মুরাদনগর(কুমিল্লা) প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লার–মিরপুর সড়কের যানবাহনে চালকদের ভাড়া নৈরাজ্য দিন দিন ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। সড়কটিতে অতিরিক্ত ভাঙ্গাচুর থাকা অবস্থায় ভাড়া বৃদ্ধির প্রবণতা এখন আরো ভয়াবহ রূপ ধারণ করছে। সন্ধ্যা হলে কুমিল্লা থেকে ভাড়া বেড়ে যায় দুই থেকে তিন গুণ। এতে চালকদের সাথে কেউ প্রতিবাদ করলে যাত্রীদের বিভিন্ন ধরনের অপমানসূচক কথা ও হয়রানি শিকার হতে হয়। এতে বেশি ভোগান্তিতে পড়েন নারী যাত্রীরা।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ব্রাহ্মণপাড়া–কুমিল্লা সড়কে নির্ধারিত ভাড়া ৫০ টাকা হলেও যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত। সন্ধ্যার পর কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণপাড়া গামী সিএনজি ভাড়া অলিখিতভাবে ১০০ টাকা থেকে ১৫০ টাকা পর্যন্ত আদায় করে নিচ্ছে অসাধু চালকরা। একইভাবে ব্রাহ্মণপাড়া–মিরপুর সড়কে নির্ধারিত ৪০ টাকার ভাড়া আদায় করা হচ্ছে ৫০ থেকে ৬০ টাকা।
বুড়িচং,ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার বিভিন্ন সড়কে জিপি বন্ধের সুবিধা থাকলেও সিএনজি ও অটোরিকশা চালকরা ভাড়া নৈরাজ্য অব্যাহত রেখেছে। এতে সাধারণ যাত্রী ও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নিয়মিত কুমিল্লা থেকে ব্রাহ্মণপাড়ায় অফিস করা একজন যাত্রী বলেন,
আগে যেখানে কুমিল্লা – ব্রাহ্মণপাড়ায় আসা যাওয়ায় ৫০ টাকা করে ১০০ টাকায় ভাড়া দিতে হতো। এখন তা ২০০ টাকা দিতে হয়। কিন্তু আমাদের বেতন তো আর বাড়ে নাই।
ব্রাহ্মণপাড়া থেকে কুমিল্লাগামী যাত্রী শারমিন আক্তার বলেন, এখন সকাল ১১ টা, সিএনজি চালক ভাড়া ১০০ টাকা চাইছে। চালকরা সবাই একজোট হয়ে বলছে, এ টাকায় গেলে যান না গেলে অন্য ব্যবস্থা করেন। কি করবো বাধ্য হয়ে যেতে হবে।
ব্রাহ্মণপাড়া–কুমিল্লাগামী সিএনজি চালক মিজানুর রহমান বলেন, সড়ক ভাঙাচোরা হওয়ায় সময় বেশি লাগে। গাড়ির যন্ত্রাংশসহ অন্যান্য পণ্যের দাম বেশি, তাই বাড়তি ভাড়া নিচ্ছি।
সিএনজি চালক সুমন মিয়া বলেন, সব চালকরাই বেশি ভাড়া নিচ্ছে, আমিও নিচ্ছি। এখন কি আগের ভাড়া নিয়ে বসে থাকলে হবে? সবাই বাড়তি ইনকাম চায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় , এ সড়কে চলাচলকারী অধিকাংশ সিএনজি চালকের বৈধ লাইসেন্স নেই। অদক্ষ ও অনভিজ্ঞ চালকরা বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালানোয় প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। যাত্রীদের সঙ্গে অশালীন আচরণ ও বাড়তি ভাড়া আদায় নিত্যদিনের ঘটনা।
এ বিষয়ে সাধারণ যাত্রীদের অভিযোগ, গাড়ি কম বা বেশি হলে, যাত্রী কম বা বেশি হলে ভাড়া বেড়ে যায়। মাগরিবের আজানের পর বৃহস্পতিবার কিংবা কোনো উৎসব এলেই ভাড়া দুই থেকে তিন গুন বেড়ে যায়।
এ বিষয়ে তাদের দাবি, ব্রাহ্মণপাড়া-মিরপুর সড়কসহ আশপাশের সড়কগুলোতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করে ভাড়া নৈরাজ্য বন্ধ করা হোক এবং নির্ধারিত ভাড়ার চার্ট বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা হোক।
এ ব্যাপারে ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা জাহান বলেন, কুমিল্লা থেকে আসা সিএনজির ড্রাইভার বিভিন্ন দিবসে ভাড়া বৃদ্ধি করে।তবে ব্রাহ্মণপাড়া সিএনজি স্টেশনের এ রকম করলে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

আরও পড়ুন
রাজশাহীতে ভারতীয় সহকারী হাইকমিশন ঘেরাও
কুমিল্লা থেকে ৪০ রুটে বাস ধর্মঘট, চরম ভোগান্তি
মুরাদনগরে স্বেচ্ছাসেবক লীগ, শ্রমিক লীগ ও ইউপির চেয়ারম্যানসহ আটক-১০