দোষ স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করায় মুফতি কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সোমবার ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক একেএম জুলফিকার হায়াত আসামির বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ পড়ে শুনালে আদালতে দোষ স্বীকার করেন তিনি।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, আজকে এই মামলায় আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের জন্য দিন ধার্য ছিলো। অভিযোগ গঠনের সময় আসামিকে মামলার অভিযোগ পড়ে শুনানো হলে আসামি দোষ স্বীকার করে।
পরে বিচারক মিথ্যা ও উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে আসামি কাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিমকে কারাভোগকেই সাজা হিসেবে প্রদান করেন।
তিনি আরও বলেন, আসামি গ্রেপ্তারের পর হতে এক বছর তিন মাস ১৯ দিন কারাগারে রয়েছে। যতদিন কারাগারে আছেন ততদিনই আসামিকে সাজা দিয়েছেন আদালত।
এরপর ২০২১ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর রাজধানীর লালমাটিয়ার বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ।
হিসেব করলে দেখা যায়, গ্রেপ্তারের পর থেকে চলতি বছরের ১৬ জানুয়ারি পর্যন্ত তার এক বছর তিন মাস ১৯ দিনের কারাবাস হয়। যা দণ্ড হিসেবে প্রদান করেন আদালত।
ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি নজরুল ইসলাম শামীম বলেন, কাজী ইব্রাহীমের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। এ ধারাগুলোর সর্বোচ্চ সাজা পাঁচ বছরের কারাদণ্ড। যেহেতু তিনি দোষ স্বীকার করেছেন, তাই বিচারক সন্তুষ্ট হয়ে তার কারাভোগটাই সাজা হিসেবে দিয়েছেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, কাজী ইব্রাহিম তার বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিল ও খুতবার সময় মিথ্যা-উসকানিমূলক ও ভীতিপ্রদর্শন সম্বলিত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার ও প্রকাশ করেন। প্রচারিত ভিডিও সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদকালে তিনি এ বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার কাছে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
এছাড়া জিজ্ঞাসাবাদে উসকানিমূলক ভিডিওগুলোতে প্রচারিত বক্তব্য তার নিজের বলে স্বীকার করেন।
তিনি ফেসবুক-ইউটিউবসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে মিথ্যা,আক্রমণাত্মক ও ভীতি প্রদর্শনমূলক বিভিন্ন ভিডিও প্রচার ও প্রকাশ করে সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ২০১৮ এর ২৫/৩১/৩৫ ধারায় অপরাধ করেছেন বলে মামলার অভিযোগে বলা হয়।
এরপর যখন তাকে গ্রেপ্তার করতে লালমাটিয়ার বাসায় যায় পুলিশ, তখন তিনি ফেসবুক লাইভে এসে ‘হিন্দুস্থানি দালাল ও র’এর এজেন্ট তার বাসা ঘিরে রেখেছে বলে মন্তব্য করেন।’
উসকানিমূলক বক্তব্য দেয়ার অভিযোগে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামির বিরুদ্ধে মোহাম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মুন্সি আব্দুল লোকমান।
এ মামলায় তাকে আদালতে হাজির করে দুদিনের রিমাণ্ডে নেয়া হয়েছিল। রিমাণ্ড শেষে একই বছরের ২ অক্টোবর জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
তদন্ত শেষে ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. হাসানুজ্জামান আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
—-ইউএনবি
আরও পড়ুন
অন্তর্বর্তী সরকার নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে না: হাইকোর্ট
ড. ইউনূসের ৫ মামলা বাতিলের রায়ে আইনি দুর্বলতা পাননি আপিল বিভাগ
চট্টগ্রাম আদালতের গায়েব হওয়া ১৯১১ নথির খোঁজ মেলেনি