সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের এনায়েতপুর থানার ভাটি এলাকায় তীব্র ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে আবারও ভয়াবহ ভাঙন শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে জালালপুর ও পাকুরতলা এলাকার কয়েকটি ঘরবাড়ি ও বসত ভিটা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙন অব্যাহত থাকায় অনেক পরিবার এখন মানবেতর জীবনযাপন করছে।
ইতোমধ্যেই অর্ধশতাধিক বসত ভিটাসহ গুচ্ছগ্রামের বহু ঘর ও জায়গা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (হেডকোয়ার্টার) রনজিৎ কুমার সরকার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, প্রায় দুই সপ্তাহ আগে প্রবল বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে যমুনা নদীর পানি বাড়লেও কয়েকদিন ধরে পানি কমতে শুরু করেছে। পানি কমতে থাকায় ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি ও দফায় দফায় বর্ষণে এ ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। এ পর্যন্ত জালালপুরের আবাসন প্রকল্প ও গুচ্ছগ্রামের ৯০টি ঘরসহ অর্ধশতাধিক বসতভিটা নদী গর্ভে চলে গেছে। এতে এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ আঞ্চলিক সড়ক, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, জালালপুর আবাসনের ১৪৮টি ঘরসহ বহু স্থাপনা হুমকির মুখে পড়েছে। তবে ভাঙন রোধে ইতোমধ্যেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তরিকুল ইসলাম শুক্রবার ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। এদিকে সরকার ভাঙন রোধে এনায়েতপুর-থেকে পাচিল পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ছয় কিলোমিটার এলাকায় নদী তীর রক্ষায় সাড়ে ৬শ’ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে এবং নির্বাচিত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতি ও পাউবো কর্মকর্তাদের তদারকির অভাবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আবারও ভাঙন শুরু হয়েছে। এ ভাঙ্গন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ডাম্পিংসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি এলাকাবাসীর।
এ বিষয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানসহ ভুক্তভোগীরা বলছেন, এ ভয়াবহ ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধের কাজ জরুরি ভিত্তিতে বাস্তবায়নের দাবি জানান।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা রনজিৎ কুমার সরকার বলছেন, প্রকল্পে ঠিকাদারী ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তদারকির কোন অভাব নেই এবং যথানিয়মে কাজ চলছে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ এ প্রতিবেদককে বলেন, ২০০৬ সালে সরকারি আবাসন ওই গুচ্ছগ্রাম স্থাপন করা হয়। এ গুচ্ছগ্রামে ২৩৮টি পরিবার বসবাস করছিল। যমুনার ভাঙনে এ পর্যন্ত ৯০টি ঘর যমুনা গর্ভে বিলীন হয়েছে। ইতোমধ্যেই ভাঙন রোধে ওই এলাকায় স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ শুরু হয়েছে। এ বাঁধ নির্মাণ হলে ভাঙন রোধ হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
—ইউএনবি
আরও পড়ুন
শেরপুর ও ময়মনসিংহে আকস্মিক বন্যা, তলিয়ে গেছে ১৬৩ গ্রাম
ইসরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধে কতটা প্রভাব ফেলবে ইরানের আঞ্চলিক মিত্ররা
শেয়ারবাজারে লেনদেন কমেছে ৩৭%, সূচকেরও বড় পতন