অনলাইন ডেস্ক :
পথটা দেখালেন টিম সাউদি। নিউ জিল্যান্ড অধিনায়কের মূল কাজ বোলিং। তবে সতীর্থদের ব্যর্থতার মিছিলে ব্যাট হাতেওজ্বলে উঠলেন এই পেসার। ৬ ছক্কার আক্রমণাত্মক ইনিংস খেলেও যদিও এড়াতে পারলেন না ফলো-অন। তবে লড়াইয়ের বিশ্বাসটা পেল তার দল। পথম ইনিংসের হতাশা পেছনে ফেলে ডেভন কনওয়ে ও টম ল্যাথাম গড়তে পারলেন দারুণ একটি উদ্বোধনী জুটি। ম্যাচের লাগাম যদিও এখনও ইংল্যান্ডের হাতেই। ইনিংস হারের শঙ্কা আপাতত নিউ জিল্যান্ডের নেই বললেই চলে। সিরিজে প্রথমবার টপ অর্ডারে লড়াইয়ের ছাপ রাখতে পেরেছে তারা। ওয়েলিংটন টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে দ্বিতীয় ইনিংসে নিউ জিল্যান্ডের রান ৩ উইকেটে ২০২। প্রথম ইনিংসে ২০৯ রানের গুটিয়ে ফলো-অনে পড়া দল এখন ৭ উইকেট হাতে নিয়ে পিছিয়ে আছে ২৬ রানে। প্রথম ইনিংসে ৯ নম্বরে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ ছক্কায় ৪৯ বলে ৭৩ রানের ইনিংস খেলে নিউ জিল্যান্ডকে দুইশ পার করার সাউদি। দ্বিতীয় ইনিংসে ১৪৯ রানের উদ্বোধনী জুটিতে লড়াইয়ের ভিত গড়ে দেন টম ল্যাথাম ও ডেভন কনওয়ে। ৭ উইকেটে ১৩৮ রান নিয়ে রোববার দিন শুরু করে নিউ জিল্যান্ড। আগের দিনই আগ্রাসী ব্যাটিং করা সাউদি তার সেই ধারা ধরে রাখেন এ দিনও। আরেকপাশে টম ব্লান্ডেল সঙ্গ দিয়ে যান। ৩৯ বলে সাউদি পা রাখেন টেস্ট ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটিতে। দল দুইশ পেরিয়ে যাওয়ার পর তাকে থামিয়েই ৯৮ রানের সপ্তম উইকেট জুটি ভাঙেন স্টুয়ার্ট ব্রড। ৫ চার ও ৬ ছক্কায় ৭৩ করে বিদায় নেন সাউদি। অভিষেক টেস্টে খেলা ৭৭ রানের ইনিংস রয়ে যায় তার সর্বোচ্চ। এই ইনিংসে ৬ ছক্কার পর সাউদি এখন টেস্টের সবচেয়ে বেশি ছক্কা মারা ১০ ব্যাটসম্যানের একজন। এই ইনিংসের পথে তিনি ছাড়িয়ে গেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (৭৮), কেভিন পিটারসেন (৮১) ও মিসবাহ-উল-হকের ছক্কা (৮১)। ৮২ ছক্কা নিয়ে সাউদি এখন অ্যান্ড্রু ফ্লিন্টফ ও ম্যাথু হেইডেনের পাশে। ব্রড এরপর দ্রুতই ব্লান্ডেল (৩৮) ও ম্যাট হেনরিকে (৬) ফিরিয়ে গুটিয়ে দেন নিউ জিল্যান্ডর ইনিংস। ৮ রানের মধ্যে পড়ে কিউইদের শেষ ৩ উইকেট। ২২৬ রানে এগিয়ে থাকা ইংল্যান্ড আবার ব্যাটিংয়ে পাঠায় নিউ জিল্যান্ডকে। এই সময়ের ক্রিকেটে এমন ব্যবধান নিয়ে ফলো-অন করানোর নজির যদিও খুবই কম। তবে এই ইংল্যান্ড দল তো অন্যরকম! ওয়েলিংটনের মেঘলা আকাশও হয়তো ভূমিকা রাখে ইংলিশদের সিদ্ধান্তে। তবে এবার সহায়ক কন্ডিশনেও সেভাবে জ¦লে উঠতে পারেননি জেমস অ্যান্পারসন, স্টুয়ার্ট ব্রডরা। ল্যাথাম ও কনওয়ের ব্যাটিং দৃঢ়তায় নিউ জিল্যান্ড পায় ভালো শুরু। শুরুতে সাবধানী ব্যাটিংয়ে দলকে এগিয়ে নেন দুজন। প্রথম ২২ ওভারে রান আসে কেবল ৪১, বাউন্ডারি ছিল ৩টি। এরপর দুজনেই সাবলিল ব্যাটিং করতে থাকেন। ল্যাথাম ছিলেন বেশি অগ্রণী। দেড়শর দুয়ারে গিয়ে এই জুটি ভাঙেন জ্যাক লিচ। তার টার্ন ও বাড়তি বাউন্সে শর্ট লেগে ধরা পড়েন কনওয়ে। বিদায় নেন তিনি ৬১ রান করে। একটু পরই নিউ জিল্যান্ডকে বড় ধাক্কা দেন জো রুট। অনিয়মিত এই অফ স্পিনারের জোরের ওপর করা বলে সুইপ করতে গিয়ে এলবিডব্লিউ হয়ে যান ল্যাথাম। দারুণ খেলতে থাকা ওপেনারের ইনিংস থামে ১১ চারে ১৭২ বলে ৮৩ রানে। লিচ এরপর দুর্দান্ত ডেলিভারিতে বোল্ড করে দেন উইল ইয়াংকেও। তবে কেন উইলিয়ামসন ও হেনরি নিকোলস মিলে আবার গড়ে তোলেন জুটি। এ দিন আর কোনা বিপদ হতে দেননি অভিজ্ঞ দুই ব্যাটসম্যান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৮৭.১ ওভারে ৪৩৫/৮ (ডি.)
নিউ জিল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৩.২ ওভারে ২০৯ (আগের দিন ১৩৮/৭) (ব্লান্ডেল ৩৮, সাউদি ৭৩, হেনরি ৬, ওয়্যাগনার ০*; অ্যান্ডারসন ১০-১-৩৭-৩, ব্রড ১৪.২-২-৬১-৪, রবিনসন ১২-৪-৩১-০, লিচ ১৭-১-৮০-৩)।
নিউ জিল্যান্ড ২য় ইনিংস (ফলো-অনের পর): ৮৩ ওভারে ২০২/৩ (ল্যাথাম ৮৩, কনওয়ে ৬১, উইলিয়ামসন ২৫*, ইয়াং ৮, নিকোলস ১৮*; অ্যান্ডারসন ১৫-৫-৩৮-০, রবিনসন ১৫-৩-৩৪-০, ব্রড ১১-২-৩৪-০, লিচ ৩১-৭-৫৯-২, রুট ৯-০-১৮-১, স্টোকস ২-০-১৬-০)।
আরও পড়ুন
তামিমের অর্ধশতকে দেড়শ’র আগেই থামল ঢাকা
সুপার ওভারে ইংল্যান্ডকে হারাল বাংলাদেশের মেয়েরা
ভক্তদের বড় সুখবর দিলেন বার্সেলোনা সভাপতি