অনলাইন ডেস্ক :
পাঁজরের চোটে সাকিব আল হাসানের প্রথম টেস্টে খেলা নিয়ে ছিল অনিশ্চয়তা। খানিক ঝুঁকি নিয়েই খেলেছেন চট্টগ্রামে। তবে তার অলরাউন্ড সত্ত্বার পুরোটা পায়নি বাংলাদেশ দল। ম্যাচের কাঁধের চোটে প্রথম দিনের পর আর বোলিং করতে পারেননি দলের অধিনায়ক। মিরপুর টেস্টে তার খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা কতটা কিংবা খেললেও বোলিং করতে পারবেন কিনা, কৌতূহল এখন এসব নিয়েই। রাসেল ডমিঙ্গো অবশ্য শুধু ব্যাটসম্যান সাকিবকে একাদশে পেতেও মরিয়া। তবে এতে দলের ভারসাম্যে যে ধাক্কা লাগবে, তা ভাবাচ্ছে বাংলাদেশের প্রধান কোচকে। সামনের ২-৩ দিন পর্যবেক্ষণ করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কথা বলেছেন তিনি। জহুর আহমেদ চৌধুরি স্টেডিয়ামে টেস্টের প্রথম দিন ভারতের প্রথম ইনিংসে তিন স্পেলে ১২ ওভার বোলিং করেছেন সাকিব। এরপর বাকি অংশে প্রায় পুরো সময় ফিল্ডিং করলেও আর হাত ঘোরাননি তিনি। স্পিন কোচ রঙ্গনা হেরাথ দ্বিতীয় দিন শেষে জানান, কাঁধের চোটের কারণে বোলিং থেকে বিরত ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। দ্বিতীয় ইনিংসে বোলিং করবেন বলে আশার কথাও শোনান হেরাথ। কিন্তু সাকিব আর বোলিং করেননি। ব্যাট হাতেও প্রথম ইনিংসে খানিক অস্বস্তি দেখা গেছে সাকিবের মাঝে। দ্বিতীয়বারে নেমে ম্যাচের শেষ দিন তিনিই দিয়েছেন খানিক উপভোগের খোরাক। ৪৯ মিনিটে দল অল আউট হওয়ার আগে এ দিন ৩ চার ও ৪টি ছক্কা মারেন তিনি। সবমিলিয়ে ৬টি করে চার-ছয়ের মারে করেন ৮৪ রান। এই ইনিংসের উদাহরণ তুলে ধরেই রাসেল ডমিঙ্গো বললেন, শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবে খেললেও সাকিব দলের জন্য হতে পারেন মূল্যবান “আমি এখনও শতভাগ নিশ্চিত নই সে (মিরপুর টেস্টে) বোলিং করতে পারবে কি না। তবে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলতে পারবে। এটি অবশ্যই আমাদের জন্য চিন্তার কারণ। কারণ সে একজন অলরাউন্ডার। আমাদের একজন অলরাউন্ডার প্রয়োজন। আমাদের আগামী ২-৩ দিন তাকে পর্যবেক্ষণ করতে হবে। এই মুহূর্তে সে ব্যাটসম্যান হিসেবে খেলার জন্য ফিট আছে।” “সে (সাকিব) দলের সেরা ব্যাটসম্যানদের একজন। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৮০ (৮৪) রান করেছে এবং সে দলের অধিনায়কও। অলরাউন্ডার হিসেবে জায়গা পেলে, বোলিং ভালো না করলেও ব্যাটিংয়ে পুষিয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকে। ব্যাটিংয়ে খারাপ করলে বোলিংয়েও সুযোগ থাকে। শুধু ব্যাটসম্যান হিসেবেও দলে থাকার যোগ্য সে।” সাকিব বোলিং করতে না পারায় প্রথম ইনিংসে ¯্রফে ৪ বোলার হয়ে যায় বাংলাদেশের। পরে ইবাদত হোসেনও পিঠের চোটে পড়লে আরও এক বোলার কমে স্বাগতিকদের। ইয়াসির আলি রাব্বি, নাজমুল হোসেন শান্ত, এমনকি লিটন দাসকেও দেখা যায় বোলিংয়ে। মিরপুর টেস্টে নামার আগে সাকিব বোলিংয়ের জন্য ফিট না হলে বাড়তি একজন বোলার নিতে হবে দলে। সেক্ষেত্রে কমাতে হবে একজন ব্যাটসম্যান। কিন্তু চলতি বছর তেমন ছন্দে নেই বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ। তাই দোটানায় পড়ে গেছেন বাংলাদেশের প্রধান কোচ। “সে শুধুমাত্র ব্যাটসম্যান হিসেবেও খেলতে পারে। অবশ্যই সে খুব বেশি বোলিং করেনি। কারণ এখনও কাঁধ ও আগের চোট নিয়ে ভুগছে। এটি আমাদের জন্য বড় ধাক্কা ছিল। কারণ আমরা ৪ বোলার হয়ে যাই। এরপর ইবাদতও ব্যথা পেলে আমাদের হাতে শুধু ৩ বোলার ছিল।” “এতে দলের ভারসাম্য ঠিক রাখা কঠিন হয়ে পড়ে। কারণ আমাদের ব্যাটিং অর্ডারের আত্মবিশ্বাস এখন খুব বেশি নয়। এ ছাড়া আমাদের বোলাররাও তেমন ব্যাটিং করতে পারে না। এখানে যদিও তাদের নেই। তারা তো ব্যাটিংয়ের জন্য আসেনি। তবে এ কারণে আমাদের শুধুমাত্র ৪ বোলার নিয়ে খেলতে হয়।” মিরপুর টেস্টে সাকিবের বোলিং পাওয়া না গেলে সেটি বড় ধাক্কাই হবে দলের জন্য। দেশের হোম অব ক্রিকেটে ১৯ টেস্টে ৮ বার ৫ উইকেটসহ মোট ৬৮ উইকেট নিয়েছেন সাকিব। গত মে মাসে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সবশেষ ম্যাচেও ৫ উইকেট পেয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন
টেস্ট ক্রিকেট: মরণদশা থেকে বাঁচানোর উপায় কী
একটা ধাক্কায় কোহলির ৪ লাখ টাকা জরিমানা
মাশরাফি–সাকিব কি খেলবেন বিপিএলে?