দুই দিনে চার দফা ভূমিকম্পের পর আতঙ্কে সড়কে রাত কাটাচ্ছেন ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা। ‘জরাজীর্ণ’ ও ফাটলধরা লতিফ ছাত্রাবাস ধসে পড়তে পারে—এমন আশঙ্কায় শনিবার রাত থেকেই তাঁরা হল ছেড়ে সড়কে অবস্থান নিয়েছেন। পরিস্থিতি নজরে রেখে কর্তৃপক্ষ চারটি হল সাময়িকভাবে খালি করার নির্দেশ দিয়েছে এবং ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
লতিফ ছাত্রাবাসের আবাসিক শিক্ষার্থী ও কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সদস্য জুবায়ের পাটোয়ারি জানান, ৭০–৮০ বছরের পুরনো ভবনটিতে আগে থেকেই ফাটল ছিল। শুক্রবার সকালের ভূমিকম্পের পর নতুন ফাটল দেখা দেয়, এবং শনিবার সকাল–সন্ধ্যার দুই দফা ভূমিকম্পের পর তা আরও বেড়ে যায়।
তিনি বলেন, “রাত আটটার পর আমরা আর হলে থাকতে রাজি হইনি। বিছানা-বালিশ নিয়ে সড়কেই অবস্থান নিয়েছি।”
শনিবার রাতে পলিটেকনিক কর্তৃপক্ষ জরুরি নোটিশে জানায়, লতিফ ছাত্রাবাস (পূর্ব ও পশ্চিম শাখা), ড. কাজী মোতাহার হোসেন ছাত্রাবাস, জহির রায়হান ছাত্রাবাস এবং ছাত্রীনিবাস—এসব হল সাময়িকভাবে খালি করতে হবে। একইসঙ্গে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত মিড-টার্ম পরীক্ষা ও ক্লাস স্থগিত থাকবে।
এ বিষয়ে জানতে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সাহেলা পারভীনকে একাধিকবার ফোন করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। শিক্ষার্থীরা জানান, তিনি বর্তমানে জাপানে অবস্থান করছেন।
শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের স্ট্যাকচারাল ডিজাইন শাখার নির্বাহী প্রকৌশলী এস এম সাফিন হাসান শনিবার রাতে জানান— লতিফ হল ৭০ বছর পুরনো। ভবনটি জরাজীর্ণ ও ঝুঁকিপূর্ণ, চতুর্থ তলার কলাম, বীম ও স্লাবে গভীর ফাটল, বিভিন্ন জায়গায় প্লাস্টার ও কংক্রিট খসে পড়েছে, স্লাবের রিইনফোর্সমেন্ট বাইরে বেরিয়ে এসেছে।
তিনি আরও জানান, গত জুনে ঢাকা মেট্রোপলিটন রেঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী ভবনের চতুর্থ তলাকে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করে সংস্কারের সুপারিশ করেছিলেন। নতুন মূল্যায়নের পর আনুষ্ঠানিক প্রতিবেদন জমা দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা দাবি হলো—জরুরিভিত্তিতে নিরাপদ আবাসনের ব্যবস্থা না করা পর্যন্ত তারা ক্লাস-পরীক্ষায় ফিরবেন না এবং নতুন হল নির্মাণ কিংবা তাৎক্ষণিক বিকল্প আবাসন না হলে আন্দোলন অব্যাহত থাকবে।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
ভূমিকম্প আতঙ্কে ঢাবি দুই সপ্তাহ বন্ধের ঘোষণা, শিক্ষার্থীদের হল ত্যাগের নির্দেশ
বঙ্গোপসাগরে নতুন ঘূর্ণিঝড়ের লক্ষণ, ঝুঁকিতে বাংলাদেশ-ভারত
বারবার ছোট ছোট ভূমিকম্প কিসের ইঙ্গিত?