নিজস্ব প্রতিবেদক:
ভোজ্যতেলের চাহিদা মেটাতে দেশে সরিষা উৎপাদনে জোর দিয়েছে সরকার। ওই লক্ষ্যে এক বছরেই দেশে ৩ হাজার কোটি টাকার সরিষার উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে। আরভোজ্যতেলের চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে প্রথম এক বছরেই দেশে সরিষার আবাদ বেড়েছে ২ লাখ হেক্টর জমিতে ও উৎপাদন বেড়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। তেল হিসাবে বিবেচনা করলে ১ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন তেল বেশি উৎপাদিত হয়েছে। আর প্রতি লিটার তেলের মূল্য ২৫০ টাকা হিসাবে এক বছরেই প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার উৎপাদন বেড়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, দেশে গত বছর ৬ লাখ ১০ হাজার হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছিল, আর এ বছর ৮ লাখ ১২ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। গত বছর উৎপাদন হয়েছিল ৮ লাখ ২৪ হাজার টন, এবার হয়েছে ১১ লাখ ৫২ হাজার টন। এক বছরেই উৎপাদন বেড়েছে শতকরা ৪০ ভাগ। সূত্র জানায়, দেশে বছরে প্রায় ২৪ লাখ টন ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে। এরমধ্যে সরিষা, তিল ও সূর্যমুখী থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র ৩ লাখ টন, যা চাহিদার শতকরা ১২ ভাগ। বাকি ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। ভোজ্যতেলের এই আমদানিনির্ভরতা কমাতেই তিন বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। পরিকল্পনা অনুযায়ী ধানের উৎপাদন না কমিয়েই আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে স্থানীয়ভাবে ১০ লাখ টন তেল উৎপাদন করা হবে, যা চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ।
এর ফলে তেল আমদানিতে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় করা সম্ভব। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মধ্যে সরিষা, তিল, বাদাম, সয়াবিন, সূর্যমুখীসহ তেলজাতীয় ফসলের আবাদ তিনগুণ বাড়িয়ে বর্তমানের ৮ লাখ ৬০ হেক্টর জমি থেকে ২৩ লাখ ৬০ হাজার হেক্টরে উন্নীত করা হবে। তেলজাতীয় ফসলের উৎপাদন বর্তমানের ১২ লাখ টন থেকে ২৯ লাখ টনে এবং তেলের উৎপাদন বর্তমানের ৩ লাখ টন থেকে ১০ লাখ টনে উন্নীত করা হবে। লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রথমটি হচ্ছে- উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, বর্তমানে আবাদকৃত টরি-৭, মাঘী, ডুপিসহ স্থানীয় জাতের পরিবর্তে উচ্চফলনশীল সরিষার জাত বিনা-৪, ৯, বারি ১৪, ১৭ প্রভৃতি জাত ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে।
দ্বিতীয়ত, অনাবাদি চরাঞ্চল, উপকূলের লবণাক্ত, হাওর ও পাহাড়ি অঞ্চলকে তেলজাতীয় ফসল চাষের আওতায় আনা হচ্ছে। তৃতীয়ত, নতুন শস্যবিন্যাসে স্বল্প জীবনকালের ধানের চাষ করে রোপা আমন ও বোরোর মধ্যবর্তী সময়ে অতিরিক্ত ফসল হিসেবে সরিষার চাষ করা হচ্ছে। এদিকে কৃষি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য তেলজাতীয় ফসল উৎপাদন বৃদ্ধি প্রকল্পের মাধ্যমে নানারকম প্রণোদনা কৃষকদের দেয়া হচ্ছে। ফলে প্রথম এক বছরেই প্রায় ২ লাখ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ বাড়ানো সম্ভব হয়েছে।
আরও পড়ুন
পূর্বাচলে ৬০ কাঠার প্লট : দুদকের মামলায় আসামি হাসিনা ও তার পরিবার
১১ দিনে এলো ৮৯৮৬ কোটি টাকার প্রবাসী আয়
রেমিট্যান্স আহরণে ‘গোল্ড অ্যাওয়ার্ড’ পেলো ইসলামী ব্যাংক