October 5, 2024

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, June 6th, 2022, 1:22 pm

পদ্মা সেতু: উদ্বোধনের অপেক্ষায় খুলনাবাসী

পদ্মা বহুমুখী সেতু নিঃসন্দেহে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জনগণের যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, পদ্মা সেতু বৃহত্তর সড়ক যোগাযোগ বাংলাদেশের সমগ্র দক্ষিণাঞ্চলের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।

এটি জিডিপি প্রবৃদ্ধি ত্বরান্বিত করার পাশাপাশি প্রায় চার কোটি মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

আগামী ২৫ জুন দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের স্বপ্নের পদ্মা সেতু যান চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হতে যাচ্ছে। ওইদিন সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেতুর উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে রাজধানী ঢাকা থেকে সরাসরি সড়ক পথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার যোগাযোগের দ্বার উন্মোচিত হবে। এই সেতু ঘিরে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন। পদ্মা সেতু চালু হলে খুলনা থেকে ঢাকার যাতায়াতের সময় তিন ঘণ্টা কমে আসবে। মাত্র চার ঘণ্টায় খুলনা থেকে রাজধানী ঢাকায় যাওয়া যাবে। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি কমবে, তেমনি যাত্রার ব্যয়ও সাশ্রয় হবে। সব মিলিয়ে সুফল পাবে খুলনাসহ ২১ জেলার মানুষ।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এখন মাওয়া-জাজিরায় পদ্মা নদী পাড়ি দিতে ফেরিতে দেড় থেকে তিন ঘণ্টার মতো সময় লাগে। আর আরিচা-পাটুরিয়া ঘাটেও যাত্রীদের সময় নষ্ট হয়। সমস্যা হলো, ঘাটে গিয়েই ফেরিতে ওঠার নিশ্চয়তা নেই। কখনো কখনো সারা দিন-রাত ঘাটে বসে থাকতে হয় ফেরিতে উঠতে। পদ্মা সেতু চালু হলে এ সময় বাঁচবে। সহজ হবে যোগাযোগ। বাড়বে ব্যবসা-বাণিজ্য।

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আসলাম আলী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে খুলনা থেকে ঢাকা যেতে সময় সাশ্রয় হবে। এখন ঢাকায় যেতে ৬-৭ ঘণ্টা সময় লাগে। ফেরি পারাপারের ওপর নির্ভর করে কত সময় লাগবে। ফেরিতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। সেতু চালু হলে টোল দিয়ে মাত্র ২০ মিনিটের মধ্যে পদ্মা নদী পার হওয়া যাবে। সে হিসেবে মাত্র চার ঘণ্টায় ঢাকায় যাওয়া যাবে।

এদিকে, সরকার পদ্মা সেতু উদ্বোধন ঘোষণার তারিখ জানানোর পর থেকেই যেন আর তর সইছে না খুলনাসহ ২১ জেলার মানুষের। কবে যাবে পদ্মা সেতু দিয়ে এই স্বপ্নে সবাই বিভোর।

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি ডিসিপ্লিনের অধ্যাপক মো. সামিউল হক বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় যুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটবে। পদ্মা সেতুর সুযোগ-সুবিধা সবার আগে পাবে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। পদ্মা পার হওয়ার সময়, ঘাটে অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয় যাত্রীদের। পদ্মা সেতু চালু হলে সে বিড়ম্বনা থেকে চিরতরের জন্য মুক্তি পাবেন যাত্রীরা।

তিনি আরও বলেন, দেশের বৃহত্তম এ সেতু নির্মাণ সম্পন্ন হলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোর সঙ্গে রাজধানীসহ অন্যান্য অংশের সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। স্বপ্নের এ সেতু দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্রবন্দর মোংলার গতিশীলতা বাড়াবে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবসায়ীরা অল্প সময়ের মধ্যে পণ্য পরিবহন করে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে রপ্তানি ও আমদানি করতে উৎসাহিত হবেন।

দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত হিমায়িত মৎস্য ও পাটশিল্প, যার অধিকাংশ খুলনা থেকে রপ্তানি হয়। পদ্মা সেতু হলে এ আয় আরও বাড়বে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে যশোর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, বেনাপোল, দর্শনা ও ভোমরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমের অর্থনীতিতে গতি সৃষ্টি হয়েছে।

—ইউএনবি