অনলাইন ডেস্ক :
জাপানের ইলেকট্রনিক ও প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তোশিবকে ভেঙে তিনটি আলাদা কোম্পানি করা হচ্ছে। তোশিবার একজন মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেন, তোশিবাকে ভেঙ্গে ব্যবসা আলাদা করার পরিকল্পনা বিবেচনাধীন রয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে আরও কিছুদিন পর। তোশিবার পরিচালনা বোর্ড চেয়ারম্যানের অপসারণ ও বিতর্কিত এক ক্রয় প্রস্তাবনার পর আগামী ২০২৩ সালে বিশ্বখ্যাত এই প্রতিষ্ঠানকে ভেঙ্গে তিনটি আলাদা কোম্পানি করার সিদ্ধান্ত এসেছে বলে জানিয়েছে জাপানের সংবাদমাধ্যম দ্য নিক্কে বিজনেস। পত্রিকাটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আলাদা এই তিন ইউনিট অবকাঠামো, যন্ত্রাংশ ও সেমিকন্ডাক্টর মেমোরি উৎপাদন করবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে পুঁজিবাজারেও তারা তালিকাভুক্ত হতে যাচ্ছে। দ্য নিক্কে জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার তোশিবা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক আয়ের প্রতিবেদন প্রকাশ করবে। সেদিন মধ্যমেয়াদী ব্যবসায়িক পরিকল্পনাও উন্মোচন করবে। সেদিনই প্রতিষ্ঠান বিভক্ত হয়ে যাওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের ঘোষণা আসতে পারে। তোশিবার মুখপাত্র তাতসুরো ওইসি এএফপিকে বলেন, ‘আমরা আমাদের কর্পোরেট মূল্য বাড়ানোর জন্য একটি মধ্যমেয়াদী ব্যবসায়িক পরিকল্পনার খসড়া তৈরি করছি। ব্যবসাগুলোকে বিভক্ত করার জন্য বিকল্প চিন্তাভাবনা করা হচ্ছে। কোনো সিদ্ধান্ত নিলে দ্রুত ঘোষণা করব আমরা… যতটুকু প্রকাশ করা উচিত।’ চলতি বছর জুনে জাপানের পুঁজিবাজারে সক্রিয় বিনিয়োগকারীদের বিজয়ের পর তোশিবার শেয়ারহোল্ডাররা একাধিক কেলেঙ্কারি এবং ব্যবসায়িক ক্ষতির পর বোর্ডের চেয়ারম্যানকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে ভোট দেয়। এই অভিযোগ তদন্তের আগে তোশিবা শেয়ারহোল্ডারদের ভোটাভুটিতে বাধা দিয়েছিল বলে অভিযোগ এসেছে।পরে তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, তোশিবা জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়কে এই ভোটপ্রয়োগের আগে কতটা চাপে রেখেছিল। চলতি বছর এপ্রিলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে তোশিবা কিনে নেওয়ার প্রস্তাবনা আসার পর শেয়ারহোল্ডাররা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন। পরে জানা যায় ওই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে তোশিবার প্রধান নির্বাহী নবুওয়াকি কুরুমাতানির সংযোগ রয়েছে। তুমুল বিতর্কের মধ্যে কুরুমাতানি এপ্রিল মাসে পদত্যাগ করেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, বিতর্কিত ক্রয় প্রস্তাবের সঙ্গে তার পদত্যাগের কোনো সম্পর্ক নেই। গত ২০১৭ সালের এপ্রিলে খবর আসে, ইলেক্ট্রনিক সামগ্রিসহ টারবাইন ও জেনারেটর প্রস্তুকারক বিশ্বখ্যাত জাপানি প্রতিষ্ঠান তোশিবা করপোরেশন আর্থিক সংকটে দেউলিয়া হতে যাচ্ছে। তোশিবার বিপুল পরিমাণ ইলেক্ট্রনিক সামগ্রী বাংলাদেশে ব্যবহৃত হয়। তখন তোশিবা জানায়, পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রকল্পে ব্যাপক পরিমাণ লোকসান দিচ্ছে তারা। ভর্তুকি দিতে গিয়ে তোশিবা করপোরেশন ২০১৬ সালে প্রথম তিন প্রান্তিকে বিপুল পরিমাণ লোকসান দিয়েছে। তোশিবার মূলধন ও সম্পদের চেয়ে দেনা বেড়েছে অনেক। এর পরিমাণ ৩৪০ বিলিয়ন ইয়েন। অর্থাৎ তোশিবার সার্বিক সব সম্পদের যে দাম, তার চেয়ে দেনার পরিমাণ ৩৪০ বিলিয়ন ইয়েন বেশি।
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় ভয়াবহ বিমান দুর্ঘটনা: সেদিন আসলে কী ঘটেছিল?
অনলাইনে রিটার্ন জমা ১০ লাখ ছাড়ালো
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৭৭