March 12, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Tuesday, February 18th, 2025, 10:45 am

তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে

আব্দুর রহমান মিন্টু, রংপুর :বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, পানির যখন প্রয়োজন নেই ভারত যখন পানি ছেড়ে দেয়, তখন নদী পারের মানুষের কষ্ট বেড়ে যায়। আর যখন খড়া মৌসুম তখন আর পানি দেয় না ভারত। তিস্তা পারের মানুষের দুঃখ কখনো শেষ হয় না। এই সরকারে পরিষ্কার করে বলতে চাই, অন্তবর্রতী সরকার কথায় তো বলেন, আপনারা নিরপেক্ষ, নিরপেক্ষ কিন্তু এই জায়গায় থাকলে চলবে না।
গতকাল লসোমবার দুপুরে তিস্তা পানি ন্যায্য হিস্যা আদায় ও তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের দাবিতে রংপুরের গঙ্গাচড়া সড়ক সেতুর পয়েন্টে জনতার সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেছেন গত ১৫ বছরে তিস্তার একফোঁটা পানি আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু তিস্তা না যে কয়টা নদী আছে সেখান থেকেও পানি আনতে পারেনি। আমরা গত ১৫ বছর লড়াই করছি ফ্যাসিবাদি হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে। আমাদের ছেলেরা লড়াই করছে। ভারত পানি দেয় না আর আমাদের দেশের শত্রু শেখ হাসিনা দিল্লিতে রাজার হালে বসায় রাখছে ভারত। ঐখান থেকে বিভিন্ন ধরনের হুকুমদারি করছে।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক ও বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক, সাবেক মন্ত্রী আসাদুল হাবিব দুলুর সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (রংপুর বিভাগ) আব্দুল খালেক, বেবি নাজনিন, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পাটির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (জাফর) সভাপতি মোস্তফা জামাল হায়দার,জেলা বিএনপির আহবায়ক সামসুজ্জামান সামু,কাউনিয়া বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা প্রমূখ ।
তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আসাদুল হাবিব দুলু বলেন, তিস্তার দুই তীরে ২৪২ কিলোমিটার ও ৩৬০ কিলোমিটার অববাহিকায় এখন হাহাকার অবস্থা প্রতিবছর তিস্তা অববাহিকার দুই পাড়ে বিশ হাজার মানুষ উদ্বাস্ত হয়। প্রতিবছর ক্ষতি হয় ১ লাখ কোটি টাকারও বেশি। এ কারণে উত্তরের অর্থনীতি পঙ্গু। তিস্তা চুক্তি বাস্তবায়নের পাশাপাশি মহা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে তিস্তা নদীকে ঘিরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ফিরে আসবে এই অঞ্চলে। পাশাপাশি এই অঞ্চলের দুই কোটি মানুষের জীবন জীবিকা জীববৈচিত্র্য এবং পরিবেশ রক্ষা হবে।
‘জাগো বাহে-তিস্তা বাঁচাই’ স্লোগান নিয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ব্যানারে এই কর্মসূচিতে অংশ নিয়েছে বিএনপি ও তার মিত্ররা। আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিস্তা নদী বেষ্টিত লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ১১টি পয়েন্টে সমাবেশ, পদযাত্রা, সাংস্কৃতিক পরিবেশনা করবে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন কমিটি। এর মধ্যে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর বাজার সংলগ্ন তিস্তা নদীর বুকে রংপুরের কর্মসূচি পালিত হচ্ছে।
জানা যায়, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান  মঙ্গলবার  সন্ধ্যায় ৫ জেলার ১১টি পয়েন্টে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হবেন।  সমাবেশের বিভিন্ন স্পটগুলোতে পৃথক পৃথকভাবে অতিথি হিসেবে উপস্থিত আছেন- বিএনপি স্থায়ী কমিটি সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বীর বিক্রম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, শামসুজ্জামান দুদু, জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক এবং গণসংহতি আন্দোলন প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি।
এদিকে সরেজমিনে দেখা যায়, তিস্তা নদীর চরাঞ্চলে ৪৮ ঘণ্টার অবস্থান কর্মসূচির জন্য ১১ পয়েন্টের নদীর দুই পারে বাঁশের খুঁটিতে সামিয়ানা টানিয়ে বানানো হয়েছে তাঁবু। যেখানে রাত যাপন করবে আন্দোলনে যোগ দেওয়া মানুষরা। তার পাশেই তৈরি করা হয়েছে মঞ্চ। সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে এই কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার জন্য দলে দলে আসছে মানুষজন। ইতোমধ্যে প্রতিটি পয়েন্টে পৌঁছে গেছে সাংস্কৃতিক কর্মীরা। তারা প্রস্তুত এই দুইদিনের আয়োজনকে নাচ গান আর নাটিকার মাধ্যমে জমিয়ে তুলতে।
সোমবার সকাল থেকে রংপুরের কাউনিয়া রেলসেতু ও গঙ্গাচড়া মহিপুর সেতু পয়েন্টে ‘জাগো বাহে, তিস্তা বাঁচাই’ কর্মসূচিতে যোগ দিতে খন্ড খন্ড মিছিল নিয়ে আসতে দেখা যায় নদীপাড়ের হাজারো মানুষকে। এই কর্মসূচিতে যোগ দিতে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কুষক ,কৃষাণী ,জেলে তাতী, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষের ঢল নামে।