October 4, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Sunday, July 7th, 2024, 3:45 pm

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে

জেলা প্রতিনিধি, গাইবান্ধা :

গাইবান্ধায় বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। পানির প্রবল স্্েরাতে গাইবান্ধা সদর ও ফুলছড়ি উপজেলার অন্তত ১৫০টি বাড়িঘর বিদ্ধস্ত হয়েছে। অনেক স্থানে ঘরের চালের উপর দিয়ে পানির স্রোত বইছে। বাড়িঘর ধ্বসে পড়া পরিবারগুলো উচুঁ স্থান ও আশ্রয় কেন্দ্রে চলে গেছে। অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির কারণে ব্রহ্মপুত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের বাইরে সুন্দরগঞ্জ, ফুলছড়ি, সাঘাটা ও সদর উপজেলা ২৭টি ইউনিয়নের অন্তত ৫০ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকট। তলিয়ে গেছে বিস্তীর্ণ এলাকার পাট, বাদাম ও শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ফসল।

ব্রহ্মপুত্র, তিস্তা ও যমুনার চর বেষ্টিত ১৬৫টি চরের মানুষের গবাদিপশু প্রধান সম্পদ। বন্যায় বাড়িঘর ডোবার কারণে বন্যার্ত মানুষগুলো গরু, ছাগল, ভেড়া, হাস-মুরগি কোন রকমে উঁচু বালির ডিবিতে বসবাস করছে। সেখানে দেখা দিয়েছে গো-খাদ্যের সংকট। নিরাপত্তা না থাকায় নৌকা অভাবে তারা গবাদি পশু গুলো উঁচু আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারছে না। চোর-ডাকাতের ভয়ে তারা গবাদি পশুর সাথে গাদাগাদি করে বসবাস করছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, আজ সকাল ৬টায় গাইবান্ধায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ফুলছড়িঘাট পয়েন্টে বিপদসীমার ৭৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে এবং ঘাঘট নদীর পানি শহরের নতুন ব্রীজ পয়েন্টে ২৭ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যার কারণে ৬৬টি প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং ৪টি স্কুল ও মাদ্রাসা বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, বন্যার্তদের মধ্যে ৩ হাজার ৫০ প্যাকেট শুকনা খাবার ও ১৬৫ মেট্রিকটন জিআর চাল বিতরণ করা হয়েছে। সরকারি হিসেবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের তুলনায় ত্রান বরাদ্দ অপ্রতুল। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে আরও ত্রানের চাহিদা মন্ত্রনালয়ে পাঠানো হয়েছে।

গাইবান্ধা-৫(সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সংসদ সদস্য মাহমুদ হাসান রিপন ফুলছড়ি উপজেলার ফজলুপুর, গজারিয়া ও ফুলছড়ি ইউনিয়নের ৩ হাজার পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করছেন। পর্যায়ক্রমে অন্যান্য ইউনিয়নে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানা গেছে।

গাইবান্ধা জেলার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কাজী নাহিদ রসুল সদর উপজেলার কামারজানী ইউনিয়নের খারজানি এবং কুন্দেরপাড়া গণ উন্নয়ন একাডেমী আশ্রয়কেন্দ্র পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি বন্যাকবলিত পানিবন্দি মানুষের সাথে কথা বলেন, তাদের সাময়িক সমস্যার কথা শোনেন এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সহায়তার আশ্বাস প্রদান করেন।

তিনি বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ কার্য (চাল), শুকনা খাবার, টিওবওয়েল, ডিগনিটি কিট (মহিলাদের মর্যাদা সুরক্ষার জন্যে প্রয়োজনীয় সামগ্রী), পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও জেরিক্যান, গো-খাদ্য, গবাদি পশুর জন্যে বিভিন্ন রকমের ভিটামিন ও নগদ অর্থ বিতরণ করেন। এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি এবং উন্নয়ন ও মানবসম্পদ), গাইবান্ধা সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার(ভূমি), গাইবান্ধা সদরসহ উপজেলা পর্যায়ের অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, ইউএনডিপিএ(টঘঋচঅ) কর্মকর্তা, গণ উন্নয়ন কেন্দ্র ও ফ্রেন্ডশিপসহ অন্যান্য এনজিওর কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।