অনলাইন ডেস্ক :
নিখাদ অলরাউন্ডার বলতে যা বোঝায় তার সবচেয়ে উজ্জ্বল বিজ্ঞাপন সাকিব আল হাসান। ব্যাট কিংবা বল হাতে তার নৈপুণ্য মাঠে কতটা প্রভাব ফেলে সেটা বাংলাদেশ ভালো করেই জানে। ঠিক যেমন গতবার টের পেয়েছে ইংল্যান্ড দল। ইংলিশরা প্রথমবার শিরোপা ঘরে তুলেছে অলরাউন্ডার বেন স্টোকসের ব্যাটিং বীরত্বে। ফলে ফর্ম বিবেচনায় এবারের বিশ্বকাপটা হয়ে উঠতে পারে অলরাউন্ডারদের। বিশ্বকাপ শুরুর একদিন আগে দেখে তেমন পাঁচ অলরাউন্ডারকে একটু দেখে নেওয়া যাক-
সাকিব আল হাসান (বাংলাদেশ)
৩৬ বছর বয়সী সাকিব আল হাসান বর্তমান দলটির অভিজ্ঞদের একজন। আইসিসির ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি র্যা ঙ্কিংয়ে অলরাউন্ডারের শীর্ষ আসনটা দখলে রেখেছেন অনেক দিন। সেই ২০০৭ বিশ্বকাপে অভিষেকের পর থেকে প্রতিটি আসরে প্রভাব রাখার চেষ্টা করেছেন। গত আসরে তো নিজেকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তিনি। গ্রুপ পর্বে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের রেকর্ডটা তারই দখলে। ৮ ম্যাচে সংগ্রহ ৬০৬। তাছাড়া বল হাতেও নিয়েছেন ১১ উইকেট। তবে সবচেয়ে যে বিষয়টাতে তিনি পারদর্শী সেটা হলো দলের প্রয়োজনের মুহূর্তে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়ার সামর্থ্য। ফলে এই টুর্নামেন্টে সাকিবের ওপর নির্ভর করবে অনেক কিছু।
হার্দিক পান্ডিয়া (ভারত)
হার্দিক পান্ডিয়ার আক্রমণাত্মক ব্যাটিংয়ের প্রভাব কতটা তাতো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগেই দেখা গেছে। ২৯ বছর বয়সী এই অলরাউন্ডারের নেতৃত্বে শিরোপা ঘরে তুলেছে গুজরাট টাইটান্স। খেলেছে টানা দুই ফাইনালে! তবে পিঠের ইনজুরি তার ক্যারিয়ারকে ভালোভাবেই বাধাগ্রস্ত করেছে। এ ছাড়া ব্যাট-বল হাতে সব সময়ই ধারাবাহিক ও আস্থা রাখার মতো পারফর্মার। দলের প্রয়োজনের সময় স্নায়ুক্ষয়ী মুহূর্তে সব সময় শান্ত থেকে নিজের উপস্থিতির জানান দিয়েছেন। পান্ডিয়া সাধারণত মিডল অর্ডারে ব্যাট করেন। কিন্তু রানের গতি বাড়াতে প্রমোশন পেয়ে কিংবা বিপদের সময় মূল ভরসা হয়ে ওঠার মতো ক্ষমতা রাখেন তিনি। বল হাতেও মাঝামাঝি সময়ে দলের প্রয়োজনে হয়ে উঠেন উইকেট শিকারি। ফলে ঘরের মাঠের টুর্নামেন্টে তার দিকে তাকিয়ে থাকবে ভারতীয়রা।
মিচেল মার্শ (অস্ট্রেলিয়া)
অলরাউন্ডার মার্শ মূলত মিডল অর্ডার ফিনিশার। কিন্তু ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষ সিরিজে ডি ফ্যাক্টো ওপেনার ছিলেন তিনি! সঙ্গী ছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। মূলত ট্রাভিস হেড ইনজুরিতে থাকায় কার্যত এমন কৌশল নিয়েছে অজি ম্যানেজমেন্ট। তাতে এই অলরাউন্ডার কতটা বিস্ফোরক সেটা তো ভারতের বিপক্ষে সিরিজেই দেখা গেছে। ফলে অজি দলটায় তিনি কতটা প্রভাব রাখতে পারেন, সেটার প্রদর্শনী একভাবে হয়েই গেছে। এই বছর ভারতের মাটিতে ৫ ওয়ানডেতে তার ব্যাটিংয়ে গড় ছিল ৭৫ এর কাছাকাছি। ভারতের বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিততে কেন্দ্রীয় ভূমিকা ছিল তার। ১৯৪ রান করে প্লেয়ার অব দ্য সিরিজ ছিলেন তিনি।
রশিদ খান (আফগানিস্তান)
দলগত ব্যর্থতা থাকলেও সেটি ছাপিয়ে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানের পোস্টার বয় রশিদ খান। বল হাতে গুগলি দিয়ে ব্যাটারকে ধোঁকা দিতে কিংবা লোয়ার অর্ডারে ভালো স্ট্রাইক রেটে দর্শক মাতিয়ে রাখার ক্ষেত্রে তার জুড়ি নেই। ১৩৯টি আইপিএল উইকেট নেওয়ায় ভারতের কন্ডিশনটা ভালো করেই তার নখ দর্পণে। ফলে ভারতের মাটিতে রশিদ খান হয়ে উঠতে পারেন ভয়ঙ্কর। ২০২৩ মৌসুমে বল হাতে ২৭ উইকেট শিকার করেছেন। তাছাড়া ২০১৭ সালে আইপিএল অভিষেকের পর তার মতো এত বেশি উইকেট (১৩৯) শিকার করেনি আর কেউই। বল হাতে প্রয়োজনের সময় তার উইকেট শিকারি দক্ষতাও ম্যাচে প্রভাব রাখে ভীষণভাবে। যার ৭৯ ওয়ানডেতে শিকার ৫৪ উইকেট।
বেন স্টোকস (ইংল্যান্ড)
ইংল্যান্ডের ২০১৯ বিশ্বকাপ জয়ে বেন স্টোকসের ব্যাটিং বীরত্ব ইতিহাসের অংশ হয়ে আছে। আরেকটি আসর সামনে দেখে অবসর ভেঙে ফিরেছেন তিনি। এই সংস্করণে নিজের প্রয়োজনীয়তা কতটুকু, সেটা এরইমধ্যে দেখিয়েছেন। সেপ্টেম্বরে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ইংলিশদের হয়ে এই ফরম্যাটে সর্বোচ্চ রানের ইনিংস উপহার দিয়েছেন তিনি। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ১২৪ বলে উপহার দিয়েছেন ১৮২ রান। তাছাড়া আরেকটি তথ্যও তার এক্সফ্যাক্টর হওয়ার জন্য যথেষ্ট। ২০১৫ সালের পর থেকে ৩৪ ওয়ানডেতে যে কয়টি রানচেজে ব্যাট করেছেন। সেখানে অপরাজিত ছিলেন ১৩টি ম্যাচে।
আরও পড়ুন
একটা ধাক্কায় কোহলির ৪ লাখ টাকা জরিমানা
মাশরাফি–সাকিব কি খেলবেন বিপিএলে?
মিমো-নিলয়দের প্যাডসর্বস্ব দল হারালো বিমানবাহিনীকে