নিজস্ব প্রতিবেদক :
কঠোর বিধিনিষেধ শিথিলের প্রথম দিন বুধবার বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা তার চিরচেনা রূপে ফিরেছে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঢাকায় প্রায় সব কল-কারখানা, অফিস এবং শপিংমল খোলা হয়েছে।
সকাল থেকে গণপরিবহনও চলাচল শুরু হয়েছে। বেশ কয়েকটি সিটি বাসকে রাস্তায় চলাচল করতে দেখা গেছে, তবে সরকারের নতুন নির্দেশনা অনুযায়ী সড়কে অর্ধেক সংখ্যক বাস চলাচল করায় গণপরিবহন সংকটে পড়েছেন যাত্রীরা।
সকালের দিকে রাজধানীর কয়েকটি সড়কে যানজট দেখা গেছে। তবে আন্ত:জেলা বাসগুলো রাজধানীতে প্রবেশ বা প্রস্থান কিছুটা কম ছিল। এছাড়া ট্রেন এবং লঞ্চও ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে চলাচল শুরু করেছে।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (ট্রাফিক উত্তর) আবু রায়হান মোহাম্মদ সালেহ বলেন, ‘রাস্তায় যানবাহনের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় কিছু এলাকায় ট্রাফিক সিগন্যাল ছিল।’
তিনি বলেন, সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে রাজধানীর টেকনিক্যাল মোড়, মিরপুর, শ্যামলী, আসাদগেট, বনানী, আমতলী এবং মহাখালী এলাকায় যানজট লক্ষ করা গেছে।
এর আগে ৮ আগস্ট দেশের আর্থ-সামাজিক অবস্থা, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সচল রাখা এবং সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা নিয়ে চলমান কঠোর বিধিনিষেধ ১১ আগস্ট থেকে শিথিল করার সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছিল সরকার।
সেই দিন বিকালে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে।
এতে বলা হয়, গত ৩ আগস্ট অনুষ্ঠিত কোভিড-১৯ সংক্রমণের পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত আন্ত:মন্ত্রণালয় সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১১ আগস্ট থেকে বিধিনিষেধ শিথিল হবে।
সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি অফিস, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে খোলা থাকবে। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আদালতগুলোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা জারি করবে।
প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, সড়ক, রেল ও নৌ-পথে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন-যানবাহন চলাচল করতে পারবে। সড়কপথে গণপরিবহন চলাচলের ক্ষেত্রে স্থানীয় প্রশাসন (সিটি করপোরেশন এলাকায় বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা পর্যায়ে জেলা প্রশাসক) নিজ নিজ অধিক্ষেত্রের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, সংশ্লিষ্ট দফতর-সংস্থা, মালিক ও শ্রমিক সংগঠনের সাথে আলোচনা করে প্রতিদিন মোট পরিবহন সংখ্যার অর্ধেক চালু করতে পারবে।
শপিংমল, মার্কেট, দোকানপাট সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে খোলা রাখা যাবে। সব ধরনের শিল্প-কারখানা চালু থাকবে। খাবারের দোকান, হোটেল-রেস্তোরাঁয় অর্ধেক আসন খালি রেখে সকাল ৮টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত খোলা রাখা যাবে।
সবক্ষেত্রে মাস্ক পরিধান নিশ্চিত করতে হবে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রণীত স্বাস্থ্যবিধি যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
এতে বলা হয়, গণপরিবহন, বিভিন্ন দপ্তর, মার্কেট ও বাজারসহ যেকোনো প্রতিষ্ঠানে স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে অবহেলা পরিলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দায়িত্ব বহন করবে এবং তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সোমবার সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, মানুষের জীবন ও জীবিকার স্বার্থে কঠোর লকডাউন বিধিনিষেধ শিথিল করা হয়েছে, কিন্তু কোভিড পরিস্থিতি আরও খারাপ হলে পুনরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হতে পারে।
এর আগে করোনা নিয়ন্ত্রণে প্রথমে ২৩ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট এবং পরে ১০ আগস্ট রাত ১২টা পর্যন্ত বিধিনিষেধের সময়সীমা বৃদ্ধি করা হয়।
আরও পড়ুন
জামায়াতে আমিরের সঙ্গে একান্ত বৈঠক প্রধান উপদেষ্টার
১৫ জানুয়ারির মধ্যে ৫ সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদন পাওয়া যাবে
শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ জামায়াতে ইসলামী