অনলাইন ডেস্ক :
দেশের প্রেক্ষাগৃহে স্বমহিমায় প্রদর্শিত হচ্ছে আলোচিত সিনেমা ‘হাওয়া’। কিন্তু ধারাবাহিকভাবে আইনি জটিলতায় পড়ছে সিনেমাটি। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইন-২০১২ লঙ্ঘনের অভিযোগে সিনেমাটির পরিচালক মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন বন্যপ্রাণী পরিদর্শক নারগিস সুলতানা। গত ১৭ আগস্ট ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ মামলা করেন তিনি। প্রদর্শনী বন্ধের দাবিতে গত ২২ আগস্ট সেন্সর বোর্ডে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী খন্দকার হাসান শাহরিয়ার। এ পরিস্থিতিতে সর্বস্তরের শিল্পী-কুশলীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এবার বিষয়টি নিয়ে সাংগঠনিকভাবে প্রতিবাদ জানালো টেলিভশন নাটকের শিল্পীদের সংগঠন অভিনয় শিল্পী সংঘ। সংগঠনটি এক বিবৃতিতে বলেছে, ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্র যখন কয়েকজন তরুণ, মেধাবী, শিক্ষিত শিল্পী, নির্মাতার হাত ধরে ধ্বংসস্তূপ থেকে আবার নতুনভাবে একটু একটু করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে শুরু করেছে, আবার যখন সিনেমা হলে মানুষের জোয়ার নেমেছে, মানুষ দলে দলে সিনেমা দেখতে আসছে, ঠিক তখনি এ জোয়ার বন্ধ করার ষড়যন্ত্র নিয়ে অশুভ শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন সময় বিভিন্নভাবে এই অশুভ শক্তি বাংলাদেশের শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতিকে ধ্বংস করার জন্য জঘন্যতম তৎপরতা চালিয়ে আসছে।’ সিনেমাটিতে বন্যপ্রাণীর কোনো ক্ষতিসাধন করা হয়নি, তা ঘোষণা দিয়েছেন নির্মাতা। বিষয়টি উল্লেখ করে এ বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘নাটক চলচ্চিত্র নির্মাণে কখনো শিল্পী নির্মাতারা পশু-পাখি প্রাণী হত্যা ও নির্যাতন করেন না। গল্পের প্রয়োজনেই কখনো কখনো পশু-পাখিদের দেখানো হয়ে থাকে। যা ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রে ঘটেছে। জেলেরা গভীর সমুদ্রে হারিয়ে গেলে পাখি ছেড়ে দিয়ে দেখেন কাছাকাছি কোনো স্থলভূমি আছে কিনা! যা এই চলচ্চিত্রে দেখানো হয়েছে। এটি জীবনেরই অংশ এবং চলচ্চিত্রে ঘোষণাই দেওয়া হয়েছে এখানে কোনো বন্যপ্রাণীর ক্ষতিসাধন করা হয়নি। জন্মলগ্ন থেকে আমরা বিভিন্ন নাটক চলচ্চিত্রে দেখে আসছি এমন কত দৃশ্য সেগুলো নিয়ে আপত্তি উঠলো না কেন?’’ বিটিভিতে প্রচারিত জনপ্রিয় নাটক ‘বহুব্রীহি’। এ নাটকে খাঁচাবন্দি টিয়া পাখি দেখানো হয়েছিল। এ বিষয়টি উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ‘‘সরকার নিয়ন্ত্রিত বাংলাদেশ টেলিভিশন প্রযোজিত ভীষণ জনপ্রিয় নাটক ‘বহুব্রীহি’র সেই খাঁচায় বন্দি টিয়া পাখির ‘তুই রাজাকার’ সংলাপ এখনও আমাদের স্মৃতিতে জ¦লজ¦ল করছে। এমন হাজারও ঘটনায় কর্তৃপক্ষ তখন কোথায় ছিলো? এ ঘটনায় চলচ্চিত্রের প্রযোজক, পরিচালককে ডেকে কথা বলা যেতো। আইন লঙ্ঘন হয়ে থাকলে কীভাবে তা শোধরানো যায় সেই আলোচনা ও পদক্ষেপ নেওয়া যেতো। তা না করে ২০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ মামলা, চলচ্চিত্র প্রদর্শনী বন্ধের জন্য আইনি তলব- এসবই আমাদের শিল্প সংস্কৃতির কণ্ঠ রুদ্ধ করার, শিল্প সাহিত্য চর্চাকে নিরুৎসাহিত করার ষড়যন্ত্র হিসেবেই আমরা দেখছি।’’ পরিবেশবাদীরা বলছেন, সিনেমাটিতে একটি শালিক পাখিকে খাঁচায় প্রদর্শন ও হত্যা করে খাওয়ার চিত্র দেখানো হয়েছে। এতে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘন হয়েছে উল্লেখ করে ‘হাওয়া’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শন বন্ধের দাবি জানায় পরিবেশবাদী ৩৩টি সংগঠন। পাশাপাশি মেজবাউর রহমান সুমনের বিরুদ্ধে ২০ কোটি টাকার মামলা হয়েছে। সিনেমাটির বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন- চঞ্চল চৌধুরী, নাজিফা তুষি, শরিফুল রাজ, সুমন আনোয়ার, নাসির উদ্দিন খান, সোহেল ম-ল, রিজভী রিজু, মাহমুদ হাসান, বাবলু বোস প্রমুখ।
আরও পড়ুন
‘সন্দেহের ছায়ায়’ উত্তাপ ছড়ালেন জয়া
তাহসান-রোজার মধুচন্দ্রিমার ছবি-ভিডিও ভাইরাল!
সাকিব এবং তামিমের বিদায় নিশ্চিত হয়েই গেল