October 11, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, April 7th, 2023, 8:51 pm

সিলেটের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধলাই ব্রীজ ধংসের পায়তারা

জেলা প্রতিনিধি, সিলেট :

সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার ‘ধলাই সেতু’ সিলেট বিভাগের দ্বিতীয় দীর্ঘতম সেতু। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের দৃষ্টিনন্দন সৌন্দর্য অবলোকন ও উৎমা ছড়া পর্যটন স্পটে যাতায়াতের একমাত্র পথ এ সেতু। কিন্তু বছরের পর বছর ধরে সেতুর পিলারঘেঁষে অবাধে বালি ও পাথর উত্তোলনের ফলে তীব্র ঝুঁকির মুখে পড়েছে সেতুটি।

অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় কতিপয় সাংবাদিক নামধারী চাঁদাবাজ ও প্রশাসনকে ম্যানেজ করে ধলাই সেতুর নিচ থেকে বালি ও পাথর উত্তোলন করে অসাধু চক্র। যে কারণে মাঝে-মধ্যে প্রশাসন ‘লোকদেখানো’ অভিযান দেওয়ায় চক্রটিকে ঠেকানো যাচ্ছে না। এদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না প্রশাসন।

স্থানীয়দের অভিযোগ- শীত আর বর্ষা, সব মৌসুমেই পিলারঘেঁষে চলে খোঁড়াখুঁড়ি। প্রশাসনকে ম্যানেজ করেই চলছে অবাধে বালি উত্তোলন। খনিজ সম্পদে ভরপুর জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা সদরের সঙ্গে ভারত সীমান্তঘেঁষা তিনটি ইউনিয়নের প্রায় অর্ধ লাখ মানুষের সড়ক যোগাযোগ স্থাপন করেছে ধলাই সেতু। সে সেতু এলাকা লক্ষ্য করে অবাধে বালি উত্তোলন করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। বিভিন্ন সময় অভিযান চালালেও পুনরায় প্রশাসনের নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সেতুর পিলারঘেঁষে বালি উত্তোলন শুরু করে খেকোরা।

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বললে অনেকেই জানান, ধলাই সেতু ও সেতু এলাকার কলাবাড়ী তীরসংলগ্ন এলাকা থেকে যারা পাথর উত্তোলন করে তারা স্থানীয় একজনের কাছে চাঁদা দিয়ে প্রশাসনকে ম্যানেজ করেন। ওই লোক মাসে কয়েক লক্ষ টাকা চাঁদা তুলে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে ম্যানেজ করেন।

স্থানীয় কয়েকজন শ্রমিক জানান- ওই লোক বছরদেড়েক ধরে সপ্তাহে বালুর ট্রাক্টর প্রতি ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা, ফেলোডার প্রতি ৫ হাজার টাকা, আর সেতুর নিচ থেকে সিঙ্গেল পাথরের প্রতি সাইট থেকে পাথর উত্তোলনের পরিমাণ অনুযায়ী ৩ থেকে ৮ হাজার পর্যন্ত চাঁদা সংগ্রহণ করেন। সবমিলিয়ে সপ্তাহে তিনি ৫০ থেকে ৬০ হাজার টাকা উত্তোলন করেন। এর ভাগ প্রশাসনকে দেওয়া হয়।

এসব টাকা উত্তোলনের কয়েকটি অডিও রেকর্ড এ প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত আছে।

এ বিষয়ে কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা লুসিকান্ত হাজং প্রতিবেদককে বলেন, ব্রিজের নিচ থেকে বালু ও পাথর উত্তোলনের খবর পেয়ে গতকাল অভিযান দিয়েছি। এতে এক ট্রাক মালিকের বিরুদ্ধে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা হয়েছে।
ইউএনও বলেন, যারা ইজারা বহির্ভূত বালু ও পাথর উত্তোলন করছে তাদের তালিকা করা হচ্ছে। ওসি সাহেবকে বলেছি তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা দায়েরের জন্যে। যারা চাঁদাবাজদের চাঁদা দিয়েছে তারা আমাকে তথ্য দিলে অপরাধী যেই হোক তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

তবে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে জেলা পুলিশ। সিলেট জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) শেখ মো. সেলিম বলেন, এ বিষয়ে খোঁজ নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।