কার্যক্রম নিষিদ্ধ দল আওয়ামী লীগের দীর্ঘ শাসনামলে সংঘটিত গুমের ঘটনাগুলোতে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সরাসরি নির্দেশ দিতেন—আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে এমন তথ্য জানিয়েছেন চিফ প্রসিকিউটর মো. তাজুল ইসলাম। তাঁর দাবি, ওই নির্দেশ বাস্তবায়নের দায়িত্ব পালন করতেন শেখ হাসিনার প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক।
রবিবার (৭ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (জেআইসি) বা আয়নাঘরে নির্যাতন ও গুমের অভিযোগ সম্পর্কিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানিতে এসব মন্তব্য করেন প্রসিকিউটর।
বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে ট্রাইব্যুনাল-১ এর তিন সদস্যের প্যানেলে আরো ছিলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ এবং অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
চিফ প্রসিকিউটর জানান, গুমের সময়কার বেশ কয়েকটি অপারেশনের দায়িত্বে ছিলেন লে. কর্নেল (অব.) মখছুরুর হক।
দুপুর ১২টার দিকে শেখ হাসিনা, তারেক সিদ্দিক, সাবেক ডিজিএফআইপ্রধানসহ মোট ১৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরু করার আবেদন করা হয়।
এদিন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন। মামলায় গ্রেপ্তার রয়েছেন সেনাবাহিনীর তিন কর্মকর্তা, যাদেরকে সকালে সেনানিবাসের বিশেষ কারাগার থেকে কড়া নিরাপত্তায় ট্রাইব্যুনালে আনা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন—ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী এবং ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
পলাতক আসামির তালিকায় রয়েছেন—প্রতিরক্ষাবিষয়ক সাবেক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, ডিজিএফআইয়ের সাবেক মহাপরিচালক লে. জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আকবর হোসেন, মেজর জেনারেল (অব.) সাইফুল আবেদিন, লে. জেনারেল (অব.) মো. সাইফুল আলম, লে. জেনারেল তাবরেজ শামস চৌধুরী, মেজর জেনারেল (অব.) হামিদুল হক, মেজর জেনারেল তৌহিদুল ইসলাম, মেজর জেনারেল কবির আহাম্মদ এবং লে. কর্নেল (অব.) মখসুরুল হক।
২৫ নভেম্বর শুনানির জন্য দিন নির্ধারণ করা হয়েছিল। একইসঙ্গে পলাতকদের জন্য স্টেট ডিফেন্স নিয়োগ দেয় ট্রাইব্যুনাল। পরে শেখ হাসিনার আইনজীবী হিসেবে জেডআই খান পান্না দায়িত্ব নিলেও শারীরিক অসুস্থতার কথা জানিয়ে ৩ ডিসেম্বর তা প্রত্যাহার করলে তাঁর স্থলে মো. আমির হোসেনকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, গত ২২ অক্টোবর সেনা হেফাজতে থাকা তিন কর্মকর্তাকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয় এবং শুনানির পর তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। একই আদেশে পলাতক আসামিদের উপস্থিতির জন্য সাত দিনের মধ্যে দুইটি জাতীয় দৈনিকে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দেওয়া হয়।
এ মামলায় গত ৮ অক্টোবর ১৩ জনের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলের পর আদালত তা আমলে নিয়ে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
ট্রাইব্যুনালে হাসিমুখে শাজাহান খান, বিষণ্ণ পলক
খালেদা জিয়ার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্স আসছে আগামীকাল সকালে
ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির লাগাম টেনে ধরবে বিএনপি: তারেক রহমান