অনলাইন ডেস্ক :
গভীর অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত শ্রীলঙ্কার অষ্টম নির্বাহী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিয়েছেন ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টির (ইউএনপি) নেতা রনিল বিক্রমাসিংহে।
বৃহস্পতিবার দেশটির প্রধান বিচারপতি তাকে শপথবাক্য পাঠ করান বলে জানিয়েছে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট দপ্তর, খবর বার্তা সংস্থা রয়টার্সের।
বুধবার পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটাভুটিতে মোট ২২৫ এমপির মধ্যে ১৩৪ জনের ভোট পেয়ে রনিল প্রার্থীদের মধ্যে সবাইকে ছাড়িয়ে যান। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাসীন দল পদুজানা পেরামুনা পার্টির (এসএলপিপি) আইনপ্রণেতা দুল্লাস আলাহাপেরুমা পান ৮২ ভোট। তবে রাজাপাকসে পরিবারের প্রভাবাধীন এসএলপিপি মূল অংশ পার্লামেন্টে ইউএনপির একমাত্র প্রতিনিধি রনিলকেই ভোট দেয়।
মূল্যস্ফীতি এবং খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধ ঘাটতির কারণে সৃষ্ট ব্যাপক জনঅসন্তোষ ও গণবিক্ষোভে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে দেশ ছেড়ে পালানোর পর পদত্যাগ করলে সেসময় প্রধানমন্ত্রী থাকা রনিল ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্বভার কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন।
পরে দেশটির পার্লামেন্টে আইনপ্রণেতারা তাকেই গোটাবায়ার বাকি মেয়াদ পূরণের জন্য পূর্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসেবে বেছে নেন।
নির্বাচিত হয়ে প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নিলেও রাজাপাকসেদের এ মিত্রের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখিয়ে চলছে শ্রীলঙ্কার সরকারবিরোধী আন্দোলনকারীরা। তারা প্রেসিডেন্টের বাসভবনের সামনে জড়ো হয়ে ‘রনিল চলে যাও’ বলে শ্লোগান দিচ্ছে বলে বার্তা সংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার প্রেসিডেন্ট প্রার্থীদের মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর কলম্বোয় সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ডাক দেওয়া দুমিন্দা নাগামুয়া বলেছিলেন, “আমরা রনিলের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছি, তিনি একজন দুর্নীতিপরায়ণ লোক। রনিল ক্ষমতায় এলে স্থিতিশীলতা থাকবে না।”
বিশ্লেষকরা বলছেন, রাজাপাকসেরা সরে যাওয়ার পর বিক্ষোভের তীর তার দিকে ঘুরে গেলেও রনিল কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়ে পরিস্থিতি আপাতত সামাল দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
দ্বীপদেশটির অর্থনৈতিক সংকট মোকাবেলায় আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সঙ্গে ‘বেইলআউটের’ আলোচনাকে দ্রুত সফলতার দিকে নিয়ে যেতে হবে তাকে। মেটাতে হবে খাদ্য, ওষুধ ও জ্বালানির ঘাটতি; হাতে বিদেশি মুদ্রা না থাকায় গত কয়েকমাস ধরেই এসব নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস আমদানি করতে পারছিল না শ্রীলঙ্কা।
এই ঘাটতি আর ভয়াবহ মূল্যস্ফীতি শ্রীলঙ্কাকে স্বাধীনতার পর সবচেয়ে মারাত্মক অর্থনৈতিক সংকটে ফেলেছে। এখন রনিলকে ‘ডুবন্ত’ এই দ্বীপদেশটিকে টেনে তুলতে হবে।
আরও পড়ুন
বাংলাদেশিদের নতুন ধরনের গোল্ডেন ভিসা দিবে আমিরাত
মিয়ানমারে তুমুল সংঘর্ষ, পালাচ্ছে মানুষ
আর্থিক সহায়তা নয়, ফরিদার পরিবার চায় উন্নত চিকিৎসার দায়িত্ব নিক রাষ্ট্র