সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে টানা বর্ষণ আর ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এছাড়া পাহাড়ি ঢলে ভেঙে গেছে সুনামগঞ্জের একাধিক স্থানের বেড়িবাঁধ।
পাহাড়ি ঢলে রাস্তা ভেঙে ও তলিয়ে যাওয়ায় বিভিন্ন এলাকার সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বন্ধ রয়েছে ছোট-বড় সব ধরনের যান চলাচল। গৃহহীন হয়ে পড়েছে অনেক পরিবার।
এদিকে, সীমান্তের ওপার থেকে বয়ে আসা খাসিয়ামারা নদীর স্রোতে লক্ষীপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া, ইদ্রিসপুর, চৌকিরঘাট বেড়িবাঁধ ভেঙে বিভিন্ন হাওরে পানি প্রবেশ করায় ঘরবাড়ি, আসবাবপত্র, গবাদিপশুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। পানি প্রবেশ করায় আমনের বীজতলা, আউশ ও সবজি খেত তলিয়ে গেছে।
অন্যদিকে, বোগলাবাজারে চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে এবং সুরমা ইউনিয়নের টিলাগাও-টেংরাটিলা যাতায়াত রাস্তা ভেঙে গেছে। মহব্বতপুর বাজার-লিয়াকতগঞ্জ বাজার সড়কে নোয়াপাড়ায় বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলা সদরের সঙ্গে লক্ষীপুর ইউনিয়নের ২৮টি ও সুরমা ইউনিয়নের পাঁচটি গ্রামসহ সীমান্তের মানুষের যোগাযোগ ব্যবস্থা অচল হয়ে পড়েছে।
এছাড়া বাংলাবাজার ইউনিয়নের পেকপাড়া, চৌধুরী পাড়া, মৌলারপাড়, চিলাইপাড়, পুরান বাশতলা গ্রামের অনেক ঘরবাড়িতে পানি ঢুকে ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান জহিরুল ইসলাম বলেন, খাশিয়ামারা নদীর স্রোতে আমার ইউনিয়নে নোয়াপাড়া, ইদ্রিসপুর ও চৌকির গাঁটে ভাঙনের সৃষ্টি হয়েছে। প্লাবিত হচ্ছে বেশ কিছু গ্রাম।
শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানি জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে জানানো করা হয়েছে বলে জানান লক্ষীপুর ইউপি চেয়ারম্যান।
সুরমা ইউপির চেয়ারম্যান হারুন অর রশীদ বলেন, খাশিয়ামারা নদীর স্রোতে সুরমা ইউনিয়নের কিছু সংখ্যক বাড়িঘরে পানি উঠেছে, তাদের জন্য শুকনো খাবার ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
বোগলাবাজার ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মিলন খান বলেন, চিলাই নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে বোগলাবাজার ইউনিয়নের ১০টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। পুকুরের মাছ ও বাড়িঘরের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলার দোয়ারাবাজার সদর ইউনিয়নের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন দোয়ারাবাজারে নিকট সুরমা নদী ২১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, তিন দিন ধরে টানা বর্ষণ ও মেঘালয় থেকে নেমে আসা ঢলে উপজেলার সুরমা, চেলা, চলতি, মরা চেলা, খাসিয়ামারা, মৌলা, কালিউরি, ধূমখালিসহ উপজেলার সব নদী-নালা, হাওর ও খাল-বিলের পানি বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে বলেও জানান সুনামগঞ্জ জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী।
—–ইউএনবি
আরও পড়ুন
সেন্টমার্টিন ভ্রমণে নিবন্ধনসহ যা করতে হবে পর্যটকদের
জান্নাতে বাবা-মায়ের সাথে সন্তানরা যেভাবে মিলিত হবে
কিশমিশ-মনাক্কায় যত উপকার