নিজস্ব প্রতিবেদক :
শতভাগ উৎসব ভাতার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা। সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মতো তারা দুই ঈদে শতভাগ বোনাস বা উৎসব ভাতা চান। সামনে ঈদুল আজহা উপলক্ষে এ দাবি বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বেসরকারি শিক্ষকরা। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শিক্ষক সমিতির সভাপতি ও এমপিওভুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণ লিয়াজোঁ ফোরামের মুখপাত্র মো. নজরুল ইসলাম রনি বলেন, সামনেই ঈদুল আজহা। এর মধ্যে শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে বিদ্যমান বোনাস বৈষম্য নিরসন করতে হবে। বিদ্যমান ব্যবস্থায় কর্মচারীরা ৫০ শতাংশ আর শিক্ষকরা পান ২৫ শতাংশ। এ ছাড়া সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যেসব মৌলিক বৈষম্য রয়েছে তা নিরসনের ব্যবস্থা নিতে শিক্ষামন্ত্রীর কাছে আমরা আবেদন পাঠিয়েছি। তিনি আরও বলেন, শিক্ষায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন ঘটেছে কিন্তু বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা এখনও চরম বৈষম্যমূলক, গতানুগতিক নানা ধারায় বিভাজিত। বর্তমানে সরকার হাজার হাজার রেজিস্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণ করেছে। মাধ্যমিক ও কলেজ পর্যায়েও কিছুকিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি করেছে। কিন্তু একসঙ্গে জাতীয়করণ না করার কারণে শিক্ষাক্ষেত্রে বৈষম্য দিন দিন বাড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবক তথা পুরো দেশবাসী। শিক্ষকদের দাবি, এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের ২৫ শতাংশ ঈদ বোনাস দীর্ঘ ১৭ বছরেও পরিবর্তন হয়নি। দীর্ঘ ২৮ বছরেও এমপিওভুক্ত হতে না পেরে চরম অর্থ সঙ্কটে দিনযাপন করছেন অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষকরা। বেতন বৈষম্য থাকায় শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন হচ্ছে না। শিক্ষক-কর্মচারীদের আর্থসামাজিক অবস্থার উন্নয়নসহ বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা বাস্তবায়নে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ ঘোষণা জরুরি। এছাড়া ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেল অনুযায়ী সব সুযোগ-সুবিধা চান শিক্ষকরা। তাদের দাবি, স্কেলভিত্তিক পূর্ণ বাড়িভাড়া, দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা, স্কেলভিত্তিক উৎসব বোনাস ও বেতন নির্ধারণ, ধারাবাহিক পদোন্নতি ও বদলির ব্যবস্থা, প্রধান শিক্ষকদের ষষ্ঠ গ্রেডে বেতন নির্ধারণ, বিভাগীয় ভাতা ব্যবস্থা, পূর্ণ অবসর ভাতাসহ মাসিক পেনশন, শিক্ষার্থীদের স্বল্প খরচে পড়াশোনার সুযোগ, শিক্ষকদের সন্তানদের জন্য শিক্ষা ভাতা চালু করতে হবে। এদিকে চলতি বছর ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের (স্কুল ও কলেজ) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০২১’ জারি করেছে সরকার। নীতিমালার ১১.৭ ধারায় বলা হয়েছে, বেসরকারি শিক্ষক-কর্মচারীদের মূল বেতন/বোনাসের নির্ধারিত অংশ/উৎসব ভাতার নির্ধারিত অংশ সরকারের ২০১৫ সালে জাতীয় বেতন স্কেল/সরকার নির্ধারিত সর্বশেষ জাতীয় বেতন স্কেলের সঙ্গে অথবা সরকারের নির্দেশনার সঙ্গে মিল রেখে করতে হবে। জানা গেছে, সংশোধিত নতুন নীতিমালায় বোনাসের প্রসঙ্গটি আনা হলেও শতভাগ বোনাসের ক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমতি নেয়া হয়নি। এখন শতভাগ বোনাস দিতে হলে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন নিয়ে নতুন নির্দেশনা জারি করতে হবে। এ বিষয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) পরিচালক (বিদ্যালয়) অধ্যাপক বেলাল হোসাইন বলেন, এটি সরকারের উচ্চমহলের সিদ্ধান্ত। আমাদের কাছে শতভাগ বোনাস বাস্তবায়নের কোনো নির্দেশনা আসেনি। এলে অবশ্যই পদ্ধতিগতভাবে এটি কার্যকর হবে।
আরও পড়ুন
ডেঙ্গুতে একদিনে ৫ মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৩৪ রোগী
মুজিববর্ষের বাজেট বরাদ্দ বাতিল করলো অন্তর্বর্তী সরকার
নির্বাচনে আইনের প্রয়োগ নিশ্চিত করতে পূর্ণ ক্ষমতা চায় ইসি