পাকিতানের বেলুচিস্তানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের নবী মুহাম্মদের (সা.) জন্মদিন উদযাপনের একটি সমাবেশে শক্তিশালী বোমা বিস্ফোরণে কমপক্ষে ২১ জন নিহত হয়েছেন। একই সঙ্গে ৫০ জনেরও বেশি আহত হয়েছে।
শুক্রবার (২৯ সেপ্টেম্বর) দেশটির পুলিশ ও একজন সরকারি কর্মকর্তা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সরকারি প্রশাসক আতা উল্লাহ জানান, দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেলুচিস্তান প্রদেশের মাস্তুং জেলায় একটি মসজিদের কাছে এই বোমা হামলা করা হয়েছে। আহতদের নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে কয়েকজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
আতা উল্লাহ বলেন, নিহতদের মধ্যে একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা মোহাম্মদ নওয়াজও রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, বোমা বিস্ফোরণটি আত্মঘাতী হামলা কি না তা নিশ্চিত করতে কর্মকর্তারা তদন্ত করছেন।
পাকিস্তান ও সারা বিশ্বের মুসলমানরা জনসমাবেশের মাধ্যমে ইসলামের নবী মুহাম্মদের (সা.) জন্মদিন উদযাপন করে। নবীর জন্মবার্ষিকী ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী নামে পরিচিত। এই দিন মুসলমানরা মানুষকে বিনামূল্যে খাবার বিতরণ করে।
নবীর জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে জঙ্গিরা হামলা চালাতে পারে বলে কর্তৃপক্ষ পুলিশকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকতে বলেছিল। তার কয়েক দিন পরই শুক্রবারের বোমা হামলার ঘটনা ঘটল।
এক বিবৃতিতে দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সরফরাজ বাগতি বোমা হামলার নিন্দা করেছেন এবং প্রাণহানির জন্য দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেছেন।
তিনি বলেন, মিলাদুন্নবীর মিছিলে লোকজনকে টার্গেট করা একটি ‘জঘন্য কাজ’।
পাকিস্তানের সরকার নবী মুহাম্মদের (সা.) জন্মবার্ষিকীর দিনটিতে জাতীয় ছুটি ঘোষণা করেছিল।
রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভি ও তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী আনোয়ারুল-হক-কাকার পৃথক ম্যাসেজে জনগণকে একতা এবং ইসলামের নবীর শিক্ষা মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
তাৎক্ষণিকভাবে কেউ শুক্রবারের বোমা হামলার জন্য দায় স্বীকার করেনি। তবে এই হামলায় পাকিস্তানি তালেবানদের সম্পৃক্ত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তেহরিক-ই-তালেবান পাকিস্তান (টিটিপি) মূল তালেবানের থেকে একটি পৃথক গোষ্ঠী। কিন্তু তারা আফগান তালেবানের ঘনিষ্ঠ মিত্র।
২০ বছর যুদ্ধের পর ২০২১ সালের আগস্টে মার্কিন ও ন্যাটো সৈন্যরা প্রতিবেশী আফগানিস্তান থেকে সৈন্য প্রত্যাহারের পর তালেবান দেশটির ক্ষমতা দখল করে।
এ ছাড়া, এর আগে বেলুচিস্তান এবং অন্যান্য জায়গায় বেশ কয়েকটি প্রাণঘাতী হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (ইউএস) গ্রুপ।
আফগানিস্তান ও ইরানের সীমান্তে গ্যাস সমৃদ্ধ দক্ষিণ-পশ্চিম বেলুচিস্তান প্রদেশটি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বেলুচ জাতীয়তাবাদীদের নিম্ন-স্তরের বিদ্রোহের স্থান।
বেলুচ জাতীয়তাবাদীরা প্রথমে প্রাদেশিক সম্পদের একটি অংশ চেয়েছিল, কিন্তু পরে তারা স্বাধীনতার আহ্বান জানিয়ে বিদ্রোহ শুরু করে।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
বাড়তি দামে বিক্রি হচ্ছে খাসি-মুরগি-মাছ
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
সাংবাদিকদের সাথে রংপুর পুলিশ সুপারের মতবিনিময়