জেলা প্রতিনিধি :
সিলেটের সীমান্তবর্তী গোয়াইনঘাট উপজেলায় বুধবার ভোরে একই পরিবারের তিনজনের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ফতেহপুর ইউনিয়নের বিন্নাকান্দি দক্ষিণ পাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- ফতেহপুরের বিন্নাকান্দি ফুলেরতল গ্রামের হিজবুর রহমানের স্ত্রী আলেমা বেগম (৩৫), ছেলে মিজান (৮) ও মেয়ে তানিশা (৫)। ঘটনাস্থল ঘরের ভেতর বিছানা থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় গৃহকর্তা হিজবুর রহমানকে উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছেন আলিমা বেগমের স্বামী হিফজুর রহমান। তাকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এ ঘটনায় এখনও কোনো সূত্র মিলেনি। তবে পুলিশের সন্দেহের তীর স্বজনদের দিকে।
যে কারণে এ ঘটনায় গুরুতর আহত গৃহকর্তা হিজবুর রহমানের মামা-মামী, তার শ্যালিকা, প্রতিবেশী ও স্বজনসহ পাঁচজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নিয়েছে পুলিশ। সেইসঙ্গে পারিবারিক কলহ থেকে হিজবুর রহমান নিজেই এ ঘটনা ঘটিয়েছেন কিনা, প্রাথমিকভাবে এসব বিষয় সামনে রেখে তদন্তে নেমেছে পুলিশ।
ঘটনার পর গোয়াইনঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আব্দুল আহাদ বলেন, ঘুমের ঘরে একই পরিবারের তিনজনকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় গৃহকর্তা হিজবুর রহমান গুরুতর আহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমের ঘরেই মা, ছেলে ও মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহ ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মর্গে পাঠানো হয়েছে। তিনি বলেন, হিজবুর তার নানা বাড়িতে মায়ের ভাগের সম্পত্তিতে ঘর বানিয়ে থাকতেন। তাই সম্পত্তির দখল নিয়ে কোনো বিরোধ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখতে হিজবুরের মামা-মামীও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এছাড়া নিহত আলেমা বেগমের সঙ্গে তার স্বামী হিজবুরের কলহ লেগেছিল। এ নিয়ে একাধিকবার সালিশ বৈঠক হয়েছে। রোববার শ্যালিকার বিয়েতে যাওয়া নিয়েও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়াঝাটি হয়। এ থেকেই সন্দেহ হয় নিজেদের মধ্যে ঘটনাটি ঘটলো কিনা? যে কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে পারিবারিক কলহ ও সম্পত্তি সংক্রান্ত বিরোধকে প্রাধান্য দিয়ে তদন্ত চালানো হচ্ছে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ বিষয়গুলোকে ইঙ্গিত করেছেন সিলেটের পুলিশ সুপার (এসপি) ফরিদ উদ্দিন।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান সিলেট রেঞ্জের উপমহাপুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) মো. মফিজ উদ্দিন আহম্মেদ ও সিলেটের পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।
সিলেটের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর ও মিডিয়া) মো. লুৎফর রহমান বলেন, দুর্বৃত্তরা একই পরিবারের চারজনকে হত্যা করতে চেয়েছিল। এরমধ্যে মা, মেয়ে ও ছেলেকে হত্যা করেছে। কেবল গৃহকর্তা হিজবুর বেঁচে আছেন। গুরুতর অবস্থায় তাকে ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তবে কে বা কারা কী কারণে হত্যা করা হয়েছে, তা এখনও জানা যায়নি।
আরও পড়ুন
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের
জান্নাতে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানরা যেভাবে মিলিত হবে
কিশমিশ-মনাক্কায় যত উপকার