সরকারের অনুমোদন ছাড়াই ভোজ্যতেলের দাম সমন্বয়ের উদ্যোগ নেওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীদের কাছে কারণ জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে সরকার—এ তথ্য জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।
বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেইট খামারবাড়িতে বস্ত্র অধিদপ্তর আয়োজিত ‘জাতীয় বস্ত্র দিবস’ উপলক্ষে কর্মশালা শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি জানান, ব্যবসায়ীরা তেল–দামের বিষয়ে পূর্বে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কোনো আলোচনা করেনি। তাই তাদের কাছে কারণ দর্শানোর নোটিস পাঠানোর পাশাপাশি একটি সভায় অংশ নেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
গত ১৪ অক্টোবর বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন বোতলজাত সয়াবিন তেলের লিটারে ৬ টাকা এবং খোলা তেলের দামে ৮ টাকা বৃদ্ধির ঘোষণা দেয়। এর আগের দিন খুচরা বাজারেই বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ১৮৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৯৮ টাকা এবং খোলা তেলের দাম লিটারে ৫ টাকা বাড়ে।
কিন্তু সরকারের তরফ থেকে এই মূল্যবৃদ্ধির অনুমোদন দেওয়া হয়নি। আমদানিকারক ও বাজারজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সরকারের সিদ্ধান্ত ছাড়াই দাম বাড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, তারা আমাদের কিছু না জানিয়ে নিজেদের সিদ্ধান্তে দাম বাড়িয়েছে। আমি আগেও বলেছি—এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি আরও জানান, সরকারের সাম্প্রতিক তেল কেনার তথ্য দেখালেই বোঝা যায়—ব্যবসায়ীরা যে দামে বাজারে তেল বিক্রি করছেন, তার চেয়ে প্রায় ২০ টাকা কম দামে সরকারকে তেল সরবরাহ করেছে। “আমরা তো মাত্র গতকালই ৫০ লাখ লিটার তেল কিনেছি। টেন্ডারের মাধ্যমে যখন প্রতি লিটার ২০ টাকা কমে তেল পাওয়া যায়, তখন বাজারে এত বেশি দামের কোনো যুক্তি থাকে না,” বলেন তিনি।
পাট শিল্প নিয়ে মন্তব্য
পাট শিল্পের অবনতি প্রসঙ্গে শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, নীতিগত ত্রুটি, দুর্নীতি এবং অদক্ষ পরিচালনাই এ খাতের পতনের বড় কারণ।
তার মতে, কোনো পূর্বপ্রস্তুতি ছাড়াই শিল্পটি জাতীয়করণ করা হয়, যা উদ্যোক্তাদের সক্ষমতাকে নষ্ট করে দেয়। জাতীয়করণের পর রাষ্ট্রায়ত্ত কারখানাগুলো সরকারি কর্মকর্তাদের মাধ্যমে পরিচালিত হওয়ার সিদ্ধান্তকেও তিনি ভুল বলেন। তিনি জানান, দক্ষতার ঘাটতি ও দুর্নীতির কারণে শিল্পগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হয়নি, ফলে উচ্চ চাহিদা থাকা সত্ত্বেও পাটপণ্যের পর্যাপ্ত সরবরাহ নিশ্চিত করা যায়নি।
ভবিষ্যতে এসব ভুল আর হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, সারাদেশের ৭১টি কলেজ ও ইনস্টিটিউট থেকে বের হওয়া দক্ষ জনশক্তিকে সঙ্গে নিয়ে রপ্তানি ১০০ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করার লক্ষ্য সরকার রেখেছে, যার ৮৫ শতাংশই আসবে বস্ত্র খাত থেকে।
শিল্প প্রতিষ্ঠান বেসরকারি খাতে হস্তান্তর
বাণিজ্য উপদেষ্টা জানান, অন্তর্বর্তী সরকার ইতোমধ্যে ১৪টি শিল্প প্রতিষ্ঠান উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে বেসরকারি খাতে হস্তান্তর করেছে এবং আরও কয়েকটি প্রতিষ্ঠান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এসব প্রতিষ্ঠান আগের তুলনায় ভালো চলছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
তবে কি বাংলাদেশে আসছে পেপ্যাল?
নিবন্ধন পাচ্ছে অনশন করা সেই তারেকের ‘আমজনতার দল’
আমার মৃত্যুদণ্ডের পরপরই ভূমিকম্প, ‘আল্লাহর খেলা’: শেখ হাসিনা