অনলাইন ডেস্ক :
সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ে নির্মিত ছবি ‘অমীমাংসিত’ ওটিটির জন্য নির্মাণ করা হলেও সেন্সর বোর্ডের জাঁতাকলে সেটি আর মুক্তি পায়নি। এটিকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। অবশেষে জানা গেল, ছবিটি মুক্তি পাচ্ছে। সেন্সর বোর্ড নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন ভাবনায় শিগগিরই এটি নতুন করে সেন্সর বোর্ডে জমা দেবেন বলে ইতোমধ্যে জানিয়েছেন এর পরিচালক রায়হান রাফি। ছবিটির মুক্তি নিয়ে ইতোমধ্যে সরব হয়েছেন পরিচালক, অভিনয়শিল্পীরা। এতে অর্ণব (সাগর) চরিত্রে অভিনয় করেছেন ইমতিয়াজ বর্ষণ এবং নিরু (রুনি) চরিত্রে অভিনয় করেছেন তানজিকা আমিন।
‘অমীমাংসিত’ মুক্তির খবরে স্বস্তি ফিরেছে অভিনয়শিল্পীদের মনে। এমনটা জানিয়ে তানজিকা আমিন বলেন, ‘মূল কথা হচ্ছে, এই ছবিটা তো সেন্সরে যাওয়ারই কথা ছিল না। কারণ এটা ওটিটির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল। তারপরও সেটা সেন্সরে গিয়েছিল, কারণ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর কানে গিয়েছিল যে, এটা সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ে বানানো হচ্ছে। যেহেতু এটা খুব আলোচিত একটা ঘটনা এবং সাগর-রুনি সম্পর্কিত; খুব স্বভাবতই তারা সেটা চায়নি যে এটা আসুক। তারা ভয়ও পেয়েছিল, কি না কি দেখানো হয়েছে এতে! সেজন্যই সেন্সরের নামে এটাকে আটকে দেওয়া হয়েছিল এবং ওই সময় ছবিটাকে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখন যেহেতু নতুন সরকার গঠিত হয়েছে, আমরা আমাদের বাক-স্বাধীনতা পেয়েছি। এখন আমরা চাইছি ছবিটা আসুক এবং সবাই দেখুক। তবে অবশ্যই আমরা সিস্টেমের বাইরে যেতে চাইছি না। যেহেতু সেন্সরে দেওয়া হয়েছিল, তাই আবারও সেন্সরের মাধ্যমেই আমরা চাই ছবিটা মুক্তি দেওয়া হোক। এভাবেই পরিকল্পনা চলছে। হয়তো শিগগিরই ছবিটা মুক্তি পাবে।’ ইতিমধ্যেই নির্মাতারা নতুন সরকারের কাছে সেন্সর বোর্ড নিয়ে কিছু দাবি তুলে ধরেছেন। বিষয়টিকে খুবই যুক্তি যৌক্তিক দাবি করে তানজিকা আমিন জানান, তিনিও নির্মাতার সঙ্গে একমত। অভিনেত্রীর ভাষ্য, ‘সেন্সরশিপ কেন থাকবে? অন্যসব দেশের মতো সার্টিফিকেশন থাকবে।
একজন নির্মাতাকে যদি চোখ বেঁধে দেওয়া হয় কিংবা তার হাত বেঁধে দেওয়া হয়, তাহলে সে কী দেখবে বা কী দেখাবে? সিনেমা বানানো হয় সমাজের চোখ খুলে দেওয়ার জন্য। অথচ আমাদের সমাজে যে ঘটনাগুলো ঘটে, সেগুলো দেখানো যায় না, বন্ধ করে দেওয়া হয়। শুধু সাগর-রুনি কেন, আমাদের দেশে যে বর্বর ঘটনাগুলো ঘটেছে, প্রত্যেকটা ঘটনা নিয়ে নির্মাতাদের সিনেমা বানানো উচিত। সিনেমা না হলে ওটিটি কিংবা নাটক বানানো উচিত বলে মনে করি আমি। আর চুপ করে থাকা যাবে না।
ছবিটিতে কাজ শুরু করার আগে বেশ ভয় পেয়েছিলেন বলেও জানান এই অভিনেত্রী। তিনি বললেন, ‘আমি যখন প্রথমে শুনলাম যে এটা সাগর-রুনি হত্যাকান্ড নিয়ে তখনই বেশ ভয় পেয়েছিলাম। শুরুতেই আমি রাফিকে বলেছিলাম যে, এটা জীবনেও হবে না। আলোর মুখ দেখবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের প্রত্যেকের জন্যই এই কাজটা অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল। এমন অবস্থা ছিল যে, আমরা তো স্পষ্ট করে বলতে পারছিলাম না। যে কারণে এখানে আমার চরিত্রের নাম নিরু, যেটাকে উল্টো করলে হয় রুনি। আর ইমতিয়াজ বর্ষণের চরিত্রের নাম অর্ণব, যেটা হচ্ছে সাগরের প্রতিশব্দ। আর এই দম্পতির ছেলে মেঘের পরিবর্তে আমরা ছেলে না দেখিয়ে মেয়ে রেখেছি।
সবকিছুই এদিক-সেদিক করা হয়েছে, যেন সিমিলার কিছু না হয়। যথেষ্ট ভয়ে ভয়ে এবং সাবধানে কাজটা করেছি, যেন আগেই বাইরে কেউ জেনে না যায়। এরপর তো মানুষ জেনেই গেল। এরপরের ঘটনা তো আমরা সবাই জানি।’ এর মধ্যে গত শনিবার থেকে নতুন একটি ধারাবাহিক নাটকের শুটিং শুরু করেছেন তানজিকা আমিন। তিনি জানালেন, টানা কয়েক দিন কাজ করবেন।
আরও পড়ুন
ফারুকী, সেলিম, রাফি, হিমেলসহ আলোচিত ৮ পরিচালক
২৫ বছর বয়সেই না ফেরার দেশে জনপ্রিয় আরজে
দীর্ঘদিন পর ফেরা তারকারা