জেলা প্রতিনিধি, মৌলভীবাজার:
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার পৃথিমপাশা ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী রবিরবাজারে কাঁচাবাজারের মধ্যে রয়েছে একটি সরকারি পুকুর। সেই পুকুরটি এখন ময়লার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে বাজারের সকল ময়লা-আবর্জনা স্তুপ করে ফেলা হচ্ছে এই পুকুরটিতে। পরিবেশ দিবস আসে পরিবেশ দিবস চলে যায় কিন্তু এই পুকুরের দিকে কেউ আর নজরদারি রাখেনা। অযত্নে আর অবহেলায় পুকুরটি এখন প্রাণহীন অবস্থায় রয়েছে।
সরেজমিন রবিরবাজার কাঁচাবাজার এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, রবিরবাজারের মধ্যবর্তী স্থানে ২৬ শতকের এই পুকুরটিতে শত বছর থেকে ব্যবসায়ীরা পানি ব্যবহার করতো। এই বাজারে ছোট বড় মিলে প্রায় দেড় হাজারের অধিক দোকানপাট রয়েছে। কিন্তু বর্তমানে বাজারের সেই পুকুরটিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কোন তদারকি না থাকায় সেটি ময়লা-আবর্জনার ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে চারিদিকে। দূষিত করছে আশপাশের পরিবেশ। এই পুকুরের তিনদিকে রয়েছে কাঁচাবাজারের সেড ঘর। সেখানে প্রতিদিন হাটবসে। ব্যবসায়ীরা হরেক রকমের সবজিসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস নিয়ে বসেন। আর পূর্ব দিকে রয়েছে সরকারি গরুর হাট। পুকুরের ঘাটও দখল করে দোকান বসানো হয়েছে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী মোঃ হিরা মিয়া, ইউসুফ আলী জানান, রবিরবাজারের কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ীরা পুকুরের পানি ব্যবহার করে গোসল, নামাজের ওযু, সবজি ধৌত করতেন। বর্তমানে এই পুকুরে কোন পানিই নেই আছে শুধু ময়লা আর আবর্জনা। এতে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে বাজারের চারিপাশে। বাজারের ভেতরে নির্দিষ্ট কোন ডাস্টবিন না থাকায় কতিপয় দুষ্ট লোক এই পুকুরে ময়লা ফেলে পুকুরটিকে ডাস্টবিনে পরিণত করেছেন।
রবিরবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মাসুক আহমদ বলেন, এটি সরকারি বাজারের পুকুর। বাজারে কোন অগ্নিকান্ড ঘটলে যে পুকুর থেকে পানি পাওয়া যেত সেটি এখন ময়লা-আবর্জনায় ভরে গেছে। পুকুরটি পরিস্কার করে পুরনো পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের কাছে বিষয়টি একাধিকবার তুলে ধরেছি। বাজারের ব্যবসায়ী ও মানুষের স্বার্থে অচিরেই যেন এই পুকুরটি পরিস্কার করা হয় সেজন্য প্রশাসনের নিকট আবেদন জানাচ্ছি।
স্থানীয় ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রকিব আহমদ বলেন, রবিরবাজার ভূমি অফিসের পাশ^বর্তী পুকুরে অনেক দিন ধরে ময়লা-আবর্জনা দেখে আসছি। এটি পরিস্কার করার জন্য সরকারি কোন বরাদ্দ নেই স্থানীয় ভূমি অফিসে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাহমুদুর রহমান খোন্দকার বলেন, বিষয়টি জেনেছি। সরেজমিন পুকুরটি পরিদর্শন করে একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এটি খনন করে পুনরায় আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়া হবে। যাতে করে পুকুরের সৌন্দর্য্য টিকে থাকে এবং আশপাশের লোকজন এই পুকুর থেকে তাদের প্রয়োজনে যেন পানি ব্যবহার করতে পারেন।
ছবি ক্যাপশন: কুলাউড়ার রবিরবাজারের সরকারি পুকুরটি এখন ময়লা-আবর্জনার স্তুপে ডাস্টবিনে পরিণত হয়েছে।
আরও পড়ুন
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়
অগ্নিকান্ডে মিঠাপুকুরের নয়ন একমাত্র উপার্জনকারীর মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার
সাবেক মন্ত্রী কায়কোবাদের সঙ্গে তুর্কী এমপির সাক্ষাৎ