December 15, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, December 14th, 2025, 6:53 pm

স্বাধীনতাবিরোধিরা এখন ভোল পাল্টে নতুন দেশ গড়ার ভাব দেখাচ্ছে: মির্জা ফখরুল

 

যারা বাংলাদেশের স্বাধীনতার অস্তিত্ব অস্বীকার করেছে, তাদের ওপর আস্থা রাখার কোনো কারণ নেই—এমন মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে যে শক্তি বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছিল, আজ তারাই রূপ বদলে নতুন বাংলাদেশ গড়ার দাবি করছে। কিন্তু দেশের মানুষ তা বিশ্বাস করে না। যারা আমার জন্ম ও স্বাধীনতাকেই অস্বীকার করেছে, তাদের বিশ্বাস করার কোনো যুক্তি থাকতে পারে না বলে আমি অন্তত মনে করি।

রোববার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর কাকরাইলে ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আসন্ন নির্বাচনকে দুই শক্তির লড়াই হিসেবে উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এবারের নির্বাচন হবে দুটি শক্তির মধ্যে। একদিকে রয়েছে বাংলাদেশের পক্ষে থাকা শক্তি—যারা উদার গণতন্ত্র ও প্রকৃত গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার পক্ষে। অন্যদিকে রয়েছে সেই পশ্চাৎপদ শক্তি, যারা ধর্মকে ব্যবহার করে বারবার মানুষকে বিভ্রান্ত করেছে।

তিনি বলেন, একাত্তর সালকে ভুলে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আমরা যারা স্বাধীনতার সংগ্রামে যুক্ত ছিলাম, যুদ্ধ করেছি, এই দেশের জন্য একটি স্বাধীন ভূখণ্ড এনে দিয়েছি। সেই স্বাধীনতার ফলেই আজ আমরা টিকে আছি। প্রশ্ন হলো—আমরা কি স্বাধীনতার পক্ষে থাকা শক্তির সঙ্গে থাকব, নাকি যারা সেই স্বাধীনতাকে নস্যাৎ করতে চেয়েছিল, তাদের পাশে দাঁড়াব?

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, দেশের মানুষ সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলেই আমরা বিশ্বাস করি, আর সেই সিদ্ধান্তের প্রতিফলন হবে ধানের শীষ প্রতীকের পক্ষে ভোটের মাধ্যমে। এ কারণেই এবারের শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আমাদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। বর্তমানে যে রাজনৈতিক মেরুকরণ তৈরি হয়েছে, তাতে জনগণকে বেছে নিতে হবে—স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও গণতন্ত্র, নাকি সেই শক্তি যারা অতীতে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে এবং দেশের অগ্রযাত্রা বাধাগ্রস্ত করতে চেয়েছে।

তিনি বলেন, আজ এসব প্রশ্ন সামনে আসছে কারণ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে এবং ধর্মের নাম ব্যবহার করে মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। একাত্তর সালেও তারা একই কৌশল নিয়েছিল। এমনকি ১৯৪৭ সালে যখন এ দেশের মুসলমানরা আত্মনিয়ন্ত্রণ ও অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করেছিল, তখনও এই শক্তি পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছিল। স্পষ্টভাবে বলতে চাই—এই শক্তি ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান আন্দোলনের বিরোধিতা করেছে এবং ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, আল্লাহর কাছে অশেষ কৃতজ্ঞতা যে আমাদের নেতা দীর্ঘ ১৭ বছরের নির্বাসন শেষে ইনশাআল্লাহ আগামী ২৫ ডিসেম্বর দেশে ফিরবেন। এটি আমাদের জন্য অত্যন্ত অনুপ্রেরণার বিষয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে তাকে এমন একটি সংবর্ধনা দিই, যা এর আগে কোনো নেতা বাংলাদেশে পাননি।

তারেক রহমানের দেশে প্রত্যাবর্তন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গভীর উদ্বেগের মধ্যেও এই খবর আমাদের নতুন আশার আলো দেখাচ্ছে। একদিকে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় হাসপাতালে, অন্যদিকে আমাদের সেই নির্ভরতার প্রতীক নেতা—যিনি আমাদের পথ দেখাচ্ছেন—২৫ ডিসেম্বর আমাদের মাঝে উপস্থিত হবেন।

মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট কর্নেল জয়নুল আবেদিন, মুক্তিযোদ্ধা দলের অবসরপ্রাপ্ত মিজানুর রহমান, নজরুল ইসলাম, এম এ হালিম, এম এ হাকিম খান এবং জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের সদস্যসচিব কেএম কামরুজ্জামান নান্নু।

এনএনবাংলা/