অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের আলোচিত মাহাদেভ বেটিং কেলেঙ্কারির তদন্তে সাকিব আল হাসানের বোনের নাম উঠে আসা নিয়ে এই তারকা ক্রিকেটারের কাছে জানতে চাওয়া হলেও সাড়া দেননি তিনি। আর বিসিবি জানিয়েছে, এখনই এই বিষযটি নিয়ে কোনো মন্তব্য করার অবস্থায় নেই তারা। মাহাদেভ বেটিং অ্যাপ কেলেঙ্কোরির তদন্ত চলছে গত কয়েক মাস ধরেই। সেখানেই সাকিবের বোনের নাম বেরিয়ে আসার চমকপ্রদ তথ্য জানায় ভারতীয় সংবাদমাধ্যম। ইন্ডিয়াটুডে ডট ইন-এ শুক্রবার রাতে এই খবর প্রকাশিত হয়।
ভারতের আরও কিছু সংবাদমাধ্যমে পরে দেখা যায় একই খবর। মাহাদেভ অ্যাপ একটি অনলাইন বেটিং প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ব্যাডমিন্টন, টেনিস, ফুটবল, ক্রিকেট ও পোকারসহ বিভিন্ন কার্ড খেলায় অবৈধ জুয়ার কারবার চলত। ভারতীয় সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের রাজস্ব বিভাগের তদন্তকারী সংস্থা ‘এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টোরেট (ইডি)’ খতিয়ে দেখছে এই কেলেঙ্কারির ব্যাপারটি। শুক্রবার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে তারা জানায়, এই ঘটনার তদন্ত প্রক্রিয়ায় গিরিশ তালরেজা ও সুরাজ চোখানি নামের দুজন ব্যবসায়ীকে আটক করা হয়েছে। মাহাদেভ অ্যাপের অগ্রণীদের একজন দুবাইভিত্তিক হুন্ডি ব্যবসায়ী হারি শাঙ্কার তিব্রেওয়ালের ঘনিষ্ঠ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে ওই দুজনকে।
তদন্তে উঠে এসেছে, ‘sïexchange’ নামে একটি অবৈধ বেটিং ওয়েবসাইট পরিচালনা করতেন এই তিব্রেওয়াল। দুবাইভিত্তিক বিভিন্ন পরিচয়ের ভিত্তিতে ভারতের স্টক মার্কেটেও বিনিয়োগ করতেন তিনি ফরেন পোর্টফোলিও ইনভেস্টমেন্ট-এর আওতায়। স্টক মার্কেটের তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোতে এই তিব্রেওয়ালের অর্থ বিনিয়োগ করতেন আটক হওয়া সুরাজ চোখানি। পাশাপাশি বাংলাদেশে ১১রিপশবঃ.পড়স নামের একটি বেটিং সাইটেও বিনিয়োগ করেন চোখানি, যেখানে সাকিবের বোন তার অংশীদার বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইন্ডিয়াটুডে ডট ইন-এর খবরে। এই খবরে সাকিবের বোনের নাম বলা হয়েছে জান্নাতুল হাসান। তবে তার বোনের প্রকৃত নাম জান্নাতুল ফেরদৌস রিতু।
এই অ্যাপ ছাড়াও নেপালের কাঠমান্ডু একটি ক্যাসিনোতে চোখানি ৪০ কোটি রুপি বিনিয়োগ করেছেন বলেও খবরটিতে বলা হয়েছে এবং সেখানে দাবি করা হয়েছে, লোটাস ৩৬৫ ও মাহাদেভ অ্যাপ থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করা অর্থ তিনি ওখানে বিনিয়োগ করেছেন। বোনের নাম উঠে আসা নিয়ে সাকিবের সঙ্গে ফোনে কল করে এবং হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠিয়ে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন চৌধুরি সংবাদমাধ্যমকে বলেন, “আজকে সকালেই খবরটি দেখলাম। এখনই আমরা এটি নিয়ে মন্তব্য করার অবস্থায় নেই।”
সাকিবের সঙ্গে এই প্রসঙ্গে কোনো কথা হয়নি বলেও জানান তিনি। বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান জালাল ইউনুস এটা নিয়ে শুধু বললেন, “আই হ্যাভ নো আইডিয়া।” কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) প্রধান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, তারা এই বিষয়ে অবগত নন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “আমরা ক্রিকেটার সাকিবের বোন বা এই সংক্রান্ত বেটিং অ্যাপ নিয়ে কাজ করছি না।” ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) হারুন অর রশিদ জানান, তাদের কাছে এ ব্যাপারে কোনো তথ্য নেই।
বিসিবির কেন্দ্রীয় চুক্তিতে তিন সংস্করণেই আছেন সাকিব। বাংলাদেশের সর্বকালের সেরা ক্রিকেটার হিসেবেও তিনি অবিসংবাদিত। তবে ক্যারিয়ারজুড়ে অসংখ্য বিতর্কে নাম জড়িয়েছে তার। দুর্নীতি বিরোধী ধারা ভঙ্গের কারণে ২০১৯ সালের অক্টোবরে তাকে এক বছরের স্থগিত নিষেধাজ্ঞাসহ দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। তিন দফায় ফিক্সিংয়ের প্রস্তাব পেয়েও তা গোপন করায় এই শাস্তি হয়েছিল তার।
গত বছর বেটউইনার নিউজ নামের একটি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছাদূত হয়েও তিনি খবরের শিরোণামে উঠে আসেন। সেটিও ছিল মূলত বেটিং সাইট সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান। প্রবল আলোচনা-সমালোচনার মুখে বিসিবির হস্তক্ষেপে পরে সেই চুক্তি থেকে সরে আসেন তিনি। গত জানুয়ারিতে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের হয়ে মাগুরা-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন সাকিব। বিপিএল শেষে বিশ্রামে থাকায় শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চলতি সিরিজে তিনি খেলছেন না।
আরও পড়ুন
কার দিকে, কেন তেড়ে গিয়েছিলেন তামিম
শেষ ওভারে ৩ ছক্কা ৩ চার, ৩০ রান নিয়ে রংপুরকে জেতালেন নুরুল
মোহামেডানকে হারালো আবাহনী দুই বছর পর