটি সক্রিয় ফল্ট, যা যেকোনো সময় ভূমিকম্পের কারণ হতে পারে। ঢাকা থেকে মাত্র ১শ’ কিলোমিটার দূরে মধুপুর অঞ্চলে ৭ থেকে ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্প হবার মতো ভূতাত্ত্বিক ফাটল রেখা রয়েছে।

এর ফলে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, ঢাকাসহ আশপাশের অনেক জেলা ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে।

গত কয়েক বছরে বাংলাদেশে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প আঘাত হেনেছে। এর মধ্যে কিছু ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল টাঙ্গাইলের মধুপুরে।

২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে টাঙ্গাইলে ৪.২ মাত্রার একটি ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল ছিল এই মধুপুর।

মধুপুর উপজেলার গড় এলাকার বোকারবাইদ গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বক্রাকারে তিন থেকে চার ইঞ্চি ব্যাসার্ধের প্রায় আধা মাইল দীর্ঘ এ ভূ-ফাটল দেখা দিয়েছিল। এ ফাটলের গভীরতা ছিল ১৫ থেকে ২০ ফিট।

কনজুমারস এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাবের) মধুপুর শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম শহীদ জানান, সম্প্রতি দেশে বেশ কয়েকবার ভূমিকম্পনের পর আবারো মধুপুর ফল্টের আলোচনায় নাম উঠে এসেছে।

তিনি বলেন, বিগত সময়গুলোতে মধুপুর ফল্টে বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প সংঘটিত হয়েছে। মধুপুর ফল্টে ৬ থেকে সাড়ে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকা প্রায় ১ কোটি মানুষের মৃত্যু হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. জানে আলম বলেন, ভূমিকম্পের জন্য টাঙ্গাইলের উত্তর অংশ রেড জোনে রয়েছে। জেলার মধ্যে মধুপুর, ভূঞাপুর, টাঙ্গাইল সদর, মির্জাপুর উপজেলার ৪টি স্টেশনগুলোতে সরঞ্জাম বেশি রয়েছে।

ভূমিকম্পের বিষয় রেখে আমাদের প্রস্ততি চলছে। ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি উদ্ধারে আমাদের সমক্ষতা বেড়েছে। এছাড়াও আমরা কমিউনিটি ভলান্টিয়ার প্রস্তুত করছি।

টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনভারমেন্ট এন্ড রিসোর্স এন্ড সাইন্সের অধ্যাপক মীর মো. মোজাম্মেল হক বলেন, বাংলাদেশের তিনটি প্রধান ভূমিকম্পন বলয়ের মধ্যে মধুপুরে একটি বলয় রয়েছে যা মধুপুর ফল্ট নামে পরিচিত। মধুপুরের ফল্টের ব্যপ্তি টাঙ্গাইলসহ ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকার ১ কিলোমিটারের মধ্যে।  মধুপুর ফল্ট যে কোন সময়ে সক্রিয় হতে পারে বলে আমরা শঙ্কার মধ্যে রয়েছি। মধুপুর ফল্টে ৬ থেকে সাড়ে ৬ মাত্রার ভূমিকম্প হলে টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, গাজীপুর ও ঢাকার বিস্তীর্ণ অংশে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এতে প্রায় ১ কোটি মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে। ভূমিকম্প রোধে আমাদের সচেতন হতে হবে।

মধুপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন বলেন, মধুপুর ফল্টের ভূমিকম্পের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।

দুযোর্গ প্রশমন দিবসে ভূমিকম্পে পরবর্তীত করণীয় বিষয়ে আমরা বিভিন্ন কার্যক্রম দেখিয়েছি। তবে স্থানীয়দের সচেতনার জন্য দ্রুতই মহড়া করা হবে।