২০১৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করে যাওয়া আপোষহীন নেত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসন ও তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ থেকে সরিয়ে দিতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার ফরমায়েশি রায়কে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ শাসকগোষ্ঠী।
দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক ইতিহাসে ২০১৮ সালে প্রথমবারের মতো ছলচাতুরীর আশ্রয় নিয়ে তাঁকে নির্বাচনের মাঠ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ১/১১ -এর জরুরি অবস্থার সরকার কতৃক দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় ফরমায়েশি রায় প্রদান করা হয়েছিল।
এসব মামলার কার্যক্রম ও রায় ঘোষণাকালে বিএনপির পক্ষ থেকে বার বার বলা হয়, বেগম খালেদা জিয়াকে ২০১৮ সালের নির্বাচন থেকে দূরে রাখার জন্যই আওয়ামী লীগ সরকার ১/১১- এর সরকারের মিথ্যা মামলাকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল। অথচ ১/১১- এর জরুরি অবস্থার সরকার কর্তৃক অপর নেত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনীত দূর্নীতির মামলাসমূহ আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনের পর ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন মাধ্যমে পরিসমাপ্তি ঘটায়।
বেগম খালেদা জিয়া জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার নেত্রী। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, গণতন্ত্র রক্ষায় তিনি আপোষহীন। তাঁর আপোষহীন আন্দোলনের কারণেই ৯০- এর দশকে দেশ স্বৈরাচার মুক্ত হয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের নব যুগে প্রবেশ করে।
রাজনীতিতে অভিষেকের পর বেগম খালেদা জিয়া যতগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন, সেসব নির্বাচনে তিনি কখনোই পরাজিত হননি। বেগম খালেদা জিয়ার আছে নির্বাচনে জয়ের গৌরবময় ইতহাস।
বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্র ফিরে আসার পর থেকে বেগম খালেদা জিয়াকে ছাড়া কোন নির্বাচনে বিএনপি অংশ নেয়নি। বেগম খালেদা জিয়া নিজ দলের নেতৃত্বে যেমন দিয়েছেন, তেমনি নির্বাচনের মাঠেও তাঁর ছিল সাফল্য শতভাগ।
বাংলাদেশে ১৯৯১ সাল থেকে যতগুলো নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে দুইটি ছাড়া বাকি সবগুলো নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। ২০১৪ ও ২০২৪ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচন বয়কট করেছিল বিএনপি।
গত প্রায় তিন দশক ধরে বাংলাদেশের নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছেন। নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া কখনোই পরাজিত হননি।
১৯৯১ সাল থেকে শুরু করে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনটি সংসদ নির্বাচনে বেগম খালেদা জিয়া প্রতিবারই পাঁচটি আসনে প্রার্থী হয়েছেন এবং সবগুলো আসনে তিনি জয়লাভ করেছেন।
এর মধ্যে ১৯৯৬ সালের নির্বাচনেও খালেদা জিয়া প্রার্থী ছিলেন। এরপর ২০০৮ সালে খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিন্দ্বন্দ্বিতা করে তিনটিতে জয়ী হন। ২০০৮ সালের নির্বাচনে সবচেয়ে খারাপ ফলাফল করেছিল বিএনপি। সে নির্বাচনে বিএনপি ৩০টি আসন পেলেও বেগম খালেদা জিয়া নির্বাচনে জয়লাভ করতে কোনো অসুবিধা হয়নি। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও বেগম খালেদা জিয়া তিনটি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। এসব আসন ছিল—ফেনী ১, বগুড়া ৬ ও বগুড়া ৭।
বেগম খালেদা জিয়ার অতীত নির্বাচনগুলো পর্যালোচনা দেখা যায়, তিনি বগুড়া, ফেনী, লক্ষ্মীপুর এবং চট্টগ্রামের আসন থেকে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন।
এছাড়া ১৯৯১ সালে ঢাকার একটি আসন থেকে এবং ২০০১ সালে খুলনার একটি আসন থেকে ভোটে লড়েছেন তিনি। নির্বাচনের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায়, শুধু জয়লাভ করাই নয়, প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের সাথে বেগম খালেদা জিয়ার ভোটের ব্যবধানও ছিল সবসময় বেশি।
তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
খালেদা জিয়া লন্ডনে যেতে পারেন জোবাইদাকে ছাড়াই, সঙ্গে থাকবেন আরেক পুত্রবধূ শর্মিলা রহমান
অনিবার্য কারণ ছাড়া নির্বাচন বিলম্বিত হোক, চায় না বিএনপি
এসএসএফ সুবিধা পাবেন শুধু খালেদা জিয়া, পরিবারের অন্য সদস্য নয়: পরিবেশ উপদেষ্টা