December 27, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Saturday, December 27th, 2025, 3:45 pm

বেনাপোল দিয়ে ভারতে যাত্রী যাতায়াত কমেছে ৮৫ শতাংশ

 

ভারত ভ্রমণে ভিসা জটিলতা ও বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশন অফিস বন্ধ থাকায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পাসপোর্টধারী যাত্রীদের যাতায়াত প্রায় ৮৫ শতাংশ কমে গেছে। গত তিন দিনে বাংলাদেশ-ভারত রুটে মোট পাঁচ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন, যা আগের সময়ের তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম।

ভারত সরকার নতুন নিয়মে অনলাইন ‘আগমন ফরম’ পূরণ বাধ্যতামূলক করায় যাত্রীদের ভোগান্তি আরও বেড়েছে। এখন যাত্রার অন্তত ৭২ ঘণ্টা আগে ইন্ডিয়ান ভিসা অনলাইন অ্যারাইভেল ওয়েবসাইটে আগমন ফরম পূরণ করে প্রিন্ট কপি সঙ্গে রাখতে হচ্ছে। আগে যাত্রীরা ভারতের ইমিগ্রেশনে গিয়ে হাতে লিখে এই ফরম পূরণ করতেন।

যাত্রীদের অভিযোগ, ওয়েবসাইটের সার্ভার সমস্যার কারণে ফরম পূরণ করতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। এর সঙ্গে যোগ হয়েছে ভিসা ফি ও অন্যান্য খরচ বৃদ্ধি। বর্তমানে ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিতে ভারতীয় দূতাবাসে এক হাজার ৫০০ টাকা ফি দিতে হচ্ছে। ভিসা পাওয়ার পর বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এক হাজার ৫৭ টাকা ভ্রমণ কর ও পোর্ট চার্জ আদায় করা হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ।

ভিসা আবেদনকারীদের অভিযোগ, পাসপোর্ট জমা দেওয়ার পর প্রায় ৯৫ শতাংশ যাত্রী ভিসা পাচ্ছেন না। এতে প্রতি যাত্রীর এক হাজার ৫০০ টাকা করে ফি গচ্চা যাচ্ছে। ভিসা না দিয়েই সাধারণ মানুষের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

গত বছরের ৫ আগস্ট থেকে ভিসা জটিলতার কারণে ভারতমুখী যাতায়াত কমতে শুরু করে। রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণ দেখিয়ে ভারত সরকার ট্যুরিস্ট, বিজনেস ও স্টুডেন্ট ভিসা বন্ধ রাখে। কেবল মেডিক্যাল ভিসা চালু থাকলেও কঠোর শর্তে মাত্র ৫ শতাংশ রোগীকে ভিসা দেওয়া হচ্ছে।

অনেক ক্ষেত্রে ভিসা না পেয়ে রোগীরা দালালের আশ্রয় নিচ্ছেন। দালালের মাধ্যমে ভিসা পেতে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত অতিরিক্ত খরচ করতে হচ্ছে। এছাড়া যে ডাক্তারের অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেখিয়ে ভিসা নেওয়া হয়, সেই চিকিৎসকের কাছেই চিকিৎসা করাতে হচ্ছে। এই শর্ত ভঙ্গ করলে ফেরার সময় ভারতীয় ইমিগ্রেশন যাত্রীদের আটকে দিচ্ছে।

বেনাপোল বন্দর সূত্র জানায়, আগে প্রতিদিন যেখানে সাত থেকে আট হাজার পাসপোর্টধারী যাত্রী যাতায়াত করতেন, বর্তমানে তা কমে মাত্র ২০ শতাংশে নেমে এসেছে।

মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভারতে যাওয়ার সময় ফরিদপুরের শ্যামল দত্ত বলেন, তিনবার ভিসার জন্য পাসপোর্ট জমা দিয়েও ভিসা পাননি। পরে দালালের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা দিয়ে চতুর্থবার ভিসা পান। এর বাইরে ভিসা ফি বাবদ এক হাজার ৫০০ টাকা এবং ভ্রমণ কর হিসেবে এক হাজার ৬০ টাকা দিতে হয়েছে। এত টাকা খরচ করার পর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ হাতে থাকছে না।

বেনাপোল স্থলবন্দর ইমিগ্রেশনের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি এস এম শাখাওয়াত হোসেন জানান, গত তিন দিনে মোট পাঁচ হাজার ৩৯২ জন যাত্রী যাতায়াত করেছেন। এর মধ্যে শনিবার ভারতে গেছেন ৮৪৭ জন ও ফিরেছেন ৭৭৯ জন, রবিবার গেছেন ৯৭৭ জন ও ফিরেছেন ৮৮০ জন এবং সোমবার গেছেন এক হাজার ১৩৯ জন ও ফিরেছেন ৭৭০ জন। ভিসা বন্ধ, জটিলতা ও নতুন নিয়মের কারণে যাত্রী চলাচল ব্যাপকভাবে কমে গেছে।

এনএনবাংলা/