অনলাইন ডেস্ক :
পৌনে দুইশ রানের লক্ষ্য তাড়ায় প্রথম ওভারেই বিদায় নিলেন ফিন অ্যালেন। শুরুর সেই ধাক্কা আর সামলে উঠতে পারল না নিউ জিল্যান্ড। বেশিরভাগ ব্যাটসম্যান যোগ দিলেন আসা-যাওয়ার মিছিলে। জশ হেইজেলউড, অ্যাডাম জ্যাম্পাদের অসাধারণ বোলিংয়ে অনায়াসে জিতল অস্ট্রেলিয়া। প্রথম টি-টোয়েন্টিতে শেষ বলে ম্যাচের ফয়সালা হওয়ার পর দ্বিতীয় ম্যাচে লড়াই জমলই না। ৭২ রানের বড় জয়ে এক ম্যাচ হাতে রেখে সিরিজ জিতে নিল অস্ট্রেলিয়া। অকল্যান্ডে শুক্রবার এই ম্যাচে পাওয়ার প্লেতে স্রেফ ১ উইকেট হারিয়ে ৭৪ রান তুলেও অস্ট্রেলিয়া ১৭৪ রানে অল আউট হয় এক বল বাকি থাকতে। ৮৯ রানে শেষ ৯ উইকেট হারায় তারা। বোলারদের নৈপুণ্যে সেই পুঁজিই জয়ের জন্য যথেষ্ট হয় তাদের। শুরু থেকে নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে তিন ওভার বাকি থাকতে ১০২ রানে গুটিয়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। ৩৪ রানে ৪ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার সফলতম বোলার লেগ স্পিনার জ্যাম্পা। স্রেফ ১২ রানে একটি উইকেট নেন পেসার হেইজেলউড। ২৪ বলের ১৭টিই ‘ডট’ খেলান তিনি। ম্যাচের সেরা অবশ্য তাদের কেউ নন।
ব্যাট হাতে ২২ বলে ৫ চারে ২৮ রানের ক্যামিও ইনিংসের পর হাত ঘুরিয়ে ১৯ রানে একটি উইকেট নিয়ে পুরস্কারটি জেতেন পেসার প্যাট কামিন্স। অস্ট্রেলিয়ার ইনিংসে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন ট্রাসিভ হেড। এই ওপেনারের ২২ বলের ইনিংসে ৫টি ছক্কার পাশে চার ২টি। নিউ জিল্যান্ডের গ্লেন ফিলিপস (৩৫ বলে ৪২) ছাড়া আর কেউ বিশ পর্যন্তও যেতে পারেননি। ম্যাচের শুরুর দিকে কিপিংয়ের সময় বাম হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলে চোট পেয়ে মাঠ ছেড়ে যাওয়া ডেভন কনওয়ে নামতে পারেননি ব্যাটিংয়ে। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে উড়ন্ত সূচনা পায় অস্ট্রেলিয়া। গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর প্রথমবার নিউ জিল্যান্ডের হয়ে খেলতে নামা বাঁহাতি পেসার ট্রেন্ট বোল্টের করা ম্যাচের প্রথম ওভারে ২ ছক্কা ও একটি চার মারেন হেড।
এই ওভারে আসে মোট ২০ রান। প্রথম ম্যাচে বাইরে থাকার পর সুযোগ পাওয়া স্টিভেন স্মিথ দ্বিতীয় ওভারে অ্যাডাম মিল্নকে কাট করে চার মারার পর স্কুপ করে হাঁকান ছক্কা। তবে ইনিংস বড় করতে পারেননি তিনি (৭ বলে ১১)। দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ২৭ বলে ৫৩ রান যোগ করেন হেড ও মার্শ। ফিফটির সম্ভাবনা জাগিয়ে ৫ রান বাকি থাকতে বোল্ড হয়ে যান হেড। ম্যাক্সওয়েল বিদায় নেন একটি ছক্কা মেরে। এতেই একটি রেকর্ড হয়ে যার তার। অ্যারন ফিঞ্চকে (১২৫) পেছনে ফেলে অস্ট্রেলিয়ার হয়ে এই সংস্করণে সবচেয়ে বেশি ছক্কার রেকর্ড এখন এককভাবে ম্যাক্সওয়েলের (১২৬)। পরের ওভারে মার্শ ফেরেন ২১ বলে ২৬ রান করে।
এরপর দ্রুত আরও কয়েকটি উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। জশ ইংলিস ও ম্যাথু ওয়েড টিকতে পারেননি। আগের ম্যাচের নায়ক টিম ডেভিড এবার ১৯ বলে করেন ১৭। আট নম্বরে নেমে কামিন্সের ২২ বলে ২৮ রানের ক্যামিওতে কোনোমতে ১৭০ ছাড়াতে পারে সফরকারীরা। কনওয়েকে ম্যাচের শুরুতে হারানো নিউ জিল্যান্ড এ দিন চোটের কারণে পায়নি প্রথম ম্যাচে ফিফটি করা আরেক ব্যাটসম্যান রাচিন রবীন্দ্রকেও। রান তাড়ায় প্রথম ওভারে হেইজেলউডকে একটি ছক্কা মারার পর অনেক বাইরের বল স্টাম্পে টেনে আনেন অ্যালেন। আরেক ওপেনার উইল ইয়াংকে টিকতে দেননি কামিন্স। মিচেল স্টার্কের বিশ্রামে সুযোগ পাওয়া এলিস আক্রমণে এসেই ফিরিয়ে দেন তিনে নামা স্যান্টনারকে। মার্শের শিকার মার্ক চ্যাপম্যান। ২৯ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়ে যায় নিউ জিল্যান্ড। হেইজেলউড প্রথম স্পেলে তিন ওভারে ১৮ বলের ১৫টিই খেলান ডট। পঞ্চম উইকেটে জশ ক্লার্কসনের সঙ্গে ৩২ বলে ৪৫ রানের জুটিতে দলকে কিছুটা টেনে তোলেন ফিলিপস। কিন্তু এ জুটি ভাঙার পর আর বেশিক্ষণ টিকতে পারেনি তারা। জ্যাম্পা নিজের দ্বিতীয় ওভারে পরপর দুই বলে বোল্ড করে দেন ক্লার্কসন ও মিল্নকে। পরের ওভারে এসে ফিলিপকেও থামান তিনি। কোটার শেষ ওভারে বোল্ডকে ফিরিয়ে ধরেন চতুর্থ শিকার। ফার্গুসনকে বোল্ড করে ম্যাচের ইতি টেনে দেন এলিস। আগামী রোববার একই মাঠে শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের সামনে হোয়াইটওয়াশ এড়ানোর চ্যালেঞ্জ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
অস্ট্রেলিয়া: ১৯.৫ ওভারে ১৭৪ (হেড ৪৫, স্মিথ ১১, মার্শ ২৬, ম্যাক্সওয়েল ৬, ইংলিস ৫, ডেভিড ১৭, ওয়েড ১, কামিন্স ২৮, এলিস ১১, জ্যাম্পা ১, হেইজেলউড ০; বোল্ট ৪-০-৪৯-০, মিল্ন ৪-০-৪০-২, ফার্গুসন ৩.৫-০-১২-৪, সিয়ার্স ৪-০-২৯-২, স্যান্টনার ৪-০-৩৫-২)
নিউ জিল্যান্ড: ১৭ ওভারে ১০২ (অ্যালেন ৬, ইয়াং ৫, স্যান্টনার ৭, ফিলিপস ৪২, চ্যাপম্যান ২, ক্লার্কসন ১০, মিল্ন ০, বোল্ট ১৬, ফার্গুসন ৪, সিয়ার্স ২*, কনওয়ে আহত অনুপস্থিত; হেইজেলউড ৪-১-১২-১, কামিন্স ৩-০-১৯-১, এলিস ৩-০-১৬-২, মার্শ ৩-০-১৮-১, জ্যাম্পা ৪-০-৩৪-৪)
ফল: অস্ট্রেলিয়া ৭২ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজে ২-০তে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়া
ম্যান অব দা ম্যাচ: প্যাট কামিন্স
আরও পড়ুন
কার দিকে, কেন তেড়ে গিয়েছিলেন তামিম
শেষ ওভারে ৩ ছক্কা ৩ চার, ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন নুরুল
মোহামেডানকে হারালো আবাহনী দুই বছর পর