সরকার সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি এবং জাতীয় সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীদের জন্য আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স ও রিটেইনার নিয়োগ নীতিমালা, ২০২৫ প্রণয়ন ও জারি করেছে। প্রজ্ঞাপনটি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের রাজনৈতিক-৪ অধিশাখা থেকে প্রকাশিত হয় এবং স্বাক্ষর করেছেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, জননিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং নির্বাচনকালীন সহিংসতা প্রতিরোধের জন্য এই নীতিমালা প্রণয়ন করা হয়েছে।
নীতিমালায় সাতটি অধ্যায় ও ১৯টি অনুচ্ছেদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যেখানে লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা, রিটেইনার নিয়োগ প্রক্রিয়া, নির্বাচন কমিশনের আচরণবিধির সঙ্গে সামঞ্জস্য এবং আপিল ও ক্ষমতা সংরক্ষণ বিষয়ক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নীতিমালার সংজ্ঞায় ‘রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ অর্থ সরকার কর্তৃক স্বীকৃত বর্তমান বা সাবেক উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক ব্যক্তি; ‘পদপ্রার্থী’ অর্থ ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের নিকট মনোনয়নপত্র দাখিলকারী কোনো ব্যক্তি, ‘লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষ’ অর্থ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট অথবা সরকার কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্তৃপক্ষ; ‘রিটেইনার’ অর্থ সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা পদপ্রার্থীর ব্যক্তিগত নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত ও অনুমোদিত সশস্ত্র ব্যক্তিকে বুঝানো হয়েছে।
নীতিমালাটি প্রণয়নের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলা হয়েছে—প্রকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকির ভিত্তিতে আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্স প্রদান ও রিটেইনার নিয়োগ অনুমোদন; রাজনৈতিক প্রভাব ও ব্যক্তিগত সশস্ত্র বাহিনী গঠন প্রতিরোধ; নির্বাচনকালীন সহিংসতা ও ভয়ভীতি প্রদর্শন রোধ এবং স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা ও আইনের শাসন নিশ্চিতকরণ।
নীতিমালার আইনগত ভিত্তি সম্পর্কে বলা হয়েছে— ‘এই নীতিমালার বাস্তবায়ন নিম্নোক্ত আইন ও নীতিমালার আলোকে করা হইবে—আগ্নেয়াস্ত্র আইন, ১৮৭৮; আগ্নেয়াস্ত্র বিধিমালা, ১৯২৪; দণ্ডবিধি, ১৮৬০; ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৮৯৮; নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সময়ে সময়ে জারিকৃত আচরণবিধি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক এ সংক্রান্ত জারিকৃত নীতিমালা।
লাইসেন্স প্রাপ্তির যোগ্যতা হিসেবে বলা হয়েছে—সরকার কর্তৃক স্বীকৃত রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি হইতে হইবে; ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিল করিতে হইবে; উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে গোয়েন্দা সংস্থা) কর্তৃক যাচাইকৃত নিরাপত্তা ঝুঁকি বিদ্যমান থাকিতে হইবে; শারীরিক ও মানসিক সক্ষমতা থাকিতে হইবে; অস্ত্র সংরক্ষণের নিরাপদ ব্যবস্থা থাকিতে হইবে এবং এই নীতিমালার অধীনে লাইসেন্স প্রদানের ক্ষেত্রে এই সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত অন্যান্য নীতিমালা ও বিধান প্রযোজ্য হইবে। তবে ব্যক্তিগত আয়কর প্রদান সংক্রান্ত অংশ শিথিলযোগ্য হইবে।
লাইসেন্সের মেয়াদ সম্পর্কে বলা হয়েছে— এই নীতিমালার আওতায় অনুমোদনকৃত লাইসেন্সের মেয়াদ নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণার তারিখ হইতে পরবর্তী ১৫ দিন হইবে। উক্ত সময়ের পর এইরূপ লাইসেন্স স্বয়ংক্রিয়ভাবে বাতিল বলিয়া গণ্য হইবে। তবে শর্ত থাকে যে, লাইসেন্স প্রাপ্তির জন্য জারিকৃত নীতিমালার অন্যান্য শর্ত পূরণ হইলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই সাময়িক লাইসেন্সকে সাধারণ লাইসেন্সে রুপান্তর করিতে পারিবে; লাইসেন্সের মেয়াদ অতিক্রান্ত হইলে বা লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরও কোনো লাইসেন্সধারী উক্ত লাইসেন্সের বিপরীতে কোনো আগ্নেয়াস্ত্র নিজ দখলে রাখিলে তার বিরুদ্ধে প্রচলিত আইন মোতাবেক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গৃহীত হইবে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
অবৈধ মোবাইল বন্ধ হবে ১ জানুয়ারি থেকে
হাদিকে হত্যাচেষ্টা: ফয়সালের স্ত্রীসহ তিনজন ৫ দিনের রিমান্ডে
আমরা যদি নিরাপদ না থাকি, এ দেশে আমাদের শত্রুরাও নিরাপদ থাকতে পারবে না: মাহফুজ আলম