অনলাইন ডেস্ক :
ছাত্রদের কোটা সংস্কার আন্দোলন এবং পরবর্তীতে সহিংসতার জেরে সরকার পতনের এক দফার আন্দোলনের রেশ কাটিয়ে খুলেছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো। বন্ধু-সহপাঠীরা সকলে প্রিয় প্রাঙ্গন প্রিয় ক্লাসরুমে ফিরলেও তাদের সঙ্গে ফেরেনি বিএফ শাহীন কলেজের শিক্ষার্থী শাফিক উদ্দিন আহমেদ আহনাফ। ছাত্র আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট গুলিতে নিহত হয় এই কিশোর। সহপাঠীর স্মরণে গত রোববার ক্লাসের টেবিলে আহনাফের আসন ফাঁকা রাখে সহপাঠীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সেই ছবি। যেখানে দেখা যায়, আহনাফের সব সহপাঠী ক্লাসে-পরীক্ষার টেবিলে। আহনাফের টেবিলটা শুধু ফাঁকা। তার স্মরণে বন্ধুরা সেখানে ফুল রেখেছে।
এ বিষয়ে আহনাফের সহপাঠীরা জানান, ওর টেবিলটা আজ ফাঁকা। তাই ওকে স্মরণে টেবিলে ফুল রেখেছি আমরা। আমাদের শহীদ বন্ধুকে ভুলে যাইনি। ভুলতেও পারব না। ফুল হয়েই আহনাফ আজ পরীক্ষায় অংশ নিলো। আহনাফের জন্য সহপাঠীদের এমন উদ্যোগ ছুঁয়ে গেছে জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাকে। গত রোববার সন্ধ্যায় নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে শ্রেণিকক্ষের সেই ছবিটি প্রকাশ করে লিখেছেন, শহীদ আহনাফের আজকে পরীক্ষার হলে থাকার কথা ছিলো। তার আসন ফুলে ঢেকে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
ছবিটার দিকে তাকানো যায় না। এক অদ্ভুত বেদনায় মন ডুবে যায়! একই পোস্টে আরও একটি ছবি শেয়ার করেছেন এই অভিনেত্রী। যেই ছবিটি সাভারে পুলিশের গুলিতে নিহত মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের বিশ্ববিদ্যালয়ের হলের। ওই ছবিতে দেখা যায়, শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে তার হলের রুমে জাতীয় পতাকায় ঢেকে দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কতৃপক্ষ।
সেই ছবিটিই নিজের ফেসবুকে শেয়ার করেছেন তিশা। লিখেছেন, দ্বিতীয় ছবিতে শহীদ ইয়ামিনের হল! জাতীয় পতাকায় ঢাকা। এরপর এই অভিনেত্রী লেখেন, এরকম হাজারো ত্যাগের গল্পে আমাদের আজকের স্বাধীনতা। আমরা যেন এসব মনে রাখি! উল্লেখ্য, রাজধানীর বিএএফ শাহীন কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল আহনাফ।
২০২৫ সালে তার এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল। কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে শুরু থেকেই আহনাফ সোচ্চার ছিল। আন্দোলনে অংশ নিয়ে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে সে একবার বাসায় ফিরেছিল। আন্দোলনে যেতে নিষেধ করলে আহনাফ তার মা আর খালাকে বলত, ‘তোমাদের মতো ভিতু মা-খালাদের জন্য ছেলেমেয়েরা আন্দোলনে যেতে পারছে না।
১৯৭১ সালে তোমাদের মতো মা-খালারা থাকলে দেশ আর স্বাধীন হতো না।’ আহনাফের মা সাফাত সিদ্দিকী ও খালা নাজিয়া আহমেদ জানান, আন্দোলনে যেতে বাধা দিলেই আহনাফ বলত, সে সাঈদ-মুগ্ধ ভাইদের মতো সাহসী হতে চায়। তাদের মতো কিছু হলে তারা গর্ব করে বলতে পারবেন, ‘আমরা আহনাফের মা-খালা’। শেষ পর্যন্ত আহনাফ হয়েছেও তাই। এদিকে ৫ আগস্ট সরকার পতনের পরে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাকিজার মোড়ের নতুন নামকরণ করা হয় শহীদ ইয়ামিন চত্বর। এছাড়াও সাভার ব্যাংক টাউনে ইয়ামিনের নামে ব্যানার টাঙিয়ে ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন
শাকিবের ডাকে হাজির যেসব তারকা
অব্যাহতি চাইলেন মামুনুর রশীদ
অভিনয়ে ফিরবেন কি না, জানালেন ববিতা