October 6, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Friday, July 28th, 2023, 8:45 pm

তিনশর আগেই শেষ ইংল্যান্ড

অনলাইন ডেস্ক :

প্রথম ধসের ধাক্কা সইয়ে বড় সংগ্রহের আশা জাগিয়েছিল ইংল্যান্ড। কিন্তু, মিচেল স্টার্কের দারুণ বোলিংয়ে দ্বিতীয়বার যে ধস নামল, তাতে আর বাঁধ দিতে পারল না কেউ। স্বাগতিকদের প্রথম ইনিংস গুটিয়ে গেল চা-বিরতির পরপরই। দিনের বাকি সময়টায় দারুণ দৃঢ়তা দেখাল অস্ট্রেলিয়ার টপ অর্ডার। অধিনায়কের অনুরোধে অবসর ভেঙে ফেরা মইন আলির বিদায় দিয়ে দ্বিতীয় দফায় ধস নামে ইংল্যান্ডের ইনিংসে। এক সময়ে ৩ উইকেটে ১৮৪ রানের দৃঢ় অবস্থানে থাকা দলটি গুটিয়ে যায় ২৮৩ রানে। সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থাকা অস্ট্রেলিয়া পাঁচটি ক্যাচ হাতছাড়া না করলে ইংলিশদের অবস্থা হতে পারত আরও সঙ্গীন। অ্যাশেজের পঞ্চম টেস্টের প্রথম দিনের খেলা শেষে সফরকারীদের সংগ্রহ ১ উইকেটে ৬১।

৪টি চারে ৭৫ বলে ২৬ রানে খেলছেন উসমান খাওয়াজা। তার সঙ্গী মার্নাস লাবুশেন ২ রান করতে খেলেছেন ২৩ বল। ৯ উইকেট হাতে নিয়ে দিন শেষে ২২২ রানে পিছিয়ে অস্ট্রেলিয়া। সিরিজ হার এড়ানোর লড়াইয়ে প্রথম দিনে আরেকটি বড় ধাক্কা খেয়েছে ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ের সময় কুঁচকিতে চোট পান মইন। নিজের সম্ভাব্য শেষ টেস্ট খেলতে নামা অভিজ্ঞ এই অফ স্পিনিং অলরাউন্ডার শেষ সেশনে ফিল্ডিং করেননি। বোলিংয়ে তার অনুপস্থিতি দলটির জন্য হতে পারে দুর্ভাবনার কারণ। ব্রেন্ডন ম্যাককালামের কোচিংয়ে ও বেন স্টোকসের নেতৃত্বে প্রিয় হয়ে ওঠা কৌশলেই প্রায় পুরোটা সময় ব্যাটিং করেছে ইংল্যান্ড। তারা রান তুলেছে ৫.১৭ ওভারপ্রতি।

গত বছরের জুন থেকে টেস্টে মোট ৫০ বা এর বেশি ওভারে পাঁচের বেশি রান তোলার নজির হলো ১৩টি, এর ১২টি ইংল্যান্ডের! অন্যটি বাংলাদেশ। দা ওভালে বৃহস্পতিবার টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ইংল্যান্ড শুরুটা করে শান্তভাবে। প্রথম ওভার মেডেন দেন জ্যাক ক্রলি। এদিন তিনি অবশ্য নিজেকে কিছুটা গুটিয়েই রেখেছিলেন। তবে অন্য প্রান্তে বেন ডাকেট ছিলেন আগ্রাসী। অতিরিক্ত শট খেলার প্রবণতা থেকেই ব্যক্তিগত ৩০ রানে দেন সুযোগ। প্যাট কামিন্সের বলে স্লিপে সেই ক্যাচ যদিও নিতে পারেননি ডেভিড ওয়ার্নার। জীবন পান ক্রলিও; ১১ রানে মিচেল মার্শের বলে দ্বিতীয় স্লিপে ক্যাচ নিতে পারেননি স্টিভেন স্মিথ। স্বাগতিকদের দুই ওপেনারের কেউই অবশ্য সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি। মার্শের লেগ স্টাম্পের বাইরের বলে খোঁচা মেরে অ্যালেক্স কেয়ারির গ্লাভসে ধরা পড়েন ডাকেট। ভাঙে ৬২ রানের উদ্বোধনী জুটি।

পরের ওভারে কামিন্সের বলে স্মিথকে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান ক্রলি। চার দিয়ে রানের খাতা খোলা জো রুট ফেরেন দ্রুত। বিনা উইকেটে ৬২ রান থেকে ৭৩ রানের  মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে চাপ পড়ে যায় ইংল্যান্ড। পরিস্থিতি হতে পারতে আরও খারাপ। রুটের মতো ৫ রানে ফিরতে পারতেন হ্যারি ব্রুকও। কিন্তু কামিন্সের বলে ক্যাচ গ্লাভসে নিতে পারেননি কেয়ারি। জীবন পেয়ে আগ্রাসী ব্যাটিং করেন ব্রুক। ৪৪ বলে স্পর্শ করেন পঞ্চাশ। শুরুতে একটু সময় নেন তিনে নামা মইন। প্রথম ৩৭ বলে করেন ১১ রান। লাঞ্চের পর সিঙ্গেল নেওয়ার সময় চোট পান কুঁচকিতে। চিকিৎসা নিয়ে, ওষুধ খেয়ে খেলা চালিয়ে যান। পাল্টা আক্রমণে পরের ৯ বলে করেন ২৩ রান। ৫৭ বলে পঞ্চাশ স্পর্শ করে জুটির রান, একশ আসে ১০২ বলে। এরপর তারা যেতে পারেনি বেশিদূর। মার্ফির বলের লাইন মিস করে মইন বোল্ড হলে ভাঙে ১০৮ বল স্থায়ী ১১১ রানের জুটি। বেন স্টোকস (৩), জনি বেয়ারস্টোর (৪) দ্রুত বিদায়ের পর ব্রুকও ফিরে গেলে বিপদে পড়ে যায় ইংল্যান্ড। মিচেল স্টার্কের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে ব্যাট চালিয়ে দিয়ে দ্বিতীয় স্লিপে ধরা পড়েন এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান।

৯১ বলে ১১ চার ও দুই ছক্কায় ব্রুক করেন ৮৫ রান। দ্রুত ৪ উইকেট হারানো ইংল্যান্ড প্রতিরোধ গড়ে উড ও ওকসের জুটিতে। উডকে বোল্ড করে বিরক্ত করা ৪৯ রানের জুটি ভাঙেন মার্ফি। এরপর আর বেশিদূর এগোয়নি ইংল্যান্ডের ইনিংস। ছক্কার চেষ্টায় ওকস সীমানায় ক্যাচ দিলে তিনশ রানের নিচেই থেমে যায় ইংল্যান্ডের প্রথম ইনিংস। দুবার ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যাওয়া ওকস ৩৬ বলে চারটি চার ও এক ছক্কায় করেন ৩৬ রান।

৮২ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার স্টার্ক। দুটি করে উইকেট নেন মার্ফি ও জশ হেইজেলউড। ইংল্যান্ডের ঠিক বিপরীত ব্যাটিংয়ে জবাব দিচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। নিচ্ছে না তেমন কোনো ঝুঁকি, রান রেট আড়াইয়ের নিচে, এ নিয়ে কোনো ভাবনা নেই তাদের। খাওয়াজা ও ডেভিড ওয়ার্নার সাবধানী শুরুর পর বাজে বলে কিছু বাউন্ডারি মেরে চাপ সরিয়ে নেন। মনে হচ্ছিল, এই জুটিতেই দিন পার করে দেবে সফরকারীরা। কিন্তু আরও একবার ভালো শুরুটা বড় করতে ব্যর্থ ওয়ার্নার। ওকসের বেশ বাইরের বলে চালিয়ে তিনি তিনি ধরা পড়েন ক্রলির হাতে। ভাঙে ৪৯ রানের শুরুর জুটি। দিনের বাকি সময়ে আর কোনো ক্ষতি হতে দেননি খাওয়াজা ও লাবুশেন। তাদের জুটিতে ১২ রান এসেছে ৪৯ বলে। এই টেস্টে বল করবেন না ইংলিশ অধিনায়ক বেন স্টোকস। চোটের জন্য মইনের বোলিং নিয়েও অনিশ্চয়তা জাগায় কঠিন চ্যালেঞ্জই অপেক্ষা করছে ইংল্যান্ডের সামনে।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস: ৫৪.৪ ওভারে ২৮৩ (ক্রলি ২২, ডাকেট ৪১, মইন ৩৪. রুট ৫, ব্রুক ৮৫, স্টোকস ৩, বেয়ারস্টো ৪, ওকস ৩৬, উড ২৮, ব্রড ৭, অ্যান্ডারসন ০*, স্টার্ক ১৪.৪-১-৮২-৪, হেইজেলউড ১৩-০-৫৪-২, কামিন্স ১৩-২-৬৬-১, মার্শ ৮-০-৪৩-১, মার্ফি ৬-০-২২-২)
অস্ট্রেলিয়া ১ম ইনিংস: ২৫ ওভারে ৬১/১ (খাওয়াজা ২৬*, ওয়ার্ন ২৪, লাবুশেন ২*; ব্রড ৮-২-১৩-০, অ্যান্ডারসন ৭-২-২১-০, উড ৫-১-১০-০, ওকস ৫-৩-৮-১)