October 16, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, September 4th, 2025, 2:06 pm

বিসিবি’র অফিসিয়াল আম্পায়ার হলেন কুলাউড়ার রুমি

মৌলভীবাজার প্রতিনিধি:

কুলাউড়া উপজেলার রাউৎগাঁও ইউনিয়নের জামিলা আক্তার রুমির নতুন এক মাইলফলক স্পর্শ করলেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) অনুমোদিত অফিসিয়াল আম্পায়ার হিসেবে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। চলিত উইমেন্স চ্যালেঞ্জ কাপ ২০২৫-এ তাকে মাঠে আম্পায়ার হিসেবে দায়ীত্ব পালনে দেখা যায়।তাঁর নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব নজর কেড়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।

চলিত উইমেন্স চ্যালেঞ্জ কাপ টুর্নামেন্টের একটি গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে বিডি বয়েজ অনূর্ধ্ব-১৫ ও বিডি উইমেন্স রেড দলের মধ্যকার খেলায় আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন রুমি। মাঠে তাঁর নিপুণ সিদ্ধান্ত ও নিরপেক্ষ মনোভাব খেলোয়াড় ও দর্শক সবার প্রশংসা কুড়িয়েছে।

রুমির বাড়ী রাউৎগাঁও ইউনিয়নের নর্তন গ্রামে। বাবা সিএনজি চালক আব্দুল মান্নান এবং মা নুরুন্নাহার দম্পতির চার সন্তানের মধ্যে রুমি সবার ছোট।

 

খেলাধুলা হাতেখড়ি ছোটবেলা থেকেই। বিশেষ করে ক্রিকেটের প্রতি আসক্তি বেশি ছিলো। মাস্টার শরাফত আলী উচ্চ বিদ্যালয় থেকেই ক্রিকেটের প্রথম যাত্রা শুরু। এজন্য সে কৃতজ্ঞ তার বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ শাহেদ আলী, সহকারী শিক্ষক, কামরুল হাসান সামাদ ও সাবেক শিক্ষক ছাদিকুর রহমানের প্রতি। ২০১৬ সালে কুলাউড়ার ব্লু কিংস ক্রিকেট একাডেমীতে রুমি ভর্তি হয় এবং সেখান থেকে তার খেলোয়াড় জীবনের নতুন যাত্রা শুরু হয়।

রুমি ক্যারিয়ার, ইন্দিরা রোড ক্রিকেট একাডেমির আবাসিক ছাত্রী এবং এই একাডেমির হয়ে সে তিন সিজন ঢাকা প্রথম বিভাগে লীগে অংশ নিয়েছে। সে অ১৯ ক্যাম্পেও ছিলো।  ২০২১ সালের ডিসেম্বরের ৪ তারিখ থেকে বিকেএসপির আবাসিক ক্যাম্পে রুমি ৬ মাসের অনুশীলন করে।

সেরা সাফল্য, রুমি মূলত উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান। ২০১৬ সালে কুলাউড়ার মাস্টার শরাফত আলী উচ্চ বিদ্যালয় শীতকালীন স্কুল ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় বকুল অঞ্চলে ক্রিকেটে পর্যায়ক্রমে উপজেলা, জেলা এবং বিভাগ পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়ে জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় হয়। রুমি এই দলের অন্যতম সদস্য ছিলো। এছাড়াও ২০১৮ সালে ঢাকা প্রথম বিভাগে ইন্দিরা রোড ক্রিকেট একাডেমির হয়ে টূর্ণামেন্ট সেরা উইকেট কিপারের মর্যাদা পায়।

 

স্থানীয় ক্রীড়ামোদীরা বলছেন, মৌলভীবাজারের এই মেয়ের সাফল্য শুধু জেলার জন্য নয়, বরং বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের জন্যও এক বড় অনুপ্রেরণা। তাদের মতে, বিসিবি’র অনুমোদিত নারী আম্পায়ার হিসেবে রুমি দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নারীদের অবদানকে আরও দৃশ্যমান করেছেন।

রুমি নিজেও ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আম্পায়ার হিসেবে দেশের প্রতিনিধিত্ব করার স্বপ্ন দেখেন। তিনি মনে করেন, মাঠে নারীদের উপস্থিতি ক্রিকেটকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অনুপ্রেরণাদায়ক করে তুলবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশে নারী ক্রিকেট ও ক্রীড়াক্ষেত্রে নারীদের সম্পৃক্ততা বাড়ছে। রুমির মতো তরুণ প্রজন্মের নারীরা এগিয়ে আসায় ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও বাংলাদেশের নারী আম্পায়ারদের দেখা যাওয়া সময়ের ব্যাপার মাত্র।

রুমির এ সাফল্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তার স্কুল ও কলেজের শিক্ষক, সহপাঠি ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মাস্টার শরাফত আলী উচ্চ  বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক কামরুল হাসান সামাদ তার ফেসবুক আইডিতে শুভেচ্ছে জানিয়ে পোস্ট করেন, আলহামদুলিল্লাহআজ নিজের কর্মকে অনেকটা সার্থক মনে করছি। এই নিউজ পাওয়ার পর মাস্টার শরাফত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধন শিক্ষক মোহাম্মদ শাহেদ আলী স্যারসহ সকল শিক্ষক- কর্মচারী ও সাবেক শিক্ষক মো: ছাদিকুর রহমান স্যার এবং শিক্ষার্থী গর্বিত। সে ২০১৭ সালে স্কুল মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শীতকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায়ে জাতীয় পর্যায়ে খেলেছে। সে ছিল আমাদের দলের অধিনায়ক। তার পেচনে বিশেষ অবদান রেখেছেন অবসরপ্রাপ্ত মেজর নুরুল মান্নান চৌধুরী তাজসহ  কুলাউড়া উপজেলার অনেক গুনি জন। আমি রুমির আগামীর জন্য শুভ কামনা করি।

লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মোহাম্মদ  মাজহারুল ইসলাম লিখেন, সে আমাদের লংলা আধুনিক ডিগ্রি কলেজে শিক্ষার্থী ছিলো। তাকে অসংখ্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।