January 31, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Monday, January 27th, 2025, 3:55 pm

কোকোর মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে : ডা. জাহিদ

অনলাইন ডেস্ক:

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যু স্বাভাবিক ছিল না জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেছেন, এ মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করা হবে। এর সঙ্গে জড়িত যারাই থাকুক তাদের আইনের আওতায় আনা হবে।

রোববার (২৬ জানুয়ারি) স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি রেস্টুরেন্টে আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্ট আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

ডা. জাহিদ বলেন, আরাফাত রহমান কোকো কোনো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন না। তিনি ক্রীড়াঙ্গনে একজন মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি ছিলেন। তার সাংগঠনিক দক্ষতার কারণে আজ বাংলাদেশের ক্রিকেট সারা পৃথিবীতে একটি পর্যায়ে চলে এসেছে। এ অবদান তাকে বাদ দিয়ে অন্য কাউকে দেওয়া হলে সেটি ইতিহাসকে বিক্রিত করা হবে।

তিনি বলেন, আরাফাত রহমান কোকোকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। তার মৃত্যুকে আমরা কখনোই স্বাভাবিকভাবে নিইনি এবং এখনো নিচ্ছি না। কাজেই আমরা এটা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছি, এর মূল রহস্যে কী আছে। সে অনুযায়ী এর সঙ্গে সম্পৃক্ত যারাই আছেন তাদের আইনের আওতায় এনে কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর জন্য আমরা বিএনপির পক্ষ থেকে সবসময়ই চেষ্টা করব।

এসময় দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছর ধরে যুক্তরাজ্যের সাধারণ মানুষ জিয়া পরিবারের প্রতি যে আন্তরিকতা দেখিয়েছেন এজন্য তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, জিয়াউর রহমান সেই মানুষ, ৭ নভেম্বর যে মানুষকে এ দেশের সিপাহি জনতা বন্দিদশা থেকে মুক্ত করে এনেছিল। তখন বিএনপি ছিল না, কোনো অঙ্গ সহযোগী সংগঠন ছিল না। কিন্তু মানুষের বিশ্বাস ছিল ওই মানুষটির ওপর, যে উনাকে যদি দায়িত্ব দেওয়া যায় তাহলে দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব অখণ্ড থাকবে। তিনি নিজেই ক্ষমতায় বসেননি। সিপাহি জনতা তাকে ক্ষমতায় বসিয়েছেন। তারপরও তিনি গণভোট দিয়েছিলেন। তখন জনগণের মেন্ডেট নিয়েই ক্ষমতায় ছিলেন। মাত্র সাড়ে ৪ বছরের শাসনামলে তলাবিহীন দেশের তলা লাগিয়েছিলেন। কাজেই যারা জিয়াউর রহমানকে নিয়ে কথা বলেন, আগে তারা আয়নায় নিজের চেহারা দেখবেন, জিয়াকে নিয়ে কথা বলার অবস্থা আপনাদের আদৌ আছে কি না।

ডা. জাহিদ বলেন, দেশে যদি স্বাধীনতার ঘোষণা না হতো, মুক্তিযুদ্ধ না হতো, আপনারা কোনো অবস্থাতেই ’৯০ও দেখতেন না, ’২৪ এর ৩৬ জুলাইও দেখতেন না। বহু মানুষের ত্যাগের ওপর দাঁড়িয়েই আজকের বাংলাদেশ। তিনি আরও বলেন, আমরা যেমন আবু সাঈদের কথা ভুলব না, মুগ্ধের কথা ভুলব না ঠিক একইভাবে ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমের কথাও ভুলব না। গত ১৫ বছর যারা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য যুদ্ধ করেছেন, তাদের সবাইকে যার যার সম্মান দিতেই হবে। কাজেই বিভাজন সৃষ্টি করার চেষ্টা করবেন না।

ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের উদ্দেশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ক্ষমতার মসনদে বসে রাজনৈতিক দল করার কেউ কেউ চেষ্টা করবেন, আবার চুপচাপ তাল দেবেন অন্যদেরকে রাজনৈতিক দল করার জন্য। প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে টাকা নিয়ে ডিস্ট্রিবিউট করবেন, সংগঠক হবেন ভালো কথা কিন্তু রাজনৈতিক দল করতে হলে সব কিছু ছেড়ে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের মতো মাঠে আসুন, কর্মসূচি দিন। জনগণকে সংগঠিত করুন। জনগণ যাকে ভালো মনে করবে তাকে গ্রহণ করবে। কিন্তু কোনো অবস্থাতেই নিজেদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করবেন না। নিজেদের অতি বা প্রতি বিপ্লবী ভাবার চেষ্টা করবেন না। মনে রাখবেন বিএনপির জন্ম জনগণের মধ্য থেকেই হয়েছে। খালেদা জিয়া একদিনে তৈরি হননি। আগুনে পুড়তে পুড়তেই আজকের খালেদা জিয়া।

যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি ও চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা এমএ মালেক বলেন, খালেদা জিয়া তো সুস্থ অবস্থায় জেলে গেছেন। তাকে তিলে তিলে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে। এর বিচার করতেই হবে। আর এখন ছাত্ররা দেশ চালাচ্ছেন। ছাত্ররা দেশ চালালে শিক্ষকরা কী করবেন? আরাফাত রহমান কোকো মেমোরিয়াল ট্রাস্টের কোঅর্ডিনেটর আবু নাছের শেখ ও শরফরাজ শরফুর পরিচালনায় দোয়া মাহফিলে আরও বক্তব্য দেন যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কয়সর এম আহমেদ প্রমুখ।