অনলাইন ডেস্ক :
চীনের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় সিচুয়ান প্রদেশে সোমবার ছয় দশমিক ৮ মাত্রার ভূমিকম্পে অন্তত ৬৫ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ভূমিকম্পে প্রাদেশিক রাজধানী চেংডুতে ভূমিধ্বস ও ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। প্রদেশের দুই কোটি ১০ লাখ বাসিন্দা ইতোমধ্যেই একটি কোভিড-১৯ লকডাউনের আওতায় রয়েছে।
চীনের ভূমিকম্প নেটওয়ার্ক কেন্দ্র জানিয়েছে, দুপুরের পরপরই লুডিং কাউন্টির একটি পাহাড়ি এলাকায় ভূমিকম্পটি আঘাত হানে।
তিব্বত মালভূমির প্রান্তে অবস্থিত সিচুয়ানে টেকটোনিক প্লেটগুলো মিলিত হয়েছে। ঠিক সেখানেই নিয়মিত ভূমিকম্প আঘাত হানছে। জুনের দুটি ভূমিকম্পে অন্তত চারজন মারা গেছে।
সিনহুয়া সংবাদ সংস্থা মঙ্গলবার জানিয়েছে, তিব্বতের স্বায়ত্তশাসিত গার্জে অঞ্চলের ঐতিহাসিক শহর মক্সিতে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ও ভবনগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যেখানে অন্তত ৩৭ জন মারা গেছে। ৫০ হাজার মানুষের জন্য ভূমিকম্পে অনিরাপদ বাড়ি থেকে সরিয়ে নেয়ার জন্য তাঁবু তৈরি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম সিসিটিভিতে দেখা গেছে, উদ্ধারকর্মীরা মক্সিতে ধ্বসে পড়া এক বাড়ি থেকে অক্ষত মহিলাকে টেনে বের করছে। যেখানে অধিকাংশ ভবন কাঠ ও ইট মিশ্রণে নির্মিত। প্রায় ১৫০ জনের আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
এর আগে কর্তৃপক্ষ লুডিং কাউন্টিতে সাতজন এবং দক্ষিণে প্রতিবেশী শিমিয়ান কাউন্টিতে আরও ২৮ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছে। নিহতদের মধ্যে তিনজন হিমবাহ ও বন প্রকৃতির সংরক্ষিত হাইলুগোউ সিনিক এলাকার শ্রমিক।
সিসিটিভি জানিয়েছে, মৃত্যুর পাশাপাশি পাহাড়ের ধার থেকে পাথর ও মাটি পড়ছে যার ফলে ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত ও বিদ্যুৎ বিঘ্নিত হচ্ছে।
জরুরি ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, একটি ভূমিধ্বসের কারণে এক গ্রামীণ মহাসড়ক অবরুদ্ধ হয়েছে। যেখানে পাথর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে।
ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরে চেংডুতে ভবনগুলো কেঁপে ওঠে। সেখানকার বাসিন্দা জিয়াং ডানলি বলেছেন যে তিনি তার ৩২ তলার অ্যাপার্টমেন্টে পাঁচ মিনিটের জন্য একটি ডেস্কের নীচে লুকিয়ে ছিলেন। তার অনেক প্রতিবেশী ভূমিকম্প পরবর্তী অবস্থা থেকে সতর্ক হয়ে নিচে ছুটে আসে।
মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ ভূমির মোটামুটি ১০ কিলোমিটার গভীরে সৃষ্ট সোমবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ৬.৬ ধারণ করেছে।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে চীনের সবচেয়ে মারাত্মক ভূমিকম্প ছিল ২০০৮ সালে একটি সাত দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্প, যাতে সিচুয়ানে প্রায় ৯০ হাজার মানুষ মারা যায়। এর ফলে যা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল তা পুনরায় নির্মাণ করতে তাদের প্রায় বছর লেগে যায়।
আরও পড়ুন
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি-মুরগি-মাছ
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়