আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের আয়োজনে আজ থেকে জাতীয় নাট্যশালায় শুরু হলো ২ দিনব্যাপী অনুষ্ঠান ‘মুক্ত সুরের ছন্দ’।
আজ ২৯ এপ্রিল বিকেল ৫ টায় জাতীয় নাট্যশালার সম্মুখে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সংগীত, নৃত্য ও আবৃত্তি বিভাগের পরিচালক মেহজাবীন রহমান। এছাড়াও বিশিষ্ট নৃত্য পরিচালক ও নৃত্যশিল্পীবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অতিথিবৃন্দের বক্তব্যের পর নাট্যশালার সম্মুখে বেলুন উড়িয়ে আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবসের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন। এরপর আন্তর্জাতিক নৃত্য দিবস উপলক্ষে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়। অনুষ্ঠানের সভাপতি, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সকল বিভাগের পরিচালক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, বিশিষ্ট নৃত্য পরিচালক ও শিল্পী বৃন্দরা এই শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত মহাপরিচালক মোহাম্মদ ওয়ারেছ হোসেন বলেন, “যারা নৃত্যশিল্পী আজকে তাদের উৎসবের দিন। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি যে সেই উৎসবে সহযোগী হয়েছে এর জন্য আমরা ভীষণভাবে আনন্দিত। নৃত্য এমন একটি শিল্প মাধ্যম যেখানে অনেকগুলো সংস্কৃতির অঙ্গণের চর্চা একসাথে হয়। সেখানে অভিনয় আছে, নৃত্য আছে, সংগীত আছে এবং অন্যান্য মাধ্যমগুলোও সেখানে স্পর্শ করে। তাই নৃত্যকলা একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক মাধ্যম। আমাদের বাংলাদেশে আমরা বিভিন্নভাবে আমাদের সংস্কৃতিকে ফুটিয়ে তুলি, আমাদের চর্চা হয়। সেই চর্চার হাজার বছরের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য বাংলাদেশের রয়েছে। নৃত্যকলা এরমধ্যে অন্যতম একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য।”
জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে মূল আয়োজনে শুরুতেই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির নৃত্যশিল্পীরা সমবেত নৃত্য ‘প্রাণ’ পরিবেশন করেন, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন অমিত চৌধুরী এবং সংগীত পরিচালনা করেছেন ফাহাল হোসাইন। সমবেত নৃত্য ‘সপ্তসুরের শিখায় আমি’ পরিবেশন করে ভঙ্গিমা ডান্স থিয়েটার, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সৈয়দা শায়লা লিমা। ফিফা চাকমা’র পরিচালনায় ‘আদিবাসি নৃত্য’ পরিবেশন করে তপস্যা। মিউজিকের সাথে নৃত্য পরিবেশন করে অ্যালিফিয়া ডান্স এটেলিয়ার, নৃত্য পরিচালনা করেন মোফাসসল আলিফ। সমেবেত নৃত্য ‘সেদিন আর কত, আমাদের নানান, আহ্বান’ পরিবেশন করে ভাবনা নৃত্যদল, নৃত্য পরিচালনায় সামিনা হোসেন। মুনমুন আহমেদ পরিচালনায় রেওয়াজ পারফর্মাস স্কুলের নৃত্যশিল্পীবৃন্দ ‘বিদেশী লোক নৃত্য’ পরিবেশন করে। সমবেত নৃত্য ‘অন্তহীন’ পরিবেশন করে কাথ্যাকিয়া-দা সেন্টার অফ আর্টস, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন এস. এম হাসান ইশতিয়াক। নৃত্যসুর এর নৃত্যশিল্পীরা সেলিনা হক-এর পরিচালনায় ‘ভরতনাট্যম পুষ্পাঞ্জলী’ পরিবেশন করে। নাইম খান ডান্স কোম্পানী পরিবেশন করে ‘সমসাময়িক নৃত্য’, নৃত্য পরিচালনা করেছেন আবু নাইম। সমবেত নৃত্য ‘আনন্দধারা বহিছে ভুবনে’ পরিবেশন করে দীক্ষা, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন সুইটি দাস।
বাংলাদেশ একাডেমি অব ফাইন আর্টস পরিবেশন করে ‘বাংলাদেশের ঢোল’, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন ফারহানা চৌধুরী। বাংলাদেশ গৌড়ীয় নৃত্য একাডেমি’র শিল্পীবৃন্দ এগনেসর র্যা সেল প্রিয়াংকা’র পরিচালনায় ‘গৌড়ীয় আঙ্গিকে নৃত্য’ পরিবেশন করে। সমবেত নৃত্য ‘পরী জাফরানী’ পরিবেশন করে নান্দনিক নৃত্য সংগঠন, নৃত্য পরিচালনা করেন নিলুফার ওয়াহিদ পাপড়ী। নবীন নৃত্যশিল্পী পরিবেশন করে ‘ফোক মেলডী’। সমবেত নৃত্য ‘শক্তি’ পরিবেশন করে আটিস্ট্রি, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন আরোহী ইসলাম। নৃত্যালোক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র কবিরুল ইসলাম রতন-এর পরিচালনায় সমবেত নৃত্য ‘বৈশাখ’ পরিবেশন করে। ‘মারমা উৎসব নৃত্য’ পরিবেশন করে কালারস অব হিল, নৃত্য পরিচালনা করেছেন অন্তর দেওয়ান। বন্যা ললিতকলা একাডেমি আব্দুর রশিদ স্বপন-এর পরিচালনায় ‘লোক আঙ্গিকে সৃজনশীল নৃত্য’ পরিবেশন করে। দীপা খন্দকার-এর পরিচালনায় দিব্য সাংস্কৃতিক সংগঠন পরিবেশন করে নৃত্যগুরু জি. এ. মান্নান রচিত নৃত্য। ‘রাঙ্গামাটির পথে লো’ পরিবেশন করে নন্দন কলাকেন্দ্র, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন এম. আর ওয়াসেক। ইভান শাহরিয়ার সোহাগ-এর পরিচালনায় ৬০/৭০ দশকের সিনেমার গানের সাথে সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে নৃত্যভূমি। ‘তালে লয়ে ছন্দে’ সমবেত নৃত্য পরিবেশন করে ঘুঙ্গুর নৃত্যালাপ, নৃত্য পরিচালনায় ছিলেন মোঃ নাজিব মাহফুজ লিমন।
আগামীকাল ৩০ এপ্রিল বিকাল ৫টায় জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে দ্বিতীয় দিনের অনুষ্ঠানে নৃত্য পরিবেশনায় অংশগ্রহণ করবে ২৯টি দল। তারা বিভিন্ন ধরণের নৃত্য পরিবেশন করবে।
২ দিনব্যাপী এই অনুষ্ঠান সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে।
আরও পড়ুন
পেটের অস্বস্তি দূর করতে খাবারের পর খান এই ৫ জিনিস
অকালে চুল পাকা? রুখে দিন সহজ কিছু অভ্যাসে
হানি ট্র্যাপ: জিম্মি করে টাকা হাতানো, শেষ পর্যন্ত জীবনও বিপন্ন