রংপুর ব্যুরোঃ
জুলাই অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলায় ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফাঁসির দঁড়িতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ড কার্যকরের নির্দেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। এ রায়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন জুলাই আন্দোলনে শহিদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদের মা মনোয়ারা বেগম ুবাবা বাবা মকবুল হোসেন । তারা বলেন, ‘হামার সইল (ছেলে) নাই, বুকটা শূন্য হইছে। খালি খালি লাগে। ইন্ডিয়া (ভারত) থাকি শেখ হাসিনারে আনি (থেকে এনে) ফাঁসি চাই, কঠিন ফাঁসি। সে আমার সইলরে মারার আদেশ দিছিল।সোমবার শেখ হাসিনার মৃত্যুদন্ডের রায়ের পর নিজের বাড়িতে উপস্থিত সাংবাদিকদের এ প্রতিক্রিয়া জানান তিনি। শহিদ আবু সাঈদের বাবা মকবুল হোসেন বলেন, ‘শেখ হাসিনা যেখানেই থাকুক, তাকে বাংলার মাটিতে নিয়ে এসে ফাঁসির কাষ্ঠে নিতে হবে। এই ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।’শহীদ আবু সাঈদের ভাই রমজান আলী জানান, ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগ সরকার বিগত ১৭ বছর দেশে খুন গুমের রাজত্ব করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্রদের গুলি করার হুকুম শেখ হাসিনা দিয়েছে। সেই হুকুমের কারণে পুলিশ আমার ভাই আবু সাঈদকে গুলি করে হত্যা করেছে। হাজার হাজার ছাত্র এখনও পুলিশের গুলিতে আহত হয়ে হাসপাতালের বেডে। আমাদের প্রত্যাশা শুধু আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে ফাঁসির রায় দিলেই হবে না। তাকে (শেখ হাসিনাকে) দেশে এনে সর্বোচ্চ শাস্তি ফাঁসি কার্যকর করা। তাহলে হয়তো আমাদের মতো শহিদের পরিবারগুলো একটু হলেও শান্তি পাবে।আবু সাঈদের আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, শুধু শেখ হাসিনার বিচার করলে হবে না। ফ্যাসিবাদী সরকার আওয়ামী লীগের যারা এসবের সঙ্গে জড়িত ছিল, তাদের বিচারের আওতায় এনে, তাদেরও বিচার করতে হবে। যাতে করে দেশে আর কখনও ফ্যাসিবাদের উত্থান না ঘটে।উল্লেখ্য, শহিদ আবু সাঈদ বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের সক্রিয়কর্মী ছিলেন এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনের রংপুর বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সমন্বয়ক ছিলেন। আবু সাঈদ ১৬ জুলাই আন্দোলন চলাকালীন পুলিশ সদস্যের গুলিতে মৃত্যুবরণ করেন। যা জুলাই আন্দোলনকারীরা তাকে আন্দোলনের প্রথম শহিদ বলে আখ্যায়িত করেন। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বাবনপুর জাফরপাড়া গ্রামে মিষ্টি বিতরণের মধ্য দিয়ে উল্লাস প্রকাশ করেন আবু সাঈদের ভাই ও বাবাসহ স্বজনরা। এসময় তারা একে অপরকে মিষ্টি খাইয়ে দেন এবং আশেপাশের মানুষদেরও মিষ্টি খাওয়ানো হয়।

আরও পড়ুন
দুবলার চর: পাঁচ মাসের ভাসমান জনপদে জীবনের লড়াই, অর্থনীতি ও আশার আলো
রংপুরের তেজপাতা চাষ করে স্বাবলম্বি
হাসিনার মৃত্যুদণ্ড রায়ে খুলনায় উৎসব ও উত্তেজনা