আ.লীগ নেতা শাহ কিবরিয়া ও প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ছবি : সংগৃহীত
অনলাইন ডেস্ক:
সাবেক অর্থমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা শাহ এএমএস কিবরিয়ার হত্যাকাণ্ড নিয়ে বরাবরই আওয়ামী লীগের দিকে অভিযোগ করে আসছেন তার ছেলে রেজা কিবরিয়া। দুই দশক ধরে আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতা এবং ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিরা এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত বলে দাবি করে আসছেন তিনি।
শাহ এএমএস কিবরিয়া ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জে দলীয় এক জনসভায় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন। পরে ঢাকায় নেওয়ার পথে তিনি মারা যান। তার মৃত্যুবার্ষিকীর পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন।
স্ট্যাটাসে শফিকুল আলম বলেন, শাহ কিবরিয়া হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত এবং ন্যায্যবিচারের দাবিতে রেজা কিবরিয়ার মা ও তার পরিবার একাধিক বিক্ষোভ করেছেন। এমনকি রেজা ও প্রয়াত শিল্পী তার মা আসমা কিবরিয়ার ক্রমাগত আপত্তির কারণেই শেখ হাসিনা তিনবার হত্যা মামলার চার্জশিট পরিবর্তন করেছিলেন।
তিনি বলেন, শাহ কিবরিয়া হত্যা মামলা ছিল হাসিনার স্বৈরশাসনের জন্য একটি অ্যাসিব টেস্ট। কেউ আশা করেনি যে হাসিনা বিরোধী দলের কর্মীদের জন্য ন্যায্যবিচার নিশ্চিত করবেন। আমরা জানি কীভাবে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বা বিরোধী দলের লাখ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছিল এবং কারচুপি করা হয়েছিল। কিন্তু শাহ কিবরিয়া ১৯৯৬-২০০১ সালে হাসিনার অর্থমন্ত্রী এবং জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি ছিলেন। ১৯৯৮ সালে ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এ বন্যায় দেশের দুই-তৃতীয়াংশ এলাকা দুই মাস ধরে পানিবন্দি ছিল।
প্রেস সচিব বলেন, শেখ হাসিনার এটাই ছিল স্বাভাবিক আচরণ। তার কাছে তার পরিবার ছাড়া আর কিছুই গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। তার প্রতিদিনের বক্তব্যগুলো মস্তিষ্কের কোষগুলোর স্থায়ী ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়। কখনো মনোযোগ দিয়ে তার বক্তব্য শুনলে দেখবেন, ১৫ বছর ধরে প্রায় প্রতিদিনই বক্তৃতায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম পাঁচটি অনুচ্ছেদে পরিবারের হত্যাকাণ্ডের কথা বলতেন।
তিনি বলেন, নিঃসন্দেহে শেখ মুজিব এবং পরিবারের প্রায় সব সদস্যের হত্যাকাণ্ড ছিল একটি বিশাল ট্র্যাজেডি এবং ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড। কিন্তু আপনি কি প্রতিদিন এটি নিয়ে কথা বলেন? আপনি কি প্রতিদিন স্বজন হারানোর বেদনা বা মা-হারিয়েছি, বাবাকে হারিয়েছি, শিশু রাসেলকেও ওরা ছাড়েনি এসব সম্পর্কে কথা বলেন?
শফিকুল আলম উল্লেখ করেন, পৃথিবীর আর কোনো নেতাকে আমি তার মতো পারিবারিক ট্র্যাজেডি নিয়ে কথা বলতে শুনিনি। আপনি কি কখনো সোনিয়া গান্ধী বা রাহুল গান্ধীকে রাজীব বা ইন্দিরা গান্ধীর হত্যাকাণ্ড এবং সেই ঘটনাগুলো তাদের জীবনে কীভাবে প্রভাব ফেলেছিল সে সম্পর্কে কথা বলতে শুনেছেন? অথবা শ্রীলঙ্কার কোনো নেতা বা প্রয়াত রাজা বীরেন্দ্রের পরিবার, যার পরিবারকে তার ছেলে নির্মমভাবে হত্যা করেছিল, তার কথা বলতে শুনেছেন?
তিনি উল্লেখ করেন, সত্যি বলতে ২০০৯-২০২৪ সালের ঘটনাগুলো যতই পড়ছি, ততই মনে হচ্ছে আমরা এমন একজনের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করেছি যিনি মেডিকেলি শাসনকার্য পরিচালনার উপযুক্ত ছিলেন না।
তিনি আরও উল্লেখ করেন, একজন শীর্ষ কূটনীতিক আমাকে বলেছিলেন যে, তিনি একজন ক্লাসিক পোস্ট ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার (পিটিএসডি) রোগে আক্রান্ত। আমাদের শাসন কার্য পরিচালনার আগে রাজনৈতিক নেতাদের তাদের মেডিকেল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া উচিত!
আরও পড়ুন
নিজেকে ৩ প্রশ্ন করলেন পরীমনি, বললেন প্লিজ ছেড়ে দেন
শেখ হাসিনার পিয়ন জাহাঙ্গীরের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
এস আলম পরিবারের ১৭৫ বিঘা জমি ক্রোক