December 29, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, October 18th, 2022, 7:08 pm

নিজেই আত্মগোপনে ছিলেন রহিমা বেগম, আদালতে ছেলের জবানবন্দি

খুলনার রহিমা বেগমের বিরুদ্ধে অপহরণের নাটক সাজানো হয়েছে দাবি করে জবানবন্দি দিয়েছেন তার ছেলে মোহাম্মদ মিরাজ আল শাদী।

খুলনা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, সোমবার রহিমা বেগমের ছেলে কার্যালয়ে এসে স্বেচ্ছায় একটি জবানবন্দী দিতে চাইলেন। তিনি বলেন, তার মা যাদেরকে জড়িয়েছেন বা জমিজমা সংক্রান্ত যে বিরোধ মায়ের আত্মগোপনের পেছনে তাদের কোনো হাত নেই। তারা নির্দোষ। আমরা তখন তাকে বিজ্ঞ আদালতে পাঠিয়ে দেই। সংশ্লিষ্ট আদালতে তিনি জবানবন্দী দিয়েছেন।

সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, মিরাজ আমাদের জানিয়েছেন যে তার মা এর আগেও একাধিকবার আত্মগোপন করেছিলেন। পারিবারিক বিষয় নিয়ে তার বাবার সঙ্গে ঝগড়া করে। আর এবার জমিজমা সংক্রান্ত বিষয়ে বিরোধীদেরকে ফাঁসানোর জন্য।

মিরাজ বলেন, মায়ের আত্মগোপনের সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমি যখন মহেশ্বরপাশায় যেয়ে দেখি যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে তারা সবাই নিজ বাসায় আছেন। পরে তাদেরকে নিয়ে আমি আমার মাকে খুঁজি। এর মানে তিনি স্বেচ্ছায় গেছেন। তার জবানবন্দী আইনানুযায়ী আদালতে রেকর্ড হয়েছে।

পিবিআই পুলিশ সুপার বলেন, চলতি মাসে মামলার প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। কিছু প্রতিবেদনের অপেক্ষায় রয়েছি। যার মধ্যে নিখোঁজের আধাঘণ্টা আগে রহিমা বেগমের বিকাশে টাকা এসেছিল। এই টাকা কোথা থেকে এসেছিল আর কেনই এসেছিল, এসব বিষয় খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এ বিষয়ে মিরাজ বলেন, আমার সঙ্গে মায়ের কোনো যোগাযোগ নেই। পিবিআই প্রতিবেদন দেয়ার পরই তার সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করার আইনি প্রক্রিয়ায় যাবো।

রহিমা বেগমের মেয়ে মরিয়ম মান্নান বলেন, আমি ঢাকায় রয়েছি। ফের মা নিখোঁজের বিষয়ে কিছু জানি না। এ বিষয়ে আমার ভাই মিরাজ অথবা বোন আদুরীর সঙ্গে কথা বলতে পারেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ১০টার দিকে খুলনা মহানগরীর মহেশ্বরপাশার উত্তর বণিকপাড়ার নিজ বাসা থেকে টিউবওয়েলে পানি আনতে গিয়ে নিখোঁজ হন রহিমা বেগম। এরপর আর ঘরে ফেরেননি তিনি। স্বামী ও ভাড়াটিয়ারা নলকূপের পাশে ঝোপঝাড়ে তার ব্যবহৃত ওড়না, স্যান্ডেল ও বালতি দেখতে পান। সেই রাতে মাকে খুঁজতে আত্মীয়-স্বজন, আশপাশসহ সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন সন্তানরা।

রহিমার ছয় সন্তান কখনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, কখনো মাইকিং, কখনো আত্মীয়-স্বজনদের দ্বারস্থ হয়েছেন। সাংবাদিক সম্মেলন ও মানববন্ধনও করেছেন। পুলিশ জানায়, গত ২৭ আগস্ট নগরীর মহেশ্বরপাশা এলাকার বাড়ির সামনে থেকে রহিমা বেগম নিখোঁজ হন- এ অভিযোগ তুলে তার মেয়ে আদরী খাতুন বাদী হয়ে পরদিন দৌলতপুর থানায় অপহরণ মামলা দায়ের করেন।

পরে ২৪ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ১১টার দিকে ফরিদপুরের বোয়ালমারীর সৈয়দপুর গ্রামের কুদ্দুসের বাড়ি থেকে রহিমা বেগমকে উদ্ধার করা হয়। পুলিশের একটি টিম দিবাগত রাত ২টার দিকে তাকে নিয়ে দৌলতপুর থানায় পৌঁছায়। পরদিন বেলা ১১টার দিকে পুলিশ রহিমা বেগমকে পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করে। ২৫ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যা সোয়া ৭টার দিকে রহিমা বেগমকে (৫২) তার ছোট মেয়ে আদরী খাতুনের জিম্মায় দেন আদালত। রাতে খুলনা মহানগরীর বয়রা এলাকায় আদরীর বাসায় তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। ওইদিন সন্ধ্যা ৬টার দিকে খুলনা চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-২ এর বিচারক আল আমিনের কাছে জবানবন্দি দেন রহিমা বেগম।

—ইউএনবি