বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট থেকে মধ্যরাতে দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। নিরাপত্তাজনিত শঙ্কা ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার তথ্যের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।
তারেক রহমানের লন্ডন থেকে ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে বৃহস্পতিবার। তাকে বহন করা বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি–২০২ ফ্লাইটটি বুধবার সন্ধ্যায় লন্ডনের হিথ্রো বিমানবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা। ওই ফ্লাইটে তারেক রহমানের পরিবারের সদস্য ও বিএনপির শীর্ষ নেতারাও যাত্রী হিসেবে থাকবেন।
বিমান সূত্র জানায়, শনিবার দুপুরে বিজি–২০২ ফ্লাইটে কেবিন ক্রু হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য জুনিয়র পার্সার মো. সওগাতুল আলম সওগাত ও ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস জিনিয়া ইসলাম জিনিয়ার নাম চূড়ান্ত করা হয়। তবে গভীর রাতে পাওয়া গোয়েন্দা প্রতিবেদনে তাদের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা এবং ভিআইপি যাত্রীর নিরাপত্তা নিয়ে সম্ভাব্য ঝুঁকির কথা উল্লেখ থাকায় তাদের দায়িত্ব বাতিল করা হয়।
পরবর্তীতে তাদের পরিবর্তে ফ্লাইট পার্সার মোস্তফা ও ফ্লাইট স্টুয়ার্ডেস আয়াতকে ওই ফ্লাইটে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিমানের ফ্লাইট সার্ভিস বিভাগ।
গোয়েন্দা সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, মো. সওগাতুল আলম ও জিনিয়া ইসলাম অতীতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিবারের সদস্যদের, বিশেষ করে শেখ সেলিমের বিভিন্ন ফ্লাইটে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করতেন। তাদের বিরুদ্ধে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের নেতাদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগও রয়েছে।
এর আগে, গত ২ মে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার একটি ফ্লাইট থেকেও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আল কুবরুন নাহার কসমিক ও মো. কামরুল ইসলাম বিপন নামের দুই কেবিন ক্রুকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
বিমানের কেবিন ক্রু পজিশনিং কার্যক্রম পরিচালনা করে কাস্টমার সার্ভিস ডিপার্টমেন্টের প্ল্যানিং অ্যান্ড সিডিউলিং শাখা। দীর্ঘদিন ধরে এই বিভাগের ব্যবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন শাহনাজ বেগম। তার মাধ্যমেই খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের ফ্লাইটের ক্রু পজিশনিং সম্পন্ন হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (এমডি ও সিইও) ড. শাফিকুর রহমান গণমাধ্যমকে জানান, গোয়েন্দা প্রতিবেদনের ভিত্তিতেই দুই কেবিন ক্রুকে ফ্লাইট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে বারবার কেন পতিত সরকারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ ভিআইপি ফ্লাইটে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে, তা তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ও তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তন কমিটির সদস্যসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী বলেন,
“একই ধরনের ঘটনা বারবার ঘটছে কেন, সেটি খতিয়ে দেখা জরুরি।”
তবে তিনি তারেক রহমানের ফ্লাইটে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর তৎপরতা ও দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেছেন।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
যেকোনো উসকানির মুখে ধীর ও শান্ত থাকতে দেশবাসীর প্রতি তারেক রহমানের আহ্বান
সোমবার থেকে আমানতের অর্থ ফেরত পাবেন পাঁচ ব্যাংকের গ্রাহকরা
‘তারেক রহমানের প্রত্যাবর্তন বহুদলীয় গণতন্ত্রের চর্চাকে সুসংহত করবে’