August 14, 2025

The New Nation | Bangla Version

Bangladesh’s oldest English daily newspaper bangla online version

Thursday, August 14th, 2025, 7:25 pm

নরওয়েতে পা রাখলেই গ্রেফতার হবেন নেতানিয়াহু

বিশ্বের অন্যতম সুখী দেশ নরওয়ে গাজায় ইসরাইলের গণহত্যামূলক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। অসলো জানিয়েছে, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু তাদের দেশে পা রাখলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে।

বুধবার এ তথ্য জানিয়েছে মিডল ইস্ট মনিটর।

২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি)। গত মঙ্গলবার নরওয়ের উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রেয়াস ক্রাভিচ জানান, তার দেশ আইসিসির জারি করা এই পরোয়ানার প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ।

ক্রাভিচ নিশ্চিত করেন, নেতানিয়াহু নরওয়েতে নামলেই তাকে গ্রেফতার করা হবে। তিনি বলেন, আইসিসির অন্যতম সদস্য হিসেবে আদালতের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে নরওয়ের, যা আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অসলোর অঙ্গীকারকে প্রতিফলিত করে।

‘এই অবস্থান আইসিসির ম্যান্ডেটের প্রতি ও আন্তর্জাতিক অপরাধের অভিযোগে অভিযুক্তদের জবাবদিহির আওতায় আনার বিষয়টির প্রতি নরওয়ের পূর্ণ সমর্থন আছে,’ বলেন ক্রাভিচ।

আইসিসির রায় প্রকাশের পর নরওয়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এসপেন বার্থ এইডে মন্তব্য করেন, ‘গুরুতর অপরাধের ক্ষেত্রে জবাবদিহি নিশ্চিতে আইসিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।’

২০২৪ সালের মে মাসে নেতানিয়াহু, গ্যালান্ট এবং হামাসের তিন নেতার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন করেছিলেন আইসিসি প্রধান কৌঁসুলি করিম খান। সেই আবেদনের ভিত্তিতে ২১ নভেম্বর গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।

পরবর্তীতে নেতানিয়াহু দাবি করেন, ‘এই রায় ইহুদিবিদ্বেষী।’ রায়ের তীব্র বিরোধিতা করে তিনি বলেন, ‘এর কোনো গুরুত্ব নেই।’

সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্ট মন্তব্য করেন, ‘হেগের আদালতের এই রায় স্মৃতিতে থেকে যাবে। এটি ইসরাইল রাষ্ট্র ও হত্যাকারী হামাস নেতাদের একই আসনে বসিয়েছে এবং হামাসের সহিংসতাকে সমর্থন দিয়েছে।’

নরওয়ের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দেশ আইসিসির গ্রেফতারি পরোয়ানা বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করেছে।

অস্ট্রিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী আলেকজান্ডার শ্যালেনবার্গ বলেন, আন্তর্জাতিক আইনের সঙ্গে দরকষাকষি সম্ভব নয়। অস্ট্রিয়া এই পরোয়ানার প্রতি সম্মান জানাবে।

কানাডার তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো জানিয়েছিলেন, তার দেশ ‘আন্তর্জাতিক আদালতের সব ধরনের রায় ও নিয়ম-নীতি মেনে চলবে।’

আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী সিমন হ্যারিস বলেন, নেতানিয়াহু তার দেশে এলে ‘নিঃসন্দেহে’ তাকে গ্রেফতার করা হবে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিকেল মার্টিনও আইসিসির রায়ের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার আহ্বান জানান।

নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেলদকাম্প ঘোষণা দেন, রোম চুক্তি ‘শতভাগ’ মেনে চলবে তার দেশ, যা নেতানিয়াহুকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করে।

লিথুয়ানিয়া, জর্ডান, বেলজিয়াম, স্পেন, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডও আইসিসির সিদ্ধান্তকে সম্মান জানানোর কথা জানিয়েছে।

অন্যদিকে, নিউইয়র্ক শহরের ডেমোক্রেটিক মেয়রপ্রার্থী জোহরান মামদানি বলেছিলেন, তিনি নির্বাচিত হলে এবং সেসময় নেতানিয়াহু তার শহরে এলে গ্রেফতারের পক্ষে থাকবেন।

তবে ইসরাইলের প্রধান মিত্র যুক্তরাষ্ট্র এই গ্রেফতারি নির্দেশের নিন্দা জানিয়েছে এবং আদালতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।