অনলাইন ডেস্ক :
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলমানদের পক্ষে কথা বলে দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমনের তোপের মুখে পড়লেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির যুক্তরাষ্ট্র সফর নিয়ে গত রোববার আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ওবামার আমলে ছয়টি মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ট দেশে আমেরিকার হামলার প্রসঙ্গ টানেন তিনি। রোববার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, মুসলিমদের হয়ে কথা বলা এই ওবামাও কিন্তু ৬টি মুসলিমপ্রধান দেশে ২৬ হাজার বোমা মেরেছিলেন। আমি তো ওবামার মন্তব্যে স্তম্ভিত। আমরা আমেরিকার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই। কিন্তু তারপরেও ভারতে ধর্মীয় স্বাধীনতা নিয়ে কথা শুনতে হচ্ছে…! আসলে মনে হচ্ছে ভারতের পরিবেশকে নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। নির্মলা দাবি করেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মোদিকে যে ১৩টি পুরস্কার দেয়া হয়েছে তার মধ্যে ৬টি দিয়েছে মুসলিম প্রধান দেশ। কোনো তথ্য ছাড়াই শুধু অপপ্রচারের জন্য নানা কথা বলা হচ্ছে। আসলে ভোটের মাধ্যমে মোদী ও বিজেপিকে হারাতে পারছে না কংগ্রেসসহ বিরোধীরা।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমেরিকা সফরের সময় মার্কিন সংবাদ মাধ্যম সিএনএনকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে ভারতের মুসলমানসহ সংখ্যালঘু নাগরিকদের অধিকার প্রশ্নে কথা বলেন বারাক ওবামা। মুসলমানদের অধিকারের প্রতি মনযোগী না হলে ‘ভারত ভেঙে যাবে’ বলেও বিস্ফোরক মন্তব্য করেন তিনি। ওই সাক্ষাৎকারে বারাক ওবামা বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে আমি ভালো করেই জানি। আমি যদি এখন তার সঙ্গে দেখা করতাম তাহলে তাকে বলতাম, আপনি ভারতে জাতিগত সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষা না করতে পারলে ভারত টুকরো টুকরো হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মোদির সঙ্গে প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বৈঠক প্রসঙ্গে ওবামা বলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের উচিত মোদির কাছে হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ ভারতে মুসলিম সংখ্যালঘুদের অধিকার সুরক্ষার বিষয়টি উত্থাপিত করা।
তবে এটাও ঠিক যে, মিত্র দেশগুলোর মানবাধিকার ইস্যুতে কথা বলাটা বেশ ‘জটিল’। অবশ্য বারাক ওবামার মন্তব্যের কয়েক ঘণ্টা পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে নিয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে আসেন। এতে বাইডেন বলেন, হোয়াইট হাউজে আলোচনার সময় মোদির সঙ্গে মানবাধিকার ও অন্যান্য গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করেছি। যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের ‘ডিএনএতে’ গণতন্ত্র মিশে রয়েছে।
আর ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে দাবি করেন, তার সরকারের অধীনে ভারতে সংখ্যালঘুদের প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয় না। ভারতে ধর্মীয় বৈষম্যের অস্তিত্ব রয়েছে তা মানতে নারাজ তিনি। যদিও ভারতে ধর্মীয় সংখ্যালঘু, ভিন্নমতাবলম্বী ও সাংবাদিকদের নির্যাতনের বিষয়ে বিস্তারিত অভিযোগ সামনে এনেছে বহু মানবাধিকার গোষ্ঠী ও খোদ যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর। সূত্র: দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, হিন্দুস্তান টাইমস, দ্য ইকোনমিক টাইমস
আরও পড়ুন
দক্ষিণ কোরিয়ায় বিমান বিধ্বস্তে নিহত বেড়ে ১৭৭
হাসিনার মতো ‘বিশ্বস্ত মিত্র’কে হারানোর ঝুঁকি নেবে না ভারত
উড়োজাহাজ বিধ্বস্তে ৩৮ জনের মৃত্যু, আজারবাইজানে রাষ্ট্রীয় শোক পালন