সংকটাপন্ন অবস্থায় রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে নেওয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত হচ্ছে। দলের শীর্ষ পর্যায়ের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, প্রয়োজনীয় চিকিৎসক পরামর্শ ও লজিস্টিক প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেই কাতারের পাঠানো এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে লন্ডনে নেওয়া হবে।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্ত্রী ও চিকিৎসক জোবাইদা রহমান লন্ডন থেকে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি ঢাকায় পৌঁছে খালেদা জিয়ার অবস্থা পর্যবেক্ষণ করবেন এবং পরিস্থিতি অনুকূল থাকলে তার সঙ্গেই লন্ডনে যাত্রা করবেন বলে জানা গেছে।
এদিকে কাতার সরকার জানিয়েছে, খালেদা জিয়াকে বিদেশে নেওয়ার প্রয়োজন হলে তারা যে কোনো সময় এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পাঠাতে প্রস্তুত আছে। চিকিৎসকদের অনুমতি মিললেই শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) দুপুরে এটি ঢাকার উদ্দেশে রওনা হতে পারে। খালেদা জিয়ার সঙ্গে তার ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ মোট ১৪ জন যাওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
বিএনপি সূত্র জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থায় উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন দেখা যায়নি। চিকিৎসকরা তার অবস্থাকে ‘স্থিতিশীল’ বলছেন। যুক্তরাজ্যের বিশেষজ্ঞ রিচার্ড বিলসহ দেশি–বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড তার চিকিৎসায় কাজ করছে। বুধবার যুক্তরাজ্য এবং চীন থেকে আরও দুটি বিশেষজ্ঞ দলের সদস্য এই বোর্ডে যুক্ত হয়েছেন।
গত ২৩ নভেম্বর গুরুতর ফুসফুস ও হৃদযন্ত্রের সংক্রমণ নিয়ে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে কিডনি জটিলতা, হৃদরোগ ও নিউমোনিয়ার কারণে তার অবস্থা আরও অবনতি হয়। ১ ডিসেম্বর তাকে ভেন্টিলেশনে নেওয়া হয়েছে বলে দলীয় সূত্র জানিয়েছেন।
এদিকে তাকে ‘অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি’ (ভিভিআইপি) ঘোষণা করার পর হাসপাতাল এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। মোতায়েন করা হয়েছে এসএসএফ ও পিজিআর সদস্যদের। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় জানিয়েছে, এয়ার ট্রান্সপোর্ট প্রস্তুতির অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টার মধ্যে হাসপাতালের নিকটস্থ খোলা মাঠে সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর হেলিকপ্টারের পরীক্ষামূলক অবতরণ ও উড্ডয়ন পরিচালিত হবে। এ নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য না ছড়ানোরও অনুরোধ জানানো হয়েছে।
বহুদিন ধরেই আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি ও ফুসফুসজনিত জটিলতাসহ নানা শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন খালেদা জিয়া। গত বছরের ৫ আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর মুক্তি পেয়ে তিনি চলতি বছরের জানুয়ারিতে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডন যান। সেখানে ১১৭ দিন অবস্থান শেষে মে মাসে দেশে ফেরেন। দেশে ফিরে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষার অংশ হিসেবেও তাকে কয়েকবার হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল।
এনএনবাংলা/

আরও পড়ুন
আমার মৃত্যুদণ্ডের পরপরই ভূমিকম্প, ‘আল্লাহর খেলা’: শেখ হাসিনা
বিডিআর হত্যাকাণ্ড: তাপসের অফিসে ভারতীয় গোয়েন্দাদের নিয়ে পরিকল্পনার অভিযোগ
পাটগ্রাম সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত